লাইভ প্রতিবেদক: দুনিয়া জুড়ে আলোড়ন শুরু হয়েছে। কি আছে এই সফরের নেপথ্যে। মুসলিম বিশ্বের হালহকিকাত নিয়ে আদৌ কি সাড়া পড়বে এই সফরে। নাকি সফরের জন্য সফর। তুরস্ক সফরে গেলেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার পর এটাই তার প্রথম তুরস্ক সফর। ওই হত্যাকাণ্ডের জেরে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোগান।
অপরদিকে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার জেরে সৌদিতে তুর্কি পণ্য বয়কটের ডাক দেয়া হয়েছিল। তবে বিন সালমানের তুরস্ক সফরের মধ্য দিয়ে সেই দ্বন্দ্বের সমাপ্তি হয়ে নতুন পথচলা শুরু হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মূলত ২০১৮ সালের খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট দূরত্ব কমিয়ে আনতেই ক্রাউন প্রিন্সের এই তুরস্ক সফর। তাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে ব্যাপক আয়োজন করেন এরদোগান।
নিজে উপস্থিত থেকে তাকে তুরস্কে স্বাগত জানান তিনি। বিমান থেকে নামতেই বিন সালমানকে আলিঙ্গন করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। সেখানে উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে, এই এরদোগানই অভিযোগ করেছিলেন যে, সৌদি যুবরাজের নির্দেশেই সৌদি এজেন্টরা জামাল খাসোগিকে হত্যা করে।
তবে মোহাম্মদ বিন সালমান এই ঘটনার সঙ্গে তার কোন সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। কিন্তু তুরস্কে অর্থনৈতিক সংকট তীব্র হওয়ার পর তারা এখন ওই অভিযোগ ভুলে সৌদিকে কাছে টানতে চাইছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং সাহায্য চাইছে। এর আগে মিশর, ইসরাইল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করেছে তুরস্ক। অপরদিকে যুবরাজ মোহাম্মদও চাইছেন তাকে যে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করা হয়েছিল, সেটা থেকে বের হয়ে আসতে এবং তার শক্তিশালী আন্তর্জাতিক ভূমিকা পুনরুদ্ধার করতে।
মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে এ সপ্তাহে তিনি জর্ডান এবং মিশরে যান। সামনের মাসের মাঝামাঝি সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। ২০১৯ সালে জো বাইডেন জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ডের জন্য সৌদি আরবকে একঘরে করা হবে বলে অঙ্গীকার করেছিলেন। গত সপ্তাহে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, রাজধানী আংকারাতে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে কিভাবে আরও উচ্চতর পর্যায়ে নেয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
তুর্কি কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে একদম সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং সংকট পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। জ্বালানি, অর্থনীতি এবং নিরাপত্তা নিয়ে দুই নেতার মধ্যে চুক্তিও হবে। তবে ক্রাউন প্রিন্সের তুরস্ক সফরের নিন্দা জানিয়েছে তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি। এর নেতা কামাল কিলিকডারুগলু বলেন, খাসোগির হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল যে ব্যক্তি, তাকে এরদোগান আলিঙ্গন করছেন। যদিও এটা তেমন কোন প্রভাব পড়বে না তুরস্কে।
ঢাকা, ২৩ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: