Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ১৫ই মে ২০২৪, ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

পারমাণবিক চুল্লী ধ্বংসের স্বীকার করলো ইসরাইল

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০১৮, ০৩:৫৮

ইন্টারন্যাশনাল লাইভ: সিরিয়ায় নির্মাণাধীন একটি পারমাণবিক চুল্লী ধ্বংসের কথা স্বীকার করেছে ইসরাইল। দেশটি বলেছে, সিরিয়ার দেইর আল-জৌর প্রদেশে অবস্থিত আল কাইবার স্থাপনা বোমা মেরে ধ্বংস করে তাদের সামরিক বাহিনী। ওই সময় চুল্লীর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল।

তবে সিরিয়ার সরকার বার বার বলেছে, তারা কোনো পারমাণবিক চুল্লি বানানোর চেষ্টা করে নি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, শত্রু রাষ্ট্রগুলো যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ইসরাইল।

তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জন করা থেকে সিরিয়াকে বিরত রেখেছিল ইসরাইল সরকার, প্রতিরক্ষা বাহিনী ও মোসাদ (গুপ্তচর সংস্থা)।

এ জন্য প্রশংসা প্রাপ্য তাদের। ইসরাইলের নীতি আগে যেটা ছিল, এখনও সেটাই আছে। আর তা হলো, আমাদের শত্রুদেরকে পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ থেকে বিরত রাখা।’
শুধু সিরিয়ায় নয়। এর আগে ইরাকের একটি পারমাণবিক চুল্লিও ধ্বংস করে ইসরাইল। ১৯৮১ সালে আচমকা হামলা চালিয়ে বাগদাদের দক্ষিণ পূর্বে নির্মাণাধীন ওই চুল্লী ধ্বংস করে ইসরাইলি যুদ্ধবিমান। ওই সময় ইরাকের শাসক ছিলেন সাদ্দাম হোসেন।

সিরিয়ার চুল্লী ধ্বংস করার ব্যাপারে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলেছে, ‘২০০৪ সালের শেষের দিকে ব্যাপক আকারে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে ইসরাইল। সেই সময় ইসরাইলি গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, বিদেশী কিছু বিশেষজ্ঞ (ধারণা করা হয়, উত্তর কোরীয়) সিরিয়ার পারমাণবিক প্রকল্পে সহায়তা করছেন।’

ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পারমাণবিক স্থাপনার অবস্থান নিশ্চিত করার পর অনুমান করে যে, ২০০৭ সালের শেষের দিকে এই পারমাণবিক চুল্লী কার্যক্ষম হবে। এরপর সামরিক বাহিনী সেখানে বিমান হামলার ছক কষে। ওই অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন আউটসাইড দ্য বক্স’।

২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ রাত সাড়ে ১০টার দিকে, ইসরাইলের এফ-১৬ ও এফ-১৫ যুদ্ধবিমান দক্ষিণাঞ্চলীয় ইসরাইলের দুইটি ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে। তাদের গন্তব্যস্থল ছিল দেইর আল-জৌর। যাত্রার জন্য ভূমধ্যসাগর ও সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্ত এলাকাকে বেছে নেয় ইসরাইলি যুদ্ধবিমান।

চার ঘণ্টা পর ফিরে আসে ওই যুদ্ধবিমানগুলো। মাঝেই তারা হামলা চালায়, যার ফলে ওই চুল্লী সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে যায়। ইসরাইল বলছে, খুবই সংবেদনশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এতদিন ধরে এই হামলার কথা স্বীকার করা হয় নি।

সিরিয়ার সামরিক বাহিনী ওই ইসরাইলি হামলার প্রতিশোধ নেয় নি। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ওই সময় শুধু এটাই বলেছিলেন যে, সামরিক বাহিনীর স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। পরে ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) উপসংহার টানে যে, ওই স্থাপনায় পারমাণবিক চুল্লি ছিল, এই দাবি সত্য হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।

ইসরাইলের অভিযোগ হলো, পারমাণবিক উচ্চাভিলাষ রয়েছে ইরানের, যা ইসরাইলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। ইসরাইল আরও মনে করে, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ইসরাইল সীমান্তের কাছে স্থায়ীভাবে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে চায় ইরান। এই দাবি অবশ্য অস্বীকার করেছে ইরান।

ইরান ২০১৫ সালে বিশ্বের ৬টি শক্তিধর দেশের সঙ্গে একটি চুক্তি করে। ওই চুক্তি অনুযায়ী, বিপুল অর্থনৈতিক ছাড়ের বিনিময়ে পারমাণবিক প্রকল্প সীমিত করতে সম্মতি দেয় দেশটি। কিন্তু ওই চুক্তি পছন্দ হয় ইসরাইলের। ইসরাইল মনে করে, ওই চুক্তি যথেষ্ট নয়। বর্তমান মার্কিন প্রশাসনেরও একই মত।

ওই চুক্তি সংশোধন করতে এই মুহূর্তে ইউরোপের ওপর কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করছে যুক্তরাষ্ট্র। ঠিক তখনই ইসরাইল সিরিয়ার পারমাণবিক চুল্লী ধ্বংসের তথ্য নিশ্চিত করলো। এর মাধ্যমে আমেরিকার কূটনৈতিক চাপের পাশাপাশি সামরিক চাপ তৈরি হবে বলে আশা করছে ইসরাইল। কিন্তু এই চুক্তি ভেস্তে গেলে মধ্যপ্রাচ্য চরম অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকেই মনে করেন।

 

ঢাকা, ২২ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ