Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

প্রধান বিচারপতি গ্রেপ্তার, আর অনেকেই...

প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৮, ০৪:৩১

লাইভ ডেস্ক: প্রধান বিচারপতি গ্রেপ্তার। অনেকটা নাটকীয় ভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেবন প্রধান বিচারপতি নন আরও ক'জন বিচারপতিকে আটক করা হয়েছে। গোটা দেশ এখন রাজনৈতিক উত্তেজনায় টালমাটাল। পুরো দেশ এখন নানান অরাজকতায় ডুবে রয়েছে। সাধারণ জনগন কাণ্ডারী খুঁজছে। কে তাদের উদ্ধার করবে এমন রব উঠেছে দেশজুড়ে।

দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। গতরাতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন। এর পরপরই গ্রেপ্তার করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আবদুল্লাহ সাঈদ ও আরেকজন বিচারক আলী হামিদকে।

 

তাবে তাদের বিরুদ্ধে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো অভিযোগ গঠন করা হয় নি। ওদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুমকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিশ্ব হতাশা, উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বৃটেনে আশ্রয় নেয়া মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদ তার দেশের সরকারের এ কাজকে সম্পূর্ণ অবৈধ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, এ ঘটনা অভ্যুত্থানের পর্যায়ে পড়ে।

অবিলম্বে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের পদত্যাগ করা উচিত। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পরিস্থিতিতে হতাশা ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সতর্কতা উচ্চারণ করেছে।

তারা বলেছে, বিশ্ব মালদ্বীপ পরিস্থিতি পর্যাবেক্ষণ করছে। বৃটেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, মালদ্বীপে প্রথমবার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদ সহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তি দেয়ার আদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

কিন্তু সেই আদেশ মানতে অস্বীকৃতি জানান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন। তিনি উল্টো প্রধান বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করেছেন। এ অবস্থাকে বিরোধীরা সরকারের অবাঞ্ছিত কর্মকান্ড হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

এর ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিন্দা প্রকাশ করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, মালদ্বীপ হলো ২৬ টি কোরাল বা প্রবাল দ্বীপের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি দ্বীপরাষ্ট্র। এতে আছে ১১৯২ টি দ্বীপ। এ দেশটির অর্থনীতির বড় অংশ আসে পর্যটন খাত থেকে।

কি ঘটছে মালদ্বীপে:
গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় রাজনীতিককে মুক্তি দেয়ার আদেশ দেয়। ওই রায়ে বলা হয়, ২০১৫ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদের বিরুদ্ধে যে বিচার করা হয়েছিল তা ছিল অসাংবিধানিক।

রায় হওয়ার আগে দেশটির পুলিশ কমিশনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এ মামলা নিয়ে বর্তমান সুপ্রিম কোর্ট যে রায়ই দেবে তা তারা বাস্তবায়ন করবেন। এমন বক্তব্য দেয়ার কারণে তাকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন।

এখন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনকে অভিশংসন বা তাকে উৎখাতের যেকোনো রকম চেষ্টার বিরুদ্ধে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে। সোমবার পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে। এদিন দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।

এ অবস্থার অধীনে গ্রেপ্তারের বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয় নিরাপত্তা রক্ষাকারীদেরকে। নিষিদ্ধ করা হয় জন সমাবেশ। বিরোধী দলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুম।

তাকেও এ দিন গৃহবন্দি করা হয়। তবে তিনি অনলাইনে সমর্থকদের উদ্দেশে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। তাতে তিনি নেতাকর্মীদের বলেছেন, তিনি এমন কিছু করেন নি যার জন্য তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেয়া হবে।

একই বার্তায় তিনি নেতাকর্মীদের শক্ত থাকার আহ্বান জানান। মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্টেও মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে তাতে সরকার অনেকটা বিপদে পড়ে যায়।

যদি ওই রায়কে বাস্তবায়ন করা হয় তাহলে রাজনৈতিক ফাঁদে পা রাখবেন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন। কারণ, এ বছরেই সেখানে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। যদি তিনি বরখাস্ত করা ১৫ জন এমপিকে পুনর্বহাল করেন তাহলে পার্লামেন্টে বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে পড়বে এবং তারা স্পিকারকে অভিশংসিত করবে।

পক্ষান্তরে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনকেও উৎখাত করার ক্ষমতা রাখবে। এরপর যদি সাবেক প্রেসিডেন্ট নাশিদ বৃটেন থেকে দেশে ফিরে যান এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তাহলে ক্ষমতার মসনদ হারানোর সমূহ আশঙ্কা গ্রাস করেছে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনকে।

তাই তিনি জরুরি অবস্থাকেই বেছে নিয়েছেন। এর ফলে মালদ্বীপে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। রাতভর ধরপাকড় করা হয়। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কাউন্সিল টুইট করেছে। তাতে বলা হয়েছে, মালদ্বীপের জনগণের পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র।

মালদ্বীপ সরকার ও দেশটির সেনাবাহিনীকে অবশ্যই আইনের শাসন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সম্মান দেখাতে হবে।

পরিস্থিতির দিকে বিশ্ববাসী নজর রাখছে।


ঢাকা, ০৬ ফেব্রুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ