স্পোর্টস লাইভঃ কলকাতায় বাংলাদেশ-ভারত বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ। প্রতিবেশী দুই দেশের খেলা, সেটা ক্রিকেট হোক কিংবা ফুটবল- উন্মাদনা এমনিতেই তৈরি হবে। তার ওপর, কলকাতা হচ্ছে ফুটবলের শহর। সেখানে যুব ভারতীতে প্রায় ৯ বছর পর খেলতে নামছে ভারতীয় জাতীয় দল। এই মাঠে স্বাগতিকরা বাংলাদেশের মুখোমুখি হচ্ছে দীর্ঘ ৩৪ বছর পর। ক্রিকেট ছাপিয়ে ফুটবল উন্মাদনা পুরো কলকাতা শহরকে গ্রাস করে নেবে- এটাই তো স্বাভাবিক।
কলকাতার ভক্ত ও সমর্থকদের আগ্রহ আর উদ্দীপনা দেখে মনে হতেই পারে, আগামীকাল বিকেলে সল্টলেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে মাহরণই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। র্যাঙ্কিং এ বাংলাদেশ-ভারতের অবস্থান যাই থাকুক না কেন, দু’দলের মধ্যেই এখন যুদ্ধংদেহী ভাব।
কিন্তু এই রকম একটি ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ শিবির কতটা প্রস্তুত? চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতীদেরকে তাদেরই মাটিতে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য জেমি যে আর জামাল ভুঁইয়ারা নিজেদের কতটা ঝালিয়ে নিতে পেরেছেন?
বাংলাদেশ দলের ফুটবলাররা ভারতের বিপক্ষে লড়ার জন্য তিনদিন আগেই কলকাতা গিয়ে পৌঁছে যায়। ইংলিশ কোচ জেমি ডে কলকাতায় গিয়ে ঘাঁটি গেঁড়েছেন ভারতীয় দলের আগমণের দু’দিন আগেই। যে কারণে সল্টলেকের যুব ভারতীতে সুনিল ছেত্রীদের আগেই শিষ্যদের নিয়ে অনুশীলনে নেমে পড়তে পেরেছেন বাংলাদেশ দলের কোচ।
নিজেদের কতটা প্রস্তুত করতে পেরেছেন? দলের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানার মুখেই শুনুন সে উত্তর। তিনি বলেন, ‘ভারতের জন্য আমরা তৈরি রয়েছি। অতীতে কি হয়েছে ভুলে যান। মঙ্গলবার কিন্তু একটা নতুন নব্বই মিনিটের ম্যাচ। সেখানে যাদের পরিকল্পনা কাজ করবে, তারাই জিতে ফিরতে পারবে।’
ঘরের মাঠে নিশ্চিত ভয়ঙ্কর থাকবেন ভারতীয় ফুটবলাররা। তাদের আক্রমণ ঠেকানোর পরিকল্পনা কিভাবে করছেন? গোলরক্ষক রানা বললেন, ‘বক্সের আশেপাশে সুনিল ভয়ঙ্কর। ওর কোনাকুনি সব শট, ফ্রি-কিক, পুরনো ম্যুভ গত দু-দিন ধরে হোটেলের রুমে বসে মন দিয়ে দেখেছি। কোচ আগের রাতে একই সঙ্গে কাতারের বিরুদ্ধে আমাদের খেলার ভুলভ্রান্তি ছিল- সেগুলো নিয়ে ভিডিও ক্লাস করিয়েছেন।’
ভারতীয়দের ভিডিও নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে বলেও জানান রানা। তিনি বলেন, ‘কিভাবে সুনিলদের বোতলবন্দি করতে হবে সে সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্যও কোচ দিয়েছেন চার ডিফেন্ডারসহ আমাকে। আজ হবে ভারতের শক্তি নিয়ে ভিডিও বিশ্লেষণ। আমরা তৈরি সুনিল-উদান্তদের জন্য।’
আজ দেড় ঘণ্টার বাংলাদেশ অনুশীলনে জোর দেওয়া হয়েছে মূলতঃ রক্ষণ জোরদার করার দিকেই। ভারতীয় ফরোয়ার্ডদের আক্রমণের সময় বাংলাদেশ মিডফিল্ডার ও ডিফেন্ডাররা কোথায় তাদেরকে ‘ব্লক’ করবেন, কে কাকে ‘কভার’ দেবেন, এসবই ইয়াসিনদের হাতে ধরে দেখাচ্ছিলেন বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে।
বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ মাসুদ পারভেজ কায়সার বলে দিলেন, ‘ছেলেদের বলে দেওয়া হয়েছে, ভারতকে তাদের নিজেদের ছন্দে খেলতে দেওয়া চলবে না। মঙ্গলবার প্রথম মিনিট থেকেই তাই আমাদের কাজ হবে ওদের তালটা কেটে দেওয়া। সঙ্গে ম্যাচের দখলটাও নিতে হবে আমাদের। তারই মহড়া হল আজ। সুনীলদের সেট পিস রোখার প্রস্তুতিও সেরে রাখলাম।’
পাশাপাশি আক্রমণে ওঠার সময় রক্ষণ ও মাঝমাঠ কতটা ও কিভাবে উঠবে, সেই মহড়াও হল প্রায় ২০ মিনিট। শেষ মুহূর্তে হল প্রতিপক্ষের কর্নার, ফ্রি-কিকের সময়ে বল বিপদমুক্ত করার প্রস্তুতি।
ঢাকা, ১৪ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: