Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ১৩ই মে ২০২৪, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

গৌরবের ১৭ বছরে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০১৭, ২৩:৫৬


মাহমুদুর রহমান সোহেব: চোখ ধাঁধানো আলোক সজ্জায় সজ্জিত প্রিয় ক্যাম্পাসের ভবনগুলো, বিভিন্ন বিভাগ ও ইনষ্টিটিউটের বারান্দাগুলো সাজানো বাহারি রঙ্গের বেলুন ও ফেস্টুনে। সবার হাতে হাতে অনুষ্ঠান সূচির লিফলেট ও মুখে উৎসাহ উদ্দীপনার ছাঁপ এ যেন এক বিশেষ দিনকে ঘিরে, এটি আর কিছুই না এ সব কিছুই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসকে কেন্দ্র করে।


গত ১৫ জুলাই দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার কৃষি শিক্ষার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ১৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করে। এই দিনটি ঘিরে বর্ণিল সাজে রুপ নেয় সবুজ ক্যাম্পাস।


যার প্রস্তুতি রাত পোহাবার পূুর্বেই সমাপ্ত হয়। প্রতিষ্ঠা দিবসের উৎসবকে স্মরনীয় করে রাখার জন্য নানান কর্মসূচি গ্রহন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে রয়েছে পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন অবমুক্তকরণ, আনন্দ র‌্যালী, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।

তাই সোনালী রোদের খরতাপ উপেক্ষা করে শিক্ষক , কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা এককাট্রা হয়ে আনন্দ উৎসবে মুখর করে তোলো রাজধানীর বুকে অবস্থিত এই সবুজ গ্রামকে। ক্যাম্পাস হয়ে উঠে কৃষিবিদদের মিলনমেলা। এদিন বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ভবনের সামনে সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।


বিশ্ববিদ্যালয় লোগো সম্বলিত বেলুন ও শান্তির প্রতিক পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন ভিসি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।


এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি ড. মোঃ সেকান্দার আলী, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হক বেগ, প্রক্টর ড. ফরহাদ হোসেন, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনার পরিচালক ড. মোঃ মিজানুর রহমান।


এছাড়াও বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক , কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। এর পূর্বে কেক কাটার মাধ্যমে আনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় ভিসি প্রফেসর ড.কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০০১ সনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনের মাধ্যমে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি অত্র আনুষ্ঠানের আয়োজক ও উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান।


এরপরে একাডেমিক ভবন থেকে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র‌্যালী বের হয় যা রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।


এসময় ব্যানার, প্ল্যাকার্ডসহ বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে আনন্দ র‌্যালীতে অংশ নেয় শিক্ষক ,কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ যা এক বিশাল জনসমুদ্রে পরিনত হয়। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষ হতে টি-শার্ট ও ক্যাপ দেয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, পুরষ্কার বিতরণী ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।


অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ভিসি প্রফেসর ড.কামাল উদ্দিন আহমেদ এবং প্রধার অতিথির আসন অলংকৃত করেন কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যায়ের একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয় যা সকলের দৃষ্টি কাড়ে। এছাড়াও নাচ, গান ও অভিনয়ের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যায়ের শিল্পীরা দীর্ঘরাত পর্যন্ত কেন্দ্রিয় অডিিেটারিয়াম মাতিয়ে রাখেন। এরই মাধ্যমে শেষ হয় স্মরনীয় একদিন।


উল্লেখ্য যে, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ১১ ডিসেম্বর ১৯৩৮ সালে "বেঙ্গল কৃষি ইন্সটিটিউট" নামে প্র্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি এই অঞ্চলের প্রথম কৃষি শিক্ষা এবং গবেষণা পতিষ্ঠান। ১৯৪৭ সালে এটি "পূর্ব পাকিস্থান” কৃষি ইনস্টিটিউট" নামধারণ করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এর নাম "বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট" এ পরিবর্তন করা হয়। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৬১ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম বাকৃবিতে স্থানন্তরিত হয়।


২০০১ সালে এই প্রতিষ্ঠানকে ইনস্টিটিউট থেকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৪ টি অনুষদের অধিনে ৩৫ টি বিভাগ রয়েছে। তাছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কৃষিতে অবদান রাখার জন্য এ প্রতিষ্ঠানের অনেক গ্রাজুয়েট স্বাধীনতা পুরস্কার, রাষ্ট্রপতি পুরস্কার, বিজ্ঞান একাডেমিক স্বর্ণপদক ও শেরেবাংলা পদকসহ বিভিন্ন ধরনের পদক লাভ করেন।


আর বর্তমানে উদ্ভাবিত প্রযুক্তির মধ্যে সাউ সরিষা-১, সাউ সরিষা-২, সাউ সরিষা-৩, বাংলাদেশের আবহাওয়ায় আলুবীজ ও পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে সফলতা, মধু চাষ, নন্দিনী ফুল, পরিবেশ সংরক্ষণে ছাদ বাগান, আধুনিক পশুর চিকিৎসা, টমাটিলো, সাদা ভুট্টা, মূলা, বিভিন্ন বিদেশী ফুলের উৎপাদন সফলতা উল্লেখযোগ্য।
অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. এ. এফ. এম. জামাল উদ্দিন কাজ করছেন ফুল নিয়ে। তিনি দেশে প্রথম ল্যাসেনথিরাস গাছের ফুল ফুটান। এছাড়াও দেশের একমাত্র ‘জুওনোটিক রোগ গবেষণা ও তথ্য কেন্দ্র’ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত।

 

মাহমুদুর রহমান সোহেব
শিক্ষার্থী
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

 

ঢাকা, ১৭ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ