Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ২রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

৮ বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৭৩১ বাংলাদেশি ফেরত

প্রকাশিত: ৪ এপ্রিল ২০১৮, ০৩:২৩

ইন্টারন্যাশনাল লাইভ: ৮ বছরে ১ হাজার ৭৩১ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, ২০০৯-২০১৬ সাল পর্যন্ত ওই বাংলাদেশিরা দেশে ফিরেছেন। অবৈধ অনুপ্রবেশসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশিরা দেশে ফিরেছেন।

তবে গত বছর এবং চলতি বছরে অনেক বাংলাদেশি দেশে ফিরতে বাধ্য হলেও তাদের মোট সংখ্যা বা পরিসংখ্যান এখনও পাওয়া যায়নি। তবে পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৭ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে আইনসিদ্ধ ভাবে স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ১৪ হাজার ৬৮৭ জন বাংলাদেশি। এর মধ্যে নতুন অবেদন ১৩ হাজার ১৫১। আর পূর্ণ নাগরিকত্ব পেয়েছেন ৮ হাজার ৫শ’ ৫ বাংলাদেশি।

ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস-এর তথ্য মতে, ২০০৯ সালে ৩১০ জন, ২০১০ সালে ২৮১ জন, ২০১১ সালে ২৪৮ জন, ২০১২ সালে ২৩৮ জন, ২০১৩ সালে ১৬৭ জন, ২০১৪ সালে ১৬৯ জন, ২০১৫ সালে ১৯৯ জন, ২০১৬ সালে ১৯৯ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ৯৭৫ জন বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছিলেন।

তারা এ নিয়ে দীর্ঘ সময় আইনি লড়াই করেছেন। এর মধ্যে অনেকে আশ্রয় পেয়েছেন, অনেককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৯ সালে ৯৪ জন, ২০১০ সালে ৭০ জন, ২০১১ সালে ৬৯ জন, ২০১২ সালে ৮৬ জন, ২০১৩ সালে ১০৬ জন, ২০১৪ সালে ১৮৯ জন, ২০১৫ সালে ২২২ জন এবং ২০১৬ সালে ১৩৭ জন বাংলাদেশিকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে অন্য এক প্রতিবেদনে অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশিদের যুক্তরাষ্ট্র যাত্রার করুণ কাহিনী ওঠে এসেছে। প্রতিবেদন মতে, অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশিরা আকাশ পথে দুবাই, ইস্তাম্বুল অথবা তেহরান হয়ে যায়। সেখান থেকে তাদের নেয়া হয় ভেনিজুয়েলা, বলিভিয়া অথবা স্প্যানিশ গায়ানায়।

এর পর ব্রাজিল-কলম্বিয়া-পানামা-কোস্টারিকা-নিকারাগুয়া-এল সালভাদর-গুয়াতেমালা হয়ে তাদের পৌঁছে দেয়া হয় মেক্সিকোয়। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর প্রয়াস নেন অভিবাসন প্রত্যাশীরা। গোটা পথ প্রদর্শকের দায়িত্বে থাকে মানবপাচারকারী চক্র। খরচ হিসেবে জনপ্রতি আদায় করা হয় ২৫-৩০ হাজার ডলার পর্যন্ত। অভিবাসন প্রত্যাশীদের ক্ষেত্রে কখনো কখনো ১০-১২টি দেশ পার হওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ যাত্রাপথের পুরোটাই পাড়ি দিতে হয় সড়ক পথে অথবা পায়ে হেঁটে। দুর্গম ও বিপদসঙ্কুল পথ দিতে গিয়ে প্রাণও হারান অনেকে। যারা বেঁচে যান তাদের ঠিকানা হয় ভেনিজুয়েলা, বলিভিয়া, পানামা অথবা মেক্সিকোর মতো লাতিন আমেরিকা অঞ্চলভুক্ত কোনো দেশের বন্দিশালায়। বিশেষ করে মেক্সিকোর কারাগারগুলোয় অবৈধ পথে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশির সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।

ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন এজেন্সি প্রকাশিত তথ্য মতে, ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন প্রত্যাশী ১৪৯ জন বাংলাদেশি মেক্সিকোয় আটক হয়েছেন। ২০১২ সালে আটকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬৭ জনে। ২০১৩ সালে আটক হন ৩২৮ জন, ২০১৪ সালে ৬৯০, ২০১৫ সালে ৬৪৮ ও ২০১৬ সালে ৬৯৭ জন।

২০১৭ সালে এখন পর্যন্ত ১২০ জন আটক হওয়ার কথা জানা গেছে। এরা সবাই বর্তমানে মেক্সিকোর জেলে বন্দিদশা পার করছেন। স্থানীয় বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে মেক্সিকোর জাতীয় অভিবাসন সংস্থা আইএনএমের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বৈঠকও করেন। বৈঠকে এ নিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করে আইএনএম।

বৈঠকে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সামপ্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশিয়া থেকে মেক্সিকোয় অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। এসব অভিবাসীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছেন, যাদের মূল লক্ষ্য হলো সুযোগ বুঝে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভিবাসন প্রত্যাশীদের যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে পাচারকারীরা সাধারণত জনবহুল এলাকা এড়িয়ে মরুভূমি, পাহাড় কিংবা জঙ্গল পথ বেছে নেয়। কারণ এসব স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি কম।

দুর্গম এসব পথ পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন অনেকেই। কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়েন। ১৯৯০ সালের পর থেকে শুধু মেক্সিকোর সীমান্ত এলাকাতেই ছয় হাজারের বেশি মরদেহ উদ্ধার করেছে মার্কিন সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এর মধ্যে কতজন বাংলাদেশি, তার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যানও নেই।


ঢাকা, ০৩ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ