Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

'ইমাম খোমেনী (রহ.) প্রমাণ করেছেন পরাশক্তিগুলোকে পরাজিত করা সম্ভব'

প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২০, ০০:৪৫

লাইভ প্রতিবেদক: ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, ইসলামি বিপ্লবের মহান নেতা ইমাম খোমেনী (রহ.) পরাশক্তিগুলোর কথিত অপরাজেয় ভাবমূর্তির অবসান ঘটিয়েছেন। আজ (বুধবার) ইমামের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে সর্বোচ্চ নেতা এ মন্তব্য করেন। ইরান কালচারাল সেন্টার থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

ইমাম খোমেনীর প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, মৃত্যুর কয়েক দশক পর আজও ইমাম খোমেনী আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন এবং তিনি বেঁচে থাকবেন চিরকাল। তিনি বলেন, ইমাম খোমেনী পরাশক্তিগুলোর কথিত অপরাজেয় শক্তির দিকে জনগণের দৃষ্টি আকষণ করেন এবং এসব শক্তিকে পরাজিত করেন। বিষয়টি এতটা সুস্পষ্ট ছিল যে, তৎকালীন মার্কিন ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা একথা স্বীকার করতে বাধ্য হন যে, ইমাম তাদেরকে অপমান করেছেন।

এসব কথিত পরাশক্তিকে কীভাবে পরাজিত করতে হয় তা ইমাম খোমেনী ইরানি জনগণকে শিখিয়েছিলেন বলে জানান সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন, “সে সময় কেউ একথা কল্পনাও করতে পারত না যে, আমেরিকার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কিছু করা সম্ভব। ইমাম খোমেনী প্রমাণ করেছেন, বড় শক্তিগুলো অজেয় নয়। আমরা সেটা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পরাজয়ে প্রত্যক্ষ করেছি। আজ আমরা আমেরিকায় একই রকম পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি।”

আমেরিকা জুড়ে গত কয়েকদিন ধরে চলমান গণবিক্ষোভের প্রতি ইঙ্গিত করে আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন: একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার হাতে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত একজন মার্কিন যুবকের ‘ঠাণ্ডা মাথায়’ হত্যাকাণ্ড থেকে আমেরিকার প্রকৃত চরিত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মার্কিন আগ্রাসী কার্যকলাপে আমেরিকার এই কুখ্যাত পাশবিক চরিত্র ফুটে উঠেছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তা একজন কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের গলার উপর হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় তার প্রাণহানির যে ঘটনা ঘটিয়েছে সেটা আমেরিকার তিক্ত বাস্তবতা। ক্যামেরার সামনে এটি ঘটনা ঘটেছে বলে বিষয়টা জানাজানি হয়েছে।

সর্বোচ্চ নেতা বলেন, এরপরও মার্কিন নেতারা বড় গলায় মানবাধিকারের বুলি আওড়ায়। যে কালো মানুষটিকে এত জঘন্যভাবে হত্যা করা হলো, মনে হয় যেন, সে মানুষ ছিল না এবং তার কোনো মানবাধিকারও ছিল না। দাম্ভিক মার্কিন নেতারা একবার ক্ষমা প্রার্থনারও প্রয়োজন মনে করেনি। উল্টো তারা জনগণের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমনের হুমকি দিচ্ছে।

ইমাম খোমেনীর মৃত্যুবার্ষিকীতে সর্বোচ্চ নেতার ভাষণ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। ভাষণে তিনি দেশে পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ইমামের গৃহিত বিভিন্ন কর্মসূচির প্রতি ইঙ্গিত করে তাঁকে ‘প্রকৃত নেতা’ বলে অভিহিত করেন।

আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, “যুব বয়স থেকেই ইমাম খোমেনী আল্লাহর রাহে জিহাদ করার আহ্বান জানাতেন। তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে আধ্যাত্মিক বিপ্লব ঘটিয়ে দিতেন। এভাবে ইমাম গোটা ইরানি জাতিকে বদলে দিতে পেরেছিলেন। অত্যাচারী শাহ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পর্যন্ত যে জাতির সাহস হতো না ইমামের সংস্পর্শে এসে সেই জাতি উত্তাল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শাহ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ছেড়েছে।”

সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইমাম খোমেনী ইরানি জনগণকে হীনমন্য অবস্থান থেকে বের করে আত্মনির্ভরশীল ও আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন জাতিতে পরিণত করেন। ধর্মকে নিছক ব্যক্তিগত কিছু ইবাদতে সীমাবদ্ধ রাখার যে প্রবণতা ছিল তা থেকেও তিনি ইরানকে বের করে আনেন এবং ইসলামি চিন্তাধারার আলোকে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, দেশের স্বাধীনচেতা জনগণ বিশেষ করে আলেম সমাজ বহুকাল ধরে স্বৈরাচারী শাহ সরকারের পতন চাইতেন। কিন্তু পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী বিশেষ করে আমেরিকার পূর্ণ সমর্থনপুষ্ট শাহ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার কথা তারা কল্পনাও করতে পারতেন না। কিন্তু ইমাম খোমেনী (রহ.) প্রথম ভাবলেন যে, এই কাজ সম্ভব। তাঁর এই সাহসিকতাপূর্ণ ভাবনা এক সময় বাস্তবে রূপলাভ করে।

আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, সার্বিকভাবে ইমামের নেতৃত্বাধীন ইসলামি বিপ্লবের কারণে ইরানে বিশাল সব পরিবর্তন আসে যা বিপ্লব ছাড়া স্বাভাবিক কোনো পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব ছিল না।

ঢাকা, ০৩ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআইটি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ