করোনাভাইরাসের ভ্যাক্সিন দেবার কর্মসূচি বাংলাদেশে শুরু হয়েছে গত বুধবার থেকে। কিন্তু ভ্যাক্সিন নিয়ে সংশয়, সন্দেহ আর বিতর্ক যেন যাচ্ছে না। একই সাথে ভ্যাক্সিন নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের মন্তব্য এই বিতর্ককে আরও উস্কে দিয়েছে। ঠিক এই মূহুর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা ভ্যাক্সিন গ্রহণ নিয়ে কী ভাবছেন তা জানতে চেয়েছেন ক্যাম্পাসলাইভ২৪ এর ঢাবি প্রতিনিধি মিজানুর রহমান।
উমামা ফাতেমা, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগ:
বাংলাদেশে কিছুদিন আগে ভ্যাক্সিন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আবার এই ভ্যাক্সিনকে ঘিরে নানান গুজবও ফেসবুকে প্রচার হচ্ছে। অনেকে বলছে বাংলাদেশের মানুষের উপর ভ্যাক্সিনের ট্রায়াল চালানো হচ্ছে। কেওবা বলছে ভ্যাক্সিন দিলেও করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় না। এই এন্টি-ভ্যাক্সিন মুভমেন্টের আজগুবি অনেক যুক্তিও ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই ভ্যাক্সিন নিব কিনা এই ব্যাপারে আমরা অনেকেই সিদ্ধান্ত হীনতায় ভুগছি। তবে যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করে বুঝলাম ভ্যাক্সিন নেয়াটাই এ মুহূর্তে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। প্রাণরসায়নের ছাত্রী হিসেবে ভ্যাক্সিন তৈরি ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিষয়ে পূর্বধারণা আছে।
এই ভিত্তিতে আমার যুক্তি হচ্ছে-
১) পৃথিবীতে ২০০২ সালে প্রথম করোনার সংক্রমণের পর থেকে এই ভাইরাসের ভ্যাক্সিন নিয়ে কাজ চলছে। কোভিড-১৯ আগের করোনা ভাইরাসগুলোর একটি উন্নততর সংস্করণ। তাই বলতেই হবে করোনা ভাইরাসের ভ্যাক্সিনটি কয়েক মাসে তৈরি হয়নি, বরং বিজ্ঞানীদের ২০ বছরের গবেষণার ফসল।
২) ভ্যাক্সিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পেরোনোর জন্য ধাপে ধাপে মানুষের উপর ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়। তাই অনুমোদন পাওয়ার আগেই ভাইরাসটিকে কয়েক হাজার মানুষের উপর বিভিন্ন মাত্রায় প্রয়োগ করে তার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হয়েছে। এ সকল ধাপে যদি ভ্যাক্সিনটি বিফল হতো তাহলে তাকে অনুমোদন দেয়ার প্রশ্নই আসত না। বিশেষ করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাক্সিনটির দিকে পুরো পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের নজরদারি ছিল। শুধুমাত্র ব্যবসায়িক লাভের জন্য কার্যকারিতা প্রমাণ ছাড়াই ভ্যাক্সিন অনুমোদন দেয়া কখনোই সম্ভব হতো না। তাই বাংলাদেশের মানুষের উপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করার প্রশ্নই আসে না। কারণ ভ্যাক্সিনটি ইতোমধ্যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পার করেই এসেছে।
৩) কোভিশিল্ড ভ্যাক্সিনটি দুই ধাপে মানুষকে দেয়া হবে। তাই প্রথম ধাপে তা পুরোপুরি প্রটেকশন দিতে পারবে না। ২য় ধাপে তা আপনাকে করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে পারবে। হ্যাঁ, এর পরও করোনা আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থেকেই যায়। কারণ ভ্যাক্সিনটি শতভাগ কার্যকর না। কিন্তু গবেষণাতেই দেখা গেছে, ভ্যাক্সিন না দিলে মৃত্যুর আশংকা আরো বহুগুণ বেশি।
এই সকল যুক্তি চিন্তা করে আমি আমার পরিবার, আত্নীয় স্বজনদের মধ্যে সিনিয়র সিটিজেনদের ভ্যাক্সিন নিতে উৎসাহিত করছি। আমার ভ্যাক্সিন নেয়ার সুযোগ হলে অবশ্যই নিতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল ছাত্র ছাত্রীরাও ভ্যাক্সিন বিষয়ে আশপাশের মানুষদের সচেতনত করবে বলে আশা রাখি। এছাড়া, ভ্যাক্সিন-বৈষম্য যাতে না হয় সে বিষয়ে সরকারকে খেয়াল রাখার অনুরোধ জানাই।
সামসুল আরেফিন সেজান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ:
করোনাকালীন সময়ের শুরু হতেই সরকার সকল ধরণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং সর্বশেষ ভ্যাক্সিন আমদানির মধ্য দিয়ে সরকার সাফল্যের অন্যতম মাইলফলক স্পর্শ করেছে । একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় দায়বদ্ধতা হবে ভ্যাক্সিন গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা একদম প্রান্তিকপর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়া। ইতোমধ্যেই ভ্যাক্সিন গ্রহণ নিয়ে যে ধারণাগত জটিলতা তৈরি হয়েছে তা নিরসরন করতে সরাসরি জনমতসৃষ্টি করা একান্তভাবেই প্রয়োজন।
কোভিড-১৯ আবির্ভাবের সময় হতেই দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা সমগ্র দেশজুড়ে নানাবিধ স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে জড়িত ছিল, এইমুহূর্তে তাদের সবচেয়ে বড় দায়বদ্ধতা ভ্যাক্সিন গ্রহণ করার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা এবং একই সাথে ভ্যাক্সিন বিতরণের রাষ্ট্রীয় এই কার্যক্রমে রাষ্ট্রযন্ত্রকে সহায়তা করা। একই সাথে দেশের শিক্ষিত নাগরিক সমাজের অংশ হিসেবে আমাদের অন্যতম দায়বদ্ধতা হবে ভ্যাক্সিন গ্রহণ এবং বিতরণ সংশ্লিষ্ট সকল ধরণের অপরাজনীতি এবং তথ্য বিভ্রাটকে প্রতিরোধ করা এবং বিজ্ঞান ভিত্তিক আলোকপাতের মাধ্যমে সকল ধরণের ভুল ধারণা দূর করা।
মেহেদী হাসান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান:
গত একবছর যাবত বিশ্বব্যাপী চলমান কোভিড-১৯ মহামারীর প্রকোপ থেকে রেহাই দেয়ার সুবাতাস নিয়ে এসেছে কোভিড ভ্যাকসিন। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশসহ অল্প কয়েকটি রাষ্ট্র কোভিড ভ্যাকসিন আমদানি ও প্রয়োগের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স্বাভাবিক ভাবেই জনমনে উৎকণ্ঠা আর আগ্রহের কেন্দ্রে অবস্থান করছে কোভিড ভ্যাক্সিন।
ভ্যাক্সিন প্রয়োগ শুরু হলেও মানুষ ভ্যাক্সিন গ্রহণে যথেষ্ট আগ্রহী এবং ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতায় বিশ্বাসী তা বলা যায় না। টিকা আমদানি করার ক্ষেত্রে টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যাচাই না করায় জনমনে এখনও বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। ভারত বায়োটেক এবং সিরাম ইন্সিটিউটের মধ্যে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে পরষ্পর বিদ্বেষী মন্তব্য আমাদের দেশেও টিকা-বিরোধী বিরূপ ধারণা প্রসার করছে। তাছাড়া অন্যান্য দেশের টিকার প্রথম গ্রহীতা হিসেবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের দেখা গেলেও বাংলাদেশে তা দেখা যায় নি, যদিও পরে একজন প্রতিমন্ত্রী টিকা নিয়েছেন। তবে তা মানুষের মনে সংশয় দূর করার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারেনি। তাই জনমনে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পরষ্পর বিরোধী মতবাদ, রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশে হওয়া অনিয়ম, জনগণের সাথে একের পর এক প্রতারণার খবর ফাঁস হওয়া, কোভিডের ব্যাপারে বিভিন্ন ভুয়া নিউজ উপস্থাপন এবং অতীতে কোভিড মোকাবিলায় সরকারিভাবে নকল কীট ক্রয় ও জনগণের মধ্যে বিতরন, এসব বিষয় জনগণের মধ্যে সংশয় উদ্রেকের জন্য দায়ী। আর এর জন্য দায়ী সরকার ও সরকারি দলের নেতৃবৃন্দ এবং লেজুড়বৃত্তিক প্রশাসন।
এগুলো থেকেই সরকারের প্রতি যে অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে জনগণের তা থেকে উত্তরণের পথ সরকারকে খুজতে হবে। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকা প্রদানের পূর্ণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা আছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে যাদের টিকা দেয়া হয়েছে তাদের উপর টিকার প্রভাব কি রকম হয়, সরকারের সঠিক প্রচারণার এবং জনগণের মধ্যে টিকার সুষম বন্টনের উপর নির্ভর করছে মানুষ টিকা নিতে কতটা আগ্রহী হবে।
মুহাম্মদ তাওহীদুল ইসলাম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ:
করোনার প্রকোপের কারণে গতবছরের মার্চের মধ্যভাগ থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের প্রাণোচ্ছল দেশ একরকম স্থবির হয়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বন্ধুদের ছেড়ে প্রায় সকলেই একরকম একাকী, অবসাদগ্রস্ত জীবনই পার করে যাচ্ছে। এর উপর নিয়মিত আশেপাশের মানুষদের আক্রান্তের এবং মৃত্যুর সংবাদ মানসিকভাবে পীড়া দিয়ে যাচ্ছে। এমন দুর্বিষহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন ছিলো দ্রুত ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম শুরু করা।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক-এর 'বঙ্গভ্যাক্স' ভ্যাক্সিনের যেহেতু এখনও ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পূর্ণ হয়নি, তাই বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত এস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির 'কোভিশিল্ড' ভ্যাক্সিন ক্রয়ের বিষয়টি জনমনে বেশ আশা জাগিয়েছে।
ভ্যাক্সিনটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ৯০% কার্যকরী এবং দামের ক্ষেত্রে 'ফাইজার' ও 'মডার্না' ভ্যাক্সিনের চেয়ে অনেক কমদামী হওয়ায় ইতোমধ্যেই দেশের সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জন করে নিয়েছে।
অধিকন্তু, ভ্যাক্সিন দেশে আসার পর প্রথম দুই দিন পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। রনু ভেরোনিকা কস্তা নামের এক নারীকে ভ্যাক্সিন পুশ করার মাধ্যমে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য সহ ৫৬৭ জন এই কার্যক্রমে অংশ নেয়। ভ্যাক্সিনটির কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকায় সকলেই ভ্যাক্সিন নিয়ে পরিপূর্ণ সুস্থ রয়েছেন। যা আগামী ৭ই ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হতে যাওয়া দেশব্যাপী ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রমে জনগণের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণের জন্য সাহস জোগাবে।
তবে শুরুতে এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল ভ্যাক্সিন নিয়ে নানারকমের অপপ্রচার চালালেও তারাও এখন ভ্যাক্সিন নিতে আগ্রহী হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমি মনে করি, দেশের এমন ক্রান্তিলগ্নে ভ্যাক্সিনের মত একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে অজ্ঞতাবশত বা ঈর্ষান্বিত হয়ে কোন অপপ্রচার বা গুজব ছড়ানো একজন দায়িত্বশীল নাগরিকের জন্য অশোভনীয়। তাই প্রত্যেক নাগরিকের উচিত নিজ নিজ যায়গা থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করা।
সরকারের পর্যবেক্ষণে এবং জনগণের সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আমাদের সোনার বাংলা আবারও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে। সেই প্রত্যাশা নিয়েই দিন গুনে যাচ্ছি।
আশিক অমি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ:
সম্প্রতি অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকা ‘কোভিশিল্ড’ বাংলাদেশের জনমানুষের জন্য অনুমোদন দেয়া হয় বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মাধ্যমে। কোভিশিল্ড টিকাটির সফলভাবে ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে ইংল্যান্ড, ব্রাজিল, ভারতসহ বেশ কিছু দেশে। অপর দিকে ফাইজার ও মডার্নার টিকার থেকে অক্সফোর্ড টিকাটির সফলতার হার অনেকাংশেই বেশি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট ও ব্রিটিশ কোম্পানি স্ট্রোজেনেকা অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিনটি উৎপাদন করছে এবং বাংলাদেশ ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে ভ্যাকসিনটি নিচ্ছে।
বিজ্ঞানসম্মতভাবে বিবেচনা করলে ভ্যাকসিন নিয়ে কূটনৈতিক মানদণ্ড দিয়ে বিচার না করে যদি আমরা এই ভ্যাকসিনটির সঠিকভাবে বন্টন ও জনগণকে কিভাবে এই ভ্যাকসিনের মাধ্যমে কোভিড মহামারী থেকে মুক্তি দেয়া যায় সেদিকটিতে আলোকপাত করি তাহলে আমার মনে হয় এটি আমাদের জন্য কল্যাণকর হবে। তবে অনেকেই এই ভ্যাকসিন নিয়ে বিভ্রান্তিতে রয়েছেন।
একবিংশ শতাব্দীতে এসে বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা প্রক্রিয়ার উপর আমাদের আস্থা ও এর পাশাপাশি এটির সম্পর্কে সঠিক তথ্য উপাত্ত সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করলেই কেবল এ থেকে নির্গত বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব। আমি মনে করি, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনই আমাদের করোনা ভাইরাস মহামারীর যে নিমজ্জিত ঘনঘটা সেটা কাটিয়ে নতুন দিগন্তের প্রভা নিয়ে আসবে।
আব্দুল্লাহ হিল বাকি, মনোবিজ্ঞান বিভাগ
করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে নানা জল্পনা কল্পনা চলতেছে। বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে যে টিকা দেশে আনা হয়েছে সেটার প্রতি অনেকেই পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারতেছে না, অন্যান্য দেশের তুলনায় টিকার দামও বেশি ধার্য করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হেলথ ইকোনোমিকস ইনস্টিটিউটের করা একটি জরিপে উঠে এসেছে, এই মুহূর্তে দেশের ৩২% মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী, বাকিরা পরে সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানিয়েছেন।
টিকা নেয়ার চেয়েও বড় প্রশ্ন হলো অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে যাদেরকে টিকা প্রদান করা হবে তাদের মধ্যে শিক্ষার্থীরা অনেক পিছনের সারিতে। সুতরাং এই মুহূর্তে চাইলেও শিক্ষার্থীরা টিকা পেতে বেগ পোহাতে হবে। আর ব্যক্তিগতভাবে আমি টিকা নিতে এখন আগ্রহী না। কারণ দেশের গবেষকদের মতে ইতিমধ্যেই মানুষের মাঝে এন্টি ভাইরাস ও হার্ড ইমিউনিটি যথেষ্ট পরিমাণে তৈরী হয়েছে।
কম্যুনিটি ট্রান্সমিশনও অনেকটাই কমে এসেছে। তবে শিক্ষার্থীদেরকেও টিকা প্রদানে অগ্রাধিকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে রাখা উচিত বলে আমি মনে করি। কারণ টিকা আসতে বিলম্ব করার কারণেই শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা জীবন থেকে বিশাল একটা সময় দূরে থেকেছে এবং একাডেমিক ইমপ্রুভমেন্ট থেকে অনেক পিছিয়ে গেছে।
ঢাকা, ০১ ফেব্রুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: