Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ২১শে মে ২০২৪, ৭ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ঢাবির পীঠস্থান কার্জন হলের যাত্রা যেভাবে

প্রকাশিত: ৬ সেপ্টেম্বার ২০১৭, ০৫:২৪

অনিন্দ্য জাহিদ : ঢাকার ঐতিহাসিক এবং দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যগুলোর অন্যতম কার্জন হল। বঙ্গভঙ্গ আইন করে পূর্ব বাংলা ও আসামের প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে বেছে নেয়া হয় ঢাকাকে। অনুমিত রাজধানী হিসেবে ঢাকার রমনা অঞ্চলে উন্নত ভবনের নির্মাণ কাজ হাতে নেয়া হয়, যার অন্যতম কার্জন হল। কার্জন হল কী কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছিলো তা নিয়ে মতভেদ আছে।

ইতিহাসবিদ আহমাদ হাসান দানীর মতে, কার্জন হল নির্মিত হয় টাউন হল হিসেবে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে। পূর্ববাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতির পীঠস্থান হিসেবে টাউন হলের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আর সেক্ষেত্রে কার্জন হল ছিল অগ্রগণ্য। আলোচিত ইতিহাসবিদ শরীফ উদ্দীন আহমদ এই যুক্তিকে অগ্রাহ্য করেন। তার মতে, ঢাকা কলেজের পাঠাগার হিসেবে কার্জন হল নির্মিত হয়। এবং নির্মাণের জন্য অর্থ প্রদান করেন ভাওয়ালের রাজকুমার।

১৯০৪ সালের ঢাকা প্রকাশ লিখেছিল, "ঢাকা কলেজ নিমতলীতে স্থানান্তরিত হইবে। এই কলেজের সংশ্রবে একটি পাঠাগার নির্মাণের জন্য সুযোগ্য প্রিন্সিপাল ডাক্তার রায় মহাশয় যত্নবান ছিলেন। বড়লাট বাহাদুরের আগমন উপলক্ষে ভাওয়ালের রাজকুমারগণ এ অঞ্চলে লর্ড কার্জন বাহাদুরের নাম চিরস্মরণীয় করিবার নিমিত্তে 'কার্জন হল' নামে একটি সাধারণ পাঠাগার নির্মাণের জন্য দেড় লক্ষ টাকা দান করিয়াছেন।"

মূলত, কার্জন হলকে কেন্দ্র করে পূর্ববঙ্গে শিক্ষাদীক্ষার যে প্রসার ঘটে, তাতে পূর্ববঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জোর আলোচনা দেখা দেয়। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হলে সে আলোচনা অনেকটা ক্ষীণ হয়ে পড়ে। কার্জন হলকে তখন ব্যবহার করা হয় ঢাকা কলেজের শ্রেণিকক্ষ হিসেবে।

পরবর্তীতে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তখন থেকেই কার্জন হলকে ব্যবহার করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের জন্য, যা আজও ব্যবহৃত হচ্ছে।

ভাষা আন্দোলনের তীর্থস্থান হিসেবে স্বীকৃত এই কার্জন হল। ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কার্জন হলে বক্তব্য দেন মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ এবং দম্ভের সাথে ঘোষণা দেন, “উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা”।

শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষনিকভাবে এর তুমুল প্রতিবাদ জানান। উপমহাদেশের প্রাচীন ছাত্রসংগঠন “ছাত্রলীগ”-এর জন্মও এই কার্জনের প্রাঙ্গণে।

ইউরোপ ও মোগল স্থাপত্য রীতির দৃষ্টিনন্দন সংমিশ্রণে কার্জন হল নির্মিত। ভবনের বহিরাবরণে কালচে লাল রঙের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। খিলান ও গম্বুজগুলো নির্মিত আধুনিক স্থাপত্যবিদ্যা এবং মোগল কাঠামোর সমন্বয়ে। বিজ্ঞান অনুষদের নতুন ভবনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে পরবর্তীতে অবয়ব ঠিক রেখে নির্মিত হয়েছে আরো কিছু ভবন।

(চলবে)

অনিন্দ্য জাহিদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


ঢাকা, ০৫ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ