আবির হোসেন, ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরতম ক্যাম্পাসের মধ্যে অন্যতম। এর পরতে পরতে রয়েছে মানুষকে আকৃষ্ট করার মতো সৌন্দর্য্যরে ছোঁয়া। ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটি জায়গা আপনাকে মুগ্ধ করার জন্য যেন প্রস্তুত। এমনই একটি নজরকাড়া জায়গা হলো ইবির বটতলা।
প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করে সামনেই দেখা মিলবে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরাল, যা দেখতে অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। এরই বামে সততা ফোয়ারাকে মাঝে নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধ। এগুলোর অপরপাশে রয়েছে মুক্তবাংলা স্মৃতিস্তম্ভ। যার নান্দনিক গঠনশৈলী সকলকে আকৃষ্ঠ করে। মুজিব ম্যুরালের সামনেই রয়েছে শিক্ষার্থীদের আড্ডার চিরপরিচিত জায়গা ডায়না চত্বর।
ডায়না চত্বরকে পেছনে ফেলে একটু সামনে এগিয়ে গেলেই হাতের ডানে ঝাল চত্বর। এর ঠিক অপরপাশেই রয়েছে শিক্ষার্থীদের অতি প্রিয় দুই বটবৃক্ষ। এর নিচে বসেই প্রতিদিন রচিত হয় কতই না গল্প। বন্ধুরা মিলে মেতে ওঠে গানের আড্ডায়। ক্যাম্পাসের একেবারে মাঝখানে অবস্থিত হওয়ায় সবসময় জমজমাট থাকে জায়গাটি।
এখানে পাশাপাশি দুইটি বটগাছ রয়েছে। গাছ দুইটির নিচে শিক্ষার্থীদের বসার জন্য রয়েছে টাইলসে মোড়ানো বৃত্তাকার শান। ক্যাম্পাস শুরু হলেই সকাল সকাল ভিড় লেগে যায় এখানে। বটগাছ দুইটি অনুষদ ভবন ও ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভবনের মাঝখানে হওয়ায় ক্লাস শেষ হতে না হতেই ভীড় পড়ে যায় এখানে। গল্প-আড্ডায় মেতে উঠতে দেখা যায় নবীন শিক্ষার্থীদেরকে। এছাড়া গাছ দুইটিতে বেশ কিছু পাখি নিজেদের আবাসস্থল বানিয়ে নিয়েছে।
বিভিন্ন সময় বটগাছকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যতিক্রমীসব আয়োজন দেখা যায় বটগাছ দুইটিকে ঘিরে। বন্ধুবান্ধবরা মিলে গানে গানে মুখর করে তোলে এই প্রাঙ্গন। গরমের দুপুরে স্বস্তি ফেরানোর চেষ্টায় আড্ডায় মেতে ওঠে তারা।
এছাড়া বিভিন্ন সময় বন্ধুরা মিলে গ্রুপস্টাডি করতে বসে এই বটতলায়। পড়াশোনার পাশাপাশি জমজমাট আড্ডায় তারা মাতিয়ে রাখে চারিপাশ। কেউ কেউ ব্যস্ত হয়ে পড়ে সেলফিতে, বন্ধুত্বের এসব মূহুর্তকে ফ্রেমবন্দী করতে। সবার একসাথে আড্ডাকে আরো বেশি উপভোগ্য করে তোলে ঝালমুড়ি ও আইসক্রিম।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমাদের ক্লাস শেষ হওয়ার পরেই এখানে আমরা আসি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি জায়গায় সুন্দর পরিবেশ। বটতলায় সবসময় ছায়া এবং ঠান্ডা বাতাস থাকে যা আমাদের খুবই ভালো লাগে।’
এছাড়া ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন বলেন, ‘ক্যাম্পাসের মধ্যে সব জায়গায় আমাদের কাছে ভালো লাগে। কিন্তু বটতলাটা একটু বেশি ভালো লাগে, জায়গাটা একটু স্পেশাল। যখনই আমাদের ক্লাস শেষ হয় তখনই আমরা বটতলায় আসি, আড্ডা দিই, ফ্রেন্ডসার্কেলের সাথে গল্প করি। আমরা ঝাল চত্বরে ঝাল মুড়ি না খেয়ে ঝাল মুড়ি নিয়ে বটতলাতে চলে আসি। সবমিলিয়ে বটতলা আমাদের প্রাণের জায়গা।’
লেখক:
আবির হোসেন
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া।
ঢাকা, ০৪ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: