Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সুনাম ক্ষুন্ন করছে পার্থর কর্মীরা!

প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০১৭, ০৯:২৭

লাইভ প্রতিবেদক : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িতরাই বেশি অস্থিরতা তৈরি করছে। শাবিতে ঘুরেফিরেই তাদের নাম চলে আসছে। বিচার না করায় এঘটনা আরো বাড়ছে। শাবি ক্যাম্পাসে বখাটের ভূমিকায় থাকা ওই যৌন নিপীড়কদের প্রশ্রয় দেন খোদ সদ্য বিলুপ্ত শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ। ক্যাম্পাসের বেশ কয়েকটি আলোচিত যৌন হয়রানির সঙ্গে তার গ্রুপের কর্মীরাই জড়িত বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

শাবি ক্যাম্পাসে বাইরে থেকে ঘুরতে আসলে ওইসব বখাটেদে কবলে পড়তে হয় ছাত্রীদের। বিশেষ করে বহিরাগত হলে যেন হামলে পড়ে কতিপয় বখাটেরা।

ছবি : বাঁ থেকে রাহাত, উপরে রুদ্র, নজরুল, সাজ্জাদ, নিচে অমিও এবং ঝুটন

শাবি ছাত্রলীগের কর্মীদের একটি অংশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন স্থানে ওঁৎ পেতে থাকেন। বিশেষ করে শহীদ মিনার, ইউসি ভবনসহ টিলার আশেপাশে ঘুরতে আসা শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ সময় হয়রানির শিকার হয়।

এসব অপকর্মে কেউ ধরা খেলে তাদের বিচার না করে বরং প্রশ্রয় দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ছাত্রলীগের তকমা লাগিয়ে প্রথম বর্ষ থেকেই নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে কতিপয় ছাত্র।

যৌন হয়রানি, ছিনতাই, মাদকসেবনসহ নানা অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়ে তারা। ছাত্রলীগের তকমা থাকায় তাদের ওই অপকর্ম বাড়তে থাকে। তাদের হাতে প্রতিনিয়ত নাজেহাল হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা শিক্ষার্থীসহ পর্যটকরা। এদের মধ্যে কেউ মুখ খুলেন। আবার অনেকেই মুখ বুঝে সহ্য করে চলে যান। এতে শাবির সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে সচেতন ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তারা মনে করছেন।

সর্বশেষ গত শনিবার শাবিতে ঘুরতে এসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দেয়া এক ছাত্রী। ওই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক নেতা। এঘটনায় ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, শনিবার মাহমুদুল হাসান রুদ্র নামে পার্থ গ্রুপের এক ছাত্রলীগ কর্মী ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেন। এসময় ওই ছাত্রীর মুখে ধোঁয়া ছাড়া হয়। এর প্রতিবাদ করায় ওই ছাত্রীর গালে সরাসরি চড়ও বসিয়ে দেয় ওই বখাটে ছাত্র। এসময় সাজ্জাদ রিয়াদসহ বেশ কয়েকজন সেখানে ওউ ছাত্রীকে নিয়ে নানা আপত্তিকর মন্তব্য করেন। পরে সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থও যৌন হয়রানির ঘটনাটিকে সমর্থন দেন। ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের তোলা ছবিও ডিলিট করে দেন পার্থ।

এসব ঘটনার প্রতিবাদ করায় পার্থর নির্দেশেই শাবি প্রেসলক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সরদার আব্বাস ও সহ-সভাপতি নবীউল আলম দিপুর ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় সমাজকর্ম বিভাগের মাহমুদুল হাসান রুদ্র, পরিসংখ্যান বিভাগের সাজ্জাদ রিয়াদ, লোক প্রশাসন বিভাগের অনিরুদ্ধ দেব রায় অমিয়, নৃবিজ্ঞান বিভাগের রাহাত সিদ্দীকি, গণিত বিভাগের নজরুল ইসলাম রাকিবসহ আরো বেশ কয়েকজন। এদের মধ্যে কয়েকজন এর আগে যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। নজরুল ইসলাম রাকিব যৌন হয়রানির দায়ে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও রাহাতের বিরুদ্ধে এক সিনিয়র ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেন। বিচার না হওয়ায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এর বাইরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার পর বিলুপ্ত শাবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মৃন্ময় দাশ ঝুটন সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছেন। আন্দোলনরত সাংবাদিকরা তারও বহিষ্কার দাবি করেছেন। যদিও এব্যাপারে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ জানিয়েছেন যারা ফেইসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সাংবাদিকদের হুমকি দিচ্ছে তাদেরও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হবে।


এদিকে শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থসহ ৩ জনের নামে বুধবার নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালে মামল করেছেন ভিকটিম ছাত্রীর মা। মামলায় অপর আসামিরা হল মাহমুদুল হাসান রুদ্র ও সাজ্জাদ রিয়াদ।

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শাবি ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি। সব মিলিয়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে শাবিতে বর্তমানে অস্থিরতা শুরু হয়েছে।



ঢাকা, ১৩ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ