লাইভ ডেস্ক: আকাশে আগুনের ফুলকি। চারদিকে কেবলই আগুন আর আগুন। নারী ও শিশুদের বুক ফাটা কান্নার আওয়াজে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে। চারদিকে অজানা আতঙ্ক। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বৃহস্পতিবার রাতে গাজায় ৪০ মিনিটে ৪৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। গাজার ১৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়া হয়। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র আভিচায় আদ্রায়ি শুক্রবার টুইটারে এ তথ্য জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বৃহস্পতিবার ভোররাতে ইসরায়েলি বাহিনীর ৪০ মিনিটের হামলায় নতুন করে ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হন।
এদের মধ্যে এক মা ও তার তিন শিশুও ছিলেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসব হামলায় গাজার বিভিন্ন অ্যাপার্টমেন্ট, গাড়ি ও ভবন ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দাবি, গাজায় সশস্ত্র যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
আদ্রায়ি বলে, ‘এই হামলাগুলো গাজার উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের আশেপাশে অবস্থিত হামাসের ভূগর্ভস্থ মেট্রোকে প্রবল আঘাতের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, এসব হামলায় রাত জুড়ে ইসরায়েলের ১৬০টি বিমান ও ছয়টি বিমান ঘাঁটি ব্যবহৃত হয়েছে।
গাজা থেকেও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালাচ্ছে হামাস। তবে এসবের অধিকাংশই ইসরায়েলের আয়রন ডোম সিস্টেমের মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়েছে। সম্প্রতি পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি ও কট্টরপন্থী ইহুদিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে দফায় দফায় যাতে অধিকাংশই আহত হয়েছেন ফিলিস্তিনিরা। ফিলিস্তিনিদের ওপর এসব হামলার জবাবে হামাস ইসরায়েলে রকেট হামলা চালায়। এরপর ইসরায়েল গাজায় ব্যাপকভাবে হামলা শুরু করে।
শহরটিতে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর হামলায় গত সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত ১১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৩১টি শিশু ও ১৯ জন নারীও রয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৮৩০ জন।
ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১২২:
এদিকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। এসব হামলায় গত সোমবার থেকে এ পর্যন্ত ১২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩১টি শিশু ও ২০ জন নারীও রয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স। বৃহস্পতিবার ভোররাতে ইসরায়েলের ৪০ মিনিটের হামলায় নতুন করে ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এদের মধ্যে এক মা ও তার তিন শিশুও ছিলেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের রকেট হামলায় এ পর্যন্ত আটজন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুটি শিশু, একজন ভারতীয়, একজন বয়স্ক নারী ও এক সেনাসদস্য রয়েছেন। জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সংক্রান্ত সমন্বয়ের অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২০০’রও বেশি ভবন ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। শত শত মানুষ উত্তরাঞ্চলের উপকূলীয় ছিটমহলের স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর আন্তর্জাতিক মুখপাত্র জোনাথান কনরিকাস বলেছেন, ‘আমরা যাকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালাচ্ছি তা হল গাজার ভূগর্ভস্থ সুরঙ্গ যা মূলত উত্তরাঞ্চলে ও এর আশেপাশে বিস্তৃত। এই নেটওয়ার্কটি হামাস তাদের চলাচল, আত্মগোপন ও সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করে।’ এটিকে মেট্রোও বলা হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি ও কট্টরপন্থী ইহুদিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে দফায় দফায় যাতে অধিকাংশই আহত হয়েছেন ফিলিস্তিনিরা। ফিলিস্তিনিদের ওপর এসব হামলার জবাবে হামাস ইসরায়েলে রকেট হামলা চালায়। এরপর ইসরায়েল গাজায় ব্যাপকভাবে হামলা শুরু করে।
ঢাকা, ১৪ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআইটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: