Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

টিফিনের টাকায় দরিদ্র মেধাবীদের পাশে শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ৪ অক্টোবার ২০১৮, ০০:৪০

লাইভ প্রতিবেদক: আসলে সমাজ পাল্টাতে খুব বেশি কিছু লাগে না। লাগে শুধু উদার মানসিকতার মন। আমরা প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে সমাজকে পাল্টে দিতে পারি যদি আমরা হয়ে উঠি একটু সচেতন।

শিক্ষার্থীরা চাইলে সমাজকে আমূল বদলে দিতে পারে। শিক্ষার্থীদের একতার শক্তি আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখেছি। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে। এবারও একটি ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর সরকারি মডেল পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী। বিস্তারিত জানাচ্ছেন ফখরুল হাসান-

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর সরকারি মডেল পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে আসছে। তারা অসহায়দের মাঝে বিনামূল্যে শিক্ষাসামগ্রী, স্কুল ড্রেস, নতুন পোশাক ও খাবার বিতরণ করে আসছে। তাছাড়া বাল্যবিবাহ রোধ করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কাজ করছে। সহপাঠীদের নিয়ে মাদকবিরোধী আন্দোলন করে আসছে।

বিনামূল্যে শিক্ষাসামগ্রী, স্কুল ড্রেস, নতুন পোশাক ও খাবার বিতরণ

তারা মূলত এটিকে একটি সংগঠনিক রূপ দিতে ঐক্যবদ্ধ। যে কারণে নাম রাখা হয় ‘শিশুদের হাসি ফাউন্ডেশন’। সেই সংগঠনে তারা ১৫০ জন সদস্য সংগ্রহ করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে। এই ১৫০ জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন টিফিনের টাকা থেকে কিছু টাকা জমা রাখে। তারপর এই টিফিনের টাকা থেকেই অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সহযোগিতা করে। তারা এ কর্মসূচিকে উপজেলায় ছড়িয়ে দিতে চায়। যাতে অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারে।

এ বিষয়ে কথা হয় ‘শিশুদের হাসি ফাউন্ডেশন’র ক্ষুদে প্রতিষ্ঠাতাদের সঙ্গে। তারা শোনায় সংগঠনের শুরুর গল্প: ‘আমরা লক্ষ্য করছিলাম, আমাদের সঙ্গে অনেকেই পড়ে। যারা টাকার অভাবে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারে না। ফলে আমরা আমাদের বন্ধুদের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করি। এতে অনেকে ভিন্ন মত দেখায়। আবার কেউ কেউ রাজি হয়। এরমধ্যে নবম শ্রেণির মাহফুজুল হক ফাহাদ ও জাবির আল হাসান রাজি হয়। আমরা চিন্তা করি যে, প্রতি সপ্তাহে আমরা টিফিনের টাকা থেকে কিছু বাঁচিয়ে কাজ করব। আমরা ৩ জন টাকা জমাতে থাকি। এভাবেই শুরু।’

ওরা বলে, ‘একপর্যায়ে রমজান মাসে সব বন্ধুকে নিয়ে একটি ইফতার মাহফিল করে। সেখানে সবাই খুশি হয়ে কিছু টাকা দেয়। যদিও তা আমাদের জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। এছাড়া আমাদের সঙ্গে সময় দেওয়ার মতো কাউকে পাচ্ছিলাম না। তখন দশম শ্রেণির তীব্র আমাদের সাথে কাজ করতে রাজি হয়। তার সঙ্গে সঙ্গে তাদের কয়েকজন বন্ধু আমাদের সাথে কাজ করতে রাজি হয়। এতে আমরা মোট পনেরো জন একত্রিত হই।’

শিক্ষার্থীরা বলে, ‘আমরা ১৫ জন স্কুলে কালেকশন করি। অবশেষে ৭০ জন অবহেলিত শিশুর হাতে ঈদবস্ত্র তুলে দিতে পারি। পাশাপাশি ৩০টি পরিবারকে সেমাই, তেল, চিনি, নুডলস, দুধ এবং সাবান দেই। তারপর আমরা আমাদের সদস্য বাড়াতে থাকি। এখন আমরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাসামগ্রী দিয়ে সহায়তা করে থাকি।’

বিনামূল্যে শিক্ষাসামগ্রী, স্কুল ড্রেস, নতুন পোশাক ও খাবার বিতরণ

 

ক্ষুদে উদ্যোক্তারা বলে, ‘আমরা ১৮ বছরের নিচে যারা, তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করি। ঝরে পড়া ছাত্রদেরকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে লেখাপড়ায় উৎসাহিত করি। অসহায় শিশুদেরকে বিনোদনের মাধ্যমে হাসিমুখে স্কুলে ফেরাতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করি। আমরা চাই হোসেনপুর উপজেলার প্রতিটি স্কুল এমন কাজ করুক।’

 

ঢাকা, ০৩ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ