Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ১৩ই মে ২০২৪, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

প্রথম বিপ্লবী নারী শহীদ প্রীতিলতার প্রয়ান দিবস

প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বার ২০১৬, ০৫:৫৬

লাইভ প্রতিবেদক: ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা ও প্রথম বিপ্লবী নারী শহীদ প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। তার ডাকনাম রাণী এবং ছদ্মনাম ফুলতার। তৎকালীন পূর্ববঙ্গে জন্ম নেয়া এই বাঙালি বিপ্লবী তখনকার ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং জীবন উৎসর্গ করেন।

১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রীতিলতা পাহাড়তলীতে ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ‘কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষিদ্ধ’ এইরূপ অবমাননামূলক কথার জন্য ইউরোপিয়ান ক্লাব নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল ভারতীয়রা।

সে সময় প্রীতিলতার নেতৃত্বে বিপ্লবীরা ইউরিপিয়ান ক্লাব আক্রমণ সফল করেন। পুরুষবেশী প্রীতিলতা সামরিক কায়দায় তাঁর বাহিনীকে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এই সময়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হলে তাৎক্ষণিকভাবে পটাসিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মাহুতি দেন। তাঁর আত্মদান বিপ্লবীদের সশস্ত্র সংগ্রামে আরও উজ্জীবিত করে তোলে।

বীরকন্যা প্রীতিলতা স্মরণে তারই প্রয়াণ দিবসে একটি ওয়েব সাইট চালু করা হচ্ছে। এদিন (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে হোটেল সোনার গাঁওয়ের ব্যালকনি হলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ‘প্রীতিলতা’ চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে প্রীতিলতার নামে (www.banglarpritilata.com) ওয়েব সাইট উদ্বোধন করা হবে। এর পাশাপাশি থাকছে আলোচনা সভা। ‘এ সময়েও কেন প্রীতিলতা গুরুত্বপূর্ণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখবেন ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বিবি রাসেল, সেলিনা হোসেন, আয়শা খানম, শিমুল ইউসুফ, কাজী রোজী, শ্যামল দত্ত প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ১৯১১ সালে চট্টগ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা জগবন্ধু ছিলেন চট্টগ্রাম পৌরসভার হেড ক্লার্ক। প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার মাস্টারদা সূর্য সেনের ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধা ছিলেন।

ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে পরিচালিত সশস্ত্র সংগ্রামে প্রীতিলতাকে প্রথম আত্মোৎসর্গকারী নারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। প্রীতিলতা চট্টগ্রামের খাস্তগীর বালিকা বিদ্যালয় থেকে ১৯২৭ সালে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন।

এরপর তিনি ১৯২৯ সালে ঢাকা ইডেন মহিলা কলেজে ভর্তি হন এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এর দুই বছর পর প্রীতিলতা কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে দর্শনশাস্ত্রে ডিস্টিংশনসহ গ্রাজুয়েশন করেন। ইডেন কলেজের ছাত্রী থাকাকালে প্রীতিলতা লীলা নাগের নেতৃত্বাধীন দীপালি সংঘের অন্তর্ভুক্ত শ্রীসংঘের সদস্য এবং কলকাতার বেথুন কলেজের ছাত্রী থাকাকালে কল্যাণী দাসের নেতৃত্বাধীন ছাত্রীসংঘের সদস্য হন।

গ্রাজুয়েশন করার পর তিনি চট্টগ্রামের নন্দনকানন অপর্ণাচরণ নামক একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন।

১৯৩০ সালে অনেকগুলো বৃটিশবিরোধী বিপ্লবী দল তৈরি হয়। ঐসব দলের সদস্যরা বিশ্বাস করত যে, কেবল সশস্ত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ভারতের স্বাধীনতা অর্জিত হতে পারে। প্রীতিলতা মাস্টার দা সূর্য সেনের নেতৃত্বাধীন বিপ্লবী দলের প্রথম নারী সদস্য ছিলেন। তিনি টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ অফিস ধ্বংস এবং রিজার্ভ পুলিশ লাইন দখল অভিযানে যুক্ত ছিলেন। তিনি জালালাবাদ যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেন।

১৯৩০ সালে প্রীতিলতা কলকাতাস্থ আলীপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাজবন্দি রামকৃষ্ণের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে যথাসময়ে তা পালন করেন। ১৯৩২ সালের ১৩ জুন ধলঘাট সংঘর্ষে কয়েকজন বিপ্লবী প্রাণ হারান।

মাস্টারদা ও প্রীতিলতা পালাতে সক্ষম হন। পুলিশের জরুরি গ্রেফতার তালিকায় প্রীতিলতার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। মাস্টারদা তাঁকে স্কুল ছেড়ে দিয়ে পুরুষ বিপ্লবীদের মতো আত্মগোপন করার নির্দেশ দেন। প্রীতিলতা অপর একজন বিপ্লবী নারী কল্পনা দত্তসহ গোপন আস্তানায় চলে যান।

১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রীতিলতা পাহাড়তলীতে ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণের পর বীরত্বের সাথে আত্মাহুতি দেন।

ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর, (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//আইএইচ

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ