বরগুনা লাইভ: ওসির প্রীতিভোজ! তাও করোনা মহামারির মহাসংকটের সময়ে। দুইশত লোককে তিনি ভোজন সেবা দিলেন। এসময় সরকারের বেধেঁ দেয়া নিয়মকে তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়েছেন বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। বলেছেন এই কাণ্ড কোন ওসি করেছে এটা তো জানা ছিলো না। এমনটি করার বিধান আছে বলেও অনেকেই নানান সমালোচনা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বরগুনা পুলিশ সুপার মুহম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।’
চলমান করোনা ভাইরাসের প্রভাব বিস্তার ঠেকাতে দেশে সরকার ঘোষিত লকডাউন চলছে। রয়েছে নানা নির্দেশনা। তবে লকডাউনের বিধিনিষেধকে উপেক্ষা করে বরগুনার তালতলী থানার ওসি কামরুজ্জামান মিয়া প্রায় দুই শতাধিক স্থানীয় রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ও সুশীল ব্যক্তিদের নিয়ে ঈদ উপলক্ষে প্রীতিভোজের আয়োজন করেছেন।
শুক্রবার (১৪ মে) দুপুর ২টার দিকে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলে এ প্রীতিভোজ। এটাকে অবশ্য এলাকার লোকজন বলেছেন এটা প্রীতিভোজ নয় এটা হলো প্রীতিভোজন সেবা। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
সেখানে একটি দফায় বলা আছে-বিয়ে, জন্মদিনসহ যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে কোনরকম জনসমাগম করা সম্পূর্ণ নিষেধ। সরকারি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে থানায় প্রায় দুই শতাধিক স্থানীয় রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ও সুশীল ব্যক্তিদের নিয়ে বড় প্যান্ডেল করে ধুমধাম করে খানাপিনা করানো হয়।
খানাপিনা পরিবেশন করেন পুলিশ সদস্যরা। তবে কারও মুখে নেই মাস্ক। মানা হয়নি কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি। এতে সচেতন মহল এমন প্রীতিভোজের আয়োজনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন আগামী ১৬ মে এর পরে দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আসছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে পুলিশের হাতেই বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার।
কিন্তু এমন সময়ই থানার কর্তারা যদি স্বাস্থ্যবিধিকে তোয়াক্কা না করে লোকজনের জনসমাগমের মধ্যেই এ প্রীতিভোজ করেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কতটা স্বাস্থ্যবিধি মানবে। এ বিষয়ে তালতলী সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘থানার প্রীতিভোজের আয়োজনে আমাকেও দাওয়াত দেন তারা। কিন্তু দেশের চলমান করোন ভাইরাসের প্রভাব ঠেকাতে লকডাউন চলাতে ও স্বাস্থ্যবিধির ঝুঁকি থাকায় আমি যাইনি। করোনাকালে থানা পুলিশের এমন প্রীতিভোজের আয়োজন করা ঠিক হয়নি।’
তালতলী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের খাওয়ানো হয়েছে। কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ছিলেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই খানাপিনা করানো হয়েছে। এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমনা বলেন, ‘সরকারের বিধিনিষেধের ভেতরে কোনো কাজ কেউ করতে পারবে না। তবে তালতলী থানার দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের প্রীতিভোজ আয়োজন করা ঠিক হয়নি। তবে আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।’ আসলে সবাই বিষয়টি জানে। কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেননি বলে তথ্য মিলেছে।
ঢাকা, ১৪ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআইটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: