লাইভ প্রতিবেদক : বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সাড়া ফেলেছে যুক্তরাজ্যেও। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সমর্থনে পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে সমাবেশে হয়েছে। এসময় তারা এই আন্দোলনের প্রতি নিজেদের পূর্ণ সমর্থনের কথা বলেন প্রবাসীরা। একই সঙ্গে আন্দোলনরত শিশু-কিশোরদের ওপর পুলিশি পাহারায় হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। এসময় তারা ‘যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমিই বাংলাদেশ’ এমন প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমর্থনে গত রোববার স্থানীয় সময় বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গণসমাবেশ হয়। এতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে পড়ুয়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। নারী ও শিশুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
নিরাপদ সড়ক, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয় সমাবেশে। শ্বেতাঙ্গ এক নারী তাঁর হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে প্রশ্ন ছুড়েছেন, ‘পুলিশ কীভাবে শিক্ষার্থীদের পেটাতে পারে!’
বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, লেট ভয়েস বি হার্ড ও নারীদের সংগঠন ‘ইউকে বিভাস’ যৌথভাবে এ গণসমাবেশের আয়োজন করে। শাকুর হক ও শরিফ হায়দারের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশ বক্তারা বলেন, স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিশু-কিশোরেরা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে উন্নয়নের গল্পে মোড়ানো বাংলাদেশে আইনের শাসনের কী বেহাল দশা। পুলিশ, সাংসদ, মন্ত্রী—যারা দায়িত্বশীল, তারা নিজেরাই ট্রাফিক আইনের তোয়াক্কা করেন না। তারা বলেন, শিক্ষার্থীরা দেখিয়ে দিয়েছে, একটি সুন্দর-সুশৃঙ্খল দেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই সমাবেশে বাসের চাপায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর স্মরণে নীরবতা পালন করা হয়। সবশেষে ছিল মানববন্ধন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি মেনে নিয়ে সরকারকে তা দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান প্রবাসীরা।
তারা বলেন, পুলিশকে ব্যবহার করে, দলীয় লোক লেলিয়ে দিয়ে, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে আন্দোলন থামিয়ে ভালো কিছু হবে না। এসব শিক্ষার্থীর যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার মধ্যেই দেশের উন্নয়ন ও কল্যাণ নিহিত।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই রাজধানীতে বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর রাজধানীসহ সারা দেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে শিক্ষার্থীরা। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিভিন্ন যানবাহনের লাইসেন্স পরীক্ষা করতে শুরু করে তারা। তাদের এই আন্দোলন অভাবনীয় সাড়া জাগায়। এরই মধ্যে জিগাতলা, মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরতদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে কয়েকশ শিক্ষার্থী আহত হন। এসব ঘটনায় প্রতিবাদ করতে গিয়েও শিক্ষার্থীরা হামলার শিকার হচ্ছেন। সোমবারও পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। এসব ঘটনায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। একই সঙ্গে সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে।
ঢাকা, ০৭ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: