ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার দিন রবিউল এর বাবা মারা যান! মৃত্যুর আগের রাত পর্যন্ত রবিউল হাসপাতালে ওর বাবার পাশেই বসে ছিলেন, রাত পোহাতেই ভর্তি পরীক্ষা। বাবা বললেন,"তুই বাসায় যা, পরীক্ষার আগের রাতে না পড়লে কিছুই পারবি নাতো, তুই চলে যা... ভোরে উঠে শেষবারের মতো পড়াগুলা একটু চোখ বুলিয়ে যাস আর নাশতা করতে ভুলবি না কিন্তু,আমাকে নিয়ে চিন্তা করিস না, দেখবি তুই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবি! আমি তোর জন্যে দোয়া করেছি অনেক!"
রবিউল বাবার কথামত উঠে হাসপাতাল থেকে বাসার দিকে পা বাড়ালো....বাবা পিছন থেকে বললো,"কাল পরীক্ষা দিয়েই আমাকে ফোন করে জানাবি কিন্তু কেমন দিয়েছিস পরীক্ষা আর সোজা চলে আসবি আমার কাছে!!!"
উত্তরে রবিউল মাথা নিচু করে জ্বি আব্বা বলেই চলে আসলো....
রবিউল জানতো না এই ডাকই ছিলো তার বাবার শেষ ডাক, রবিউল জানতো না কাল পরীক্ষা দেওয়ার পর আর পৌঁছাবে না বাবার কাছে তার ফোন কল, সে শুধু জানতো বাবার ইচ্ছেটা পূরণ করতে হবে, চান্স পেয়ে ভর্তি হতে হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
রবিউল তারর বাবার মৃত্যুর সংবাদটা পায় পরদিন দুপুরবেলা পরীক্ষা দেবার পর।
পরীক্ষা ভালো হয়েছে ওর, মোটামুটি ধরে নিয়েছে, চান্স পাবে!
সাথেসাথে ফোন দেয় বাবাকে, কিন্তু ফোনটা আর বাবার ধরা হয়নি, ফোনটা ধরেছিল রবিউলের কোন এক আত্মীয়!
ফোনের ওপাশ থেকে বললো,"তুমি তাড়াতাড়ি হাসপাতালে চলে আসো!!"
রবিউল দৌড়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখলেন, বাবা আর বেঁচে নেই।
সকাল ১০টার কিছু আগেই মারা গিয়েছেন; আত্মীয়রা ওকে জানায়নি তখন, কারণ রবিউল তখন পরীক্ষার হলে হয়তো ছুটে যাচ্ছিলো তাই!!
৩দিন পর ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হয়...
রবিউল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়।
সবাই খুশীতে আত্মহারা...
কিন্তু রবিউল তখনো বাবা হারানোর বেদনা ভুলতে পারেনি, ক্রমাগত কেঁদে চলেছে...
আজ তার বাবার ইচ্ছে/স্বপ্ন দুটোই পূরণ হয়েছে...
এমন রবিউলরাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব, দেশের গর্ব,
বাবাদের গর্ব আর অহংকার...
[কার্টেসি : আপেল খান]
ঢাকা, ০২ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: