১৪৯২ সালে অষ্টম পোপ যখন স্ট্রোক করে তখনকার চিকিৎসকরা ধারনা করেছিল, পোপের মনে হয় শরীরের
কোথাও রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এই ভেবে পোপকে বাঁচানোর জন্য দশ বছর বয়সের তিনজন ছেলের শরীর থেকে রক্ত বের করে পোপকে পান করানো হয়েছিল।
যেহেতু তখন রক্তনালী বলে কিছু আছে, সেটাই জানা ছিল না। তাই সবাই ভাবতো রক্ত খেলেই সেটা শরীরে ঢুকে পড়বে। মাত্র একটা স্বর্ণমুদ্রার বিনিময়ে সেই তিন বাচ্চার রক্ত নেয়া হয়েছিল।
দুঃখজনক হলো- রক্ত নেয়ার ফলে তিনটা বাচ্চাই মারা যায়। কিন্তু পোপ বেঁচে যায়। সবাই ধারনা করেছিল, সেই রক্তের জন্যই পোপ বেঁচে গেছে। পরের বছর পোপ সেকেন্ড স্ট্রোক করে মারা যায় কোনো ঘোষণা ছাড়াই। তারপর থেকে কেউ আর রক্ত দিতে সাহস করেনি।
প্রায় ১৭০ বছর পর ডেনিস নামে এক লোক ভেড়ার রক্ত মানুষের শরীরে প্রবেশ করায়। রি-একশন হয়ে মারা যান সেই ব্যক্তি। এরই মধ্যে উইলিয়াম হার্ভে ক্লোজ সিভিএস সিস্টেম বর্ণনা করে ফেলেন। রক্তের সকল প্রবাহ পরিষ্কার তখন মনুষ্য জগতের কাছে।
১৬৮০ সালের দিকে আইন করে Animal-Human রক্ত দেয়া বন্ধ করা হয়, কারণ সাকসেস হওয়ার কোনো ডকুমেন্ট ছিল না। ধীরে ধীরে মানুষ রক্তের গুণাগুণ জানতে শুরু করে। অবশেষে ১৮১৮ সালে জেমস ব্লান্ডেল নামের একজন চিকিৎসক প্রথম সফলভাবে মানুষ থেকে মানুষে রক্ত সঞ্চালন করেন।
যদিও তিনি তখন ABO এবং Rh group সম্পর্কে জানতেন না । প্রথম রোগী ছিল- এক মা, যার ডেলিভারির পর প্রচণ্ড Post partum Hemorrhage হয়েছিল। নিজের স্বামীর রক্ত দেয়া হয়েছিল।
১৯০১ সালে কার্ল ল্যান্ডিস্টেইনার ABO blood group system আবিষ্কার করেন। এতে করেই রক্তের রং এক হলেও ভিতরে বৈশিষ্ট্য ভিন্ন, সেটা পরিষ্কার হয়ে যায়।
তিনি ১৯৪০ সালে আবার Rh group আবিষ্কার করেন, যা আমরা পজিটিভ নেগেটিভ রক্ত বুঝতে পারি।
১৯২৬ সালে রেড ক্রস প্রথম ব্লাড ট্রান্সফিউশন সার্ভিস চালু করেন ইংল্যান্ডে। ১৯১৪ সালে রক্তের মধ্যে প্রথম এন্টিকোএগুলেন্ট ইউজ করেন হস্টন, যেন রক্ত জমাট না বাঁধে।
১৯৪১ সাল থেকে রক্তদানের জন্য Donor system চালু হয়। ১৯৪৭ সাল থেকে রক্তদানের আগে সিফিলিস
টেস্ট করা শুরু হয়। ১৯৪৯ সালে আমেরিকায় প্রথম ব্লাড ব্যাংক সিস্টেম চালু হয়।
[সূত্র : বিদেশী ওয়েবসাইট অবলম্বনে]
ঢাকা, ২২ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: