লাইভ প্রতিবেদক : সফলতার পেছনে সবাই ছুটে বেড়ায়। সফলতার সংজ্ঞা বলতে আসলে কী বোঝায়। অনেকেই ভালো রেজাল্টকে সফলতার মূলমন্ত্র বলে ধরে নেয়। কিন্তু বাস্তবে কী তাই। ভালো রেজাল্ট নিয়ে আপনি হয়তো যে অফিসে জয়েন্ট করলেন সেখানে সেই ব্যাকবেঞ্চার ছেলেটা বস হয়ে বসে আছেন। যে ছেলেটা ক্লাসের কারো সঙ্গে মিশতে পারতো না সেই হয়তো এখন সবাইকে মোটিভেশন দিয়ে বেড়ায়। বিশ্বের সবচেয়ে সফল ও ধনী মানুষ সম্পর্কে জানতে গেলেই দেখা যায়, তাদের অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করেননি, অনেকেই ভালো ফলাফল করা ছাত্র ছিলেন না। তাহলে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এত বড় বড় কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশেও এমন অনেক সফল ব্যক্তি রয়েছেন যারা একাডেমিকলি ভালো না হলেও সফলতার শিখরে রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিটা আসল নয়, কে কতটা জানে সেটাই আসল। জ্ঞানের পরিমাপ রেজাল্ট দিয়ে হয় না। এটা হয়তো আপনার জানা নেই। ব্যাকবেঞ্চারদের আমরা হয়তো অন্য চোখে দেখে থাকি। তবে এটা হয়তো জানিনা তাদের অনেকেই প্রচলিত শিক্ষার দিকে নয় সফলতাই তাদের মূলমন্ত্র। বলছি না ব্যাকবেঞ্চারদের সবাই সফল, তবে তাদের মধ্যে অনেকেই ভালো রেজাল্টধারীদের চেয়ে সফল। একটু তাকিয়ে দেখুন, চোখ খুলে দেখুন। অনুভব করুন। সফলতা যেভাবেই আসুক অনেকেই জানি না কী কারণে অনেক সময় ব্যাকবেঞ্চাররাও সফলতার পথে হাঁটেন। চলুন জেনে নেই ব্যাকবেঞ্চাররা যেকারণে সফল হয়ে থাকে :
>>> ব্যাকবেঞ্চার যেসব শিক্ষার্থী সফর তাদের অনেকেই উন্নতির দিকে নজর দেন। তারা অনুকরণের বদলে তারা সফলদের অনুসরণ করেন। নিজেদের যৌক্তিক ইচ্ছাকেই বেশি গুরুত্ব দেন তারা। অন্যরা যখন শুধু ডিগ্রির পেছনে ছোটেন তখন তাদের যাত্রা প্রধানত নিজস্ব লক্ষ্যের দিকে। কাজের জন্য তারা একাডেমিক ব্যর্থতাকে সহজেই মেনে নেন। তারা আপাতভাবে ব্যর্থ হলেও চূড়ান্ত সফলতা তাদের হাতেই।
>>> ব্যাকবেঞ্চার রা পরাধীনতার চার দেয়ালে বন্দি হতে চায় না। তারা মুক্ত। প্রচলিত একাডেমিক শিক্ষার চারদেয়ালে বন্দি না হয়ে এর সুফলগুলো নিয়ে ভাবেন। প্রচলিত ধারার সমস্যাগুলো নিয়ে চিন্তা করেন তারা। তারা জানেন শিক্ষার শুধু এই একটিই পথ নয়, আরও অসংখ্য উপায়ে প্রাজ্ঞ হওয়া যায়। এই ধারার বাইরে থেকেও উন্নত হওয়া যায়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাদের কাছে শিক্ষার একটি উপায় মাত্র, সবকিছু নয়। তাই তারা একে চ্যালেঞ্জ করতে ভয় পান না।
>>> ব্যাকবেঞ্চাররা নিজের স্বপ্নের জন্য বেশি সময় ব্যয় করে। তারা দৃষ্টি ও চিন্তাকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের প্রতি কেন্দ্রীভূত করতে শেখে। অনেকেই পড়াশোনা শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা না করেই পছন্দের কাজে লেগে যায়। ফটোগ্রাফি, লেখালেখি, চিত্রকলা, ব্যবসা ইত্যাদি বিষয়ে যারা স্বপ্ন দেখে চলেছে, খেয়াল করলে দেখবেন- যতটা সময় তারা তাদের স্বপ্নের পেছনে দিচ্ছে ততটা সময় একাডেমিক কাজে দেয় না। তাদের কাছে নিজের স্বপ্নের গুরুত্ব অনেক বেশি। একাডেমিক পড়াশুনার ছোট্ট গন্ডি ছাড়িয়ে তাদের দৃষ্টি অনেক বেশি প্রসারিত।
>>> প্রথম ও মধ্যম সারির ছাত্ররা তাদের অর্জিত সার্টিফিকেট দিয়ে সাফল্যের চেষ্টায় থাকে। কিন্তু ব্যাকবেঞ্চার ছাত্ররা এসব নিয়ে মাথা ঘামান না। তাদের সাফল্যের সংজ্ঞাই আলাদা। তারা সার্টিফিকেট নির্ভর সফলতায় বিশ্বাসী নয়, তারা কাজে বিশ্বাসী।
>>> ব্যর্থতা একটি অসাধারণ শিক্ষক। যে ব্যর্থ হয় না, সে সত্যিকার অর্থে তেমন কিছুই শেখে না। ব্যাকবেঞ্চাররা কোন কাজ নিঁখুতভাবে করার চেয়ে সেই কাজটি দ্রুত শেষ করতে বেশি আগ্রহী। তাই তারা দ্রুত কাজে নেমে দ্রুত সফলতা পায়।
>>> একটু খেয়াল করে দেখবেন ব্যাকবেঞ্চাররা কখনোই কাউকে অপ্রয়োজনীয় ভাবে না। কাউকেই অবহেলার দৃষ্টিতে দেখতে চায় না। কারণ কখন কাকে প্রয়োজন হবে তা তাদের জানা নেই। তাদের বন্ধু-বান্ধবেরও অভাব নেই। তারা মানুষের সঙ্গে সময় ব্যয় করতে বেশি পছন্দ করেন। এতে তার সফলতার ক্ষেত্র বেড়ে যায়।
>>> ব্যাকবেঞ্চাররা অনুসন্ধান করতে পছন্দ করেন। তাদের শেখার উদ্দেশ্য আত্মোন্নতি, খেলার ছলে, স্বপ্নের পথে সহজ স্বাভাবিক তাদের শিখন পদ্ধতি। খেলার ছলেই শিক্ষা নয় অর্জিত জ্ঞান নিয়ে মাতামাতি তাদের।
[বি: দ্র : উপরের লেখাটি আসলে ব্যাকবেঞ্চারদের উদ্দেশ্য করেই লেখা হয়েছে। তার মানে এই নয় ভালো ফলাফলধারী শিক্ষার্থীরা সফল নয়। তাদের সফলতাটাই আমরা বেশি চোখে দেখি। এটা কখন খতিয়ে দেখি না ব্যাকবেঞ্চার সেই ছেলেটা কিভাবে কোন গুণের বারণে সফলতার পথে পা বাড়িয়েছেন।]
ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: