Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০
teletalk.com.bd
thecitybank.com

কাশফুলের নৈসর্গিক সাজে সেজেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বার ২০২২, ০৩:০০

কাশফুলের সৌন্দর্যে বিমুগ্ধ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

জাকির হোসেন,ববি: প্রাচ্যের ভেনিচ খ্যাত বরিশালের বুকে কীর্তনখোলা এবং খয়রাবাদ নদীর কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে দক্ষিণের শ্রেষ্ঠবিদ্যাপীঠ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই লীলাভূমিতে যেন স্বর্গীয় সৌন্দর্য তারার মত জ্বলজ্বল করে। ক্ষীণ আলোয় তার দ্যুতি ছড়িয়ে দিচ্ছে সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা বাংলার বুকে। প্রতিটি ঋতু ভিন্ন ভিন্ন সাজে মুগ্ধতা ছড়ায় এই স্বর্গরাজ্যে।

আর ঋতু রানী শুভ্রতা ছড়ানো কাশফুলে শ্বেত হয়ে উঠে ক্যাম্পাসের মাঠঘাটসহ প্রতিটি জায়গা। এ যেন এক ফালি মায়া! নদী, নীল আকাশ আর কাশফুলের এক অচেনা রাজত্ব।। বাতাসে কাশফুলের দোল খাওয়ার দৃশ্য কেড়ে নিচ্ছে মন। শুভ্র কাশফুল হাতছানি দিয়ে ডাকছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাস্তার দুপাশ, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, শহীদ মিনারের চারপাশ, কেন্দ্রীয় মসজিদের চারপাশ ও হল সংলগ্ন মাঠসহ বিভিন্ন চত্বর ভরে গেছে কাশফুলে। ক্যাম্পাসের চারপাশের কাশফুলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলকেই। শিক্ষার্থীদের আড্ডায় বারবার উঁকি দেয় শুভ্রতা ছড়ানো কাশফুল।

বাংলাদেশের ষড় ঋতুর মধ্যে এখন শরৎকাল। আর এই সময়ে ফুটে প্রিয় কাশফুল। সাধারণত নদী তীর এবং পানির কাছাকাছি ফাকা বালুময় জমিতে প্রচুর কাশফুল ফুটে। শরতকাল অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে সাধারণত কাশফুল ফুটে। তাই কাশবন বেড়ানোর জন্যে উপযুক্ত সময় তখনই। তবে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে কাশফুলের দেখা বেশি পাওয়া যায়। শরৎ আসে বর্ষার পরে । শরতের আগমন বাংলার মানুষের কাছে সুখের, আনন্দের।

শরতের আগমনে প্রকৃতি ভালবাসার এক অপরূপ সৌন্দর্যে মেতে ওঠে। শরতের আকাশ আমাদের দৃষ্টিকে করে মুগ্ধ, মনকে করে ফুরফুরে। বর্ষার আকাশ ছিল মেঘে পরিপূর্ণ। ভারী মেঘের আনাগোনা আর বর্ষণে সূর্যের দেখা ধুপছায়ার মতো। শরতের আগমনে হঠাৎ করে আকাশের রূপ যায় পাল্টে। নীলাকাশে ভাসমান সাদা মেঘগুলো হয়ে যায় পেঁজা তুলোর মতো। শুভ্র-মায়াবী মেঘের ভেলা ফুরফুরে বাতাসে উড়তে থাকে দিগন্ত থেকে দিগন্তে। মেঘের ভেলায় চড়ে উড়ে যেতে চায় স্বপ্নপিয়াসী মন দিগন্তজোড়া নীলাকাশে যখন পাখ-পাখালি উড়ে যায় খেয়ালি পাখনা মেলে তখন আমাদের নয়ন জুড়িয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে শরতের আকাশই এ ঋতুর সৌন্দর্য বাংলার প্রকৃতিতে নেমে আসে।

তেমনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসও প্রকৃতির রূপে ভিন্নরূপে সজ্জিত হয়। পঞ্চাশ একরের সবুজের সমারোহের এই ক্যাম্পাস শরৎ- এর আগমনে যেন নতুন সাজে সেজেছে ৷ কাশফুলের শোভায় পূর্ণতা পেয়েছে, তরুণ-তরুণীদের করেছে উজ্জীবিত ।কীর্তনখোলার তীরে বেষ্টিত বাদামী রংয়ের বিল্ডিংয়ে মোড়ানো ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ রাস্তার দুই পাশ, খেলার মাঠের পাশে ও টিএসসি সামনে পিছনে কাশফুলের দেখা মিলবে। ক্যাম্পাসের দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠের পাশের রাস্তাটা ও টিএসসির সামনের অংশের কাশফুলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে শিক্ষার্থীদের। এ ছাড়াও ছুটির দিনগুলোতে দেখা মিলে হাজারও দর্শনার্থীদের।

পশ্চিম আকাশে সূর্য যাওয়ার পূর্বক্ষণে সুফিয়া কামাল চত্তরে ভিড় বাড়ে শিক্ষার্থীদের। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে যায়, কেউবা প্রিয়তমাকে নিয়ে। হালকা বাতাসে কাশফুলের দোলের মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দেয় তারা। কেউবা সেই অনুভূতিগুলোকে ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দি করে। আবার কেউবা সঙ্গে সঙ্গে ফ্রেমবন্দি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে জানান দেয় শরৎ এসেছে ধরায় ৷

বর্ষার শেষে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর কাশফুলের শুভ্র সৌন্দর্য নিয়ে শরৎ আসে।নীল আকাশে সাদা মেঘের সারি সারি ভেলা আর মর্তে সুশোভিত কাশফুলের মেলা মোহিত করে মানুষের মন। কাশফুলের এই সৌন্দর্যে বিমোহিত না হওয়া মানুষের সংখ্যা নেই বললেই চলে।আর তাই তো শরতকে নিয়ে মানুষের এত জল্পনা- কল্পনা। শরৎের এই দৃষ্টিনন্দন দিনে ববি ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে এক আনন্দের,প্রাণের মেলায় এমনটায় অনূভূতি প্রকাশ করছিলেন আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সিফাত জামান মেঘলা ৷

শরৎ-এর এই অপরুপ সৌন্দর্যে বিমহিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. আনিছুজ্জামান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, কাশফুলের সাথে শরৎ-এর সম্পর্ক অনেকটা লংডিস্টানস রিলেশনশিপের মত কিন্তু প্রেমের বন্ধন অবিচ্ছেদ্য। কাশফুলের এই ছোঁয়ায় ক্যাম্পাস নতুনরূপে সেজেছে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তথা বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে প্রকৃতির এই অনবদ্য সম্পর্ক উপভোগ করার জন্য এক অন্যতম স্থান হচ্ছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ৷

বাংলা বিভাগের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহজাদী বলেন, শরৎ মনে জাগিয়ে দেয় কাশফুল, স্বচ্ছ নীল আকাশে সাদা মেঘ আর দিগন্তবিস্তৃত সবুজের কথা। কাশফুলের গন্ধ নেই, কাশফুল প্রিয়জনের জন্য উপহার হিসেবে দেওয়ার ফুলও নয়। তবে ক্যাম্পাসের কাশফুলের মধ্যে রয়েছে রোমাঞ্চকর উন্মাদনা। যা দেখে ব্যক্তিমন ভালো হয়ে যায়। কাশফুলের এই শুভ্রতা এবং স্নিগ্ধতা ছুঁয়ে যাক প্রতিটি হৃদয়, শরৎ প্রাতেঃ এই প্রার্থনা।


ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ