Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ৭ই মে ২০২৪, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

এসএসসিতে প্রশ্নফাঁস : বাতিল হতে পারে অর্ধলাখ শিক্ষার্থীর ফল!

প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০১৮, ০৯:৩১

লাইভ প্রতিবেদক : এসএসসি পরীক্ষায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দেয়ার সুবিধা নেয়ার অভিযোগে অর্ধলাখ শিক্ষার্থীকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তাদের ব্যাপারে নানাভাবে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। প্রশ্নফাঁসে তাদের সম্পৃক্ততা পেলে পরীক্ষার ফল বাতিল হতে পারে। পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে গঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটির প্রতিবেদন সোমবার মাধ্যমিক ও শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ফাঁস প্রশ্নের সুযোগ নেয়া শিক্ষার্থীদের ফল বাতিলসহ চারটি সুপারিশ করা হয়েছে।

মাধ্যমিক ও শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন জানান, ফাঁস হওয়া প্রশ্নে যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে তাদের ফল আমরা প্রকাশ করব না। ফল স্থগিত থাকবে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনে বাতিল করব। প্রাথমিক তদন্তে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পরই তাদের ফল বাতিল করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনটি উপায়ে ফাঁস প্রশ্নের সুবিধাভোগী শিক্ষার্থী চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

এক : পরীক্ষার দিন ও এর আগের দিন বিকাশ এবং রকেটসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যারা অর্থ লেনদেন করেছে। সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা লেনদেনকারী গ্রাহকের তথ্য নেবে মন্ত্রণালয়। এরপর ওইসব গ্রাহকের পরিবারে কোনো এসএসসি পরীক্ষার্থী আছে কিনা তা চিহ্নিত করা।

দুই : ফেসবুকের যেসব ক্লোজ গ্রুপে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে সেইসব গ্রুপের সদস্য চিহ্নিত করা।

তিন : গ্রেফতার ও বহিষ্কৃত ব্যক্তি, শিক্ষক-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব জানান, শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) মূল সহায়তা দিচ্ছে। তারা প্রযুক্তিগত তদন্ত চালাচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনও (বিটিআরসি) সহায়তা করছে।

এদিকে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে গঠিত মন্ত্রণালয়ের কমিটির প্রতিবেদন সোমবার বিকালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কমিটির সদস্য সচিব আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন কমিটির পক্ষে প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।

৮ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে চারটি সুপারিশ করা হয়েছে।
এগুলো হল-
এক : ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে তাদের ফলাফল বাতিল করা। এক্ষেত্রে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর পাস করা কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধেও যদি ফাঁস প্রশ্নে পরীক্ষা দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তার ফল বাতিল হবে। পাশাপাশি এসব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া।

দুই : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে প্রশ্নপত্র নেয়ার দায়ে যারা বহিষ্কৃত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া।

তিন : ফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাদের সঙ্গে যেসব পরীক্ষার্থীর লিঙ্ক ছিল তাদের চিহ্নিত করে ফল বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া।

চার : কমিটি প্রশ্ন ফাঁসের কারণে কোনো পরীক্ষা বাতিলের পক্ষে নয়। কেননা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উন্মুক্তভাবে প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। কাছাকাছি কিছু লোকের মধ্যে (ক্লোজ গ্রুপ) প্রশ্ন শেয়ার হয়। ফলে পরীক্ষার আগ মুহূর্তে অতি নগণ্যসংখ্যক পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ২০ লাখ সাধারণ পরীক্ষার্থীর হাতে প্রশ্ন পৌঁছায়নি। যারা আগ মুহূর্তে সঠিক বা ভুয়া প্রশ্ন পেয়েছে তারা ওই সময় পরীক্ষা কেন্দ্রের পথে বা কেন্দ্রের সামনে ছিল। এ সময় প্রশ্ন পেয়ে থাকলেও তারা তেমন লাভবান হতে পারেনি। এ কারণে পরীক্ষা বাতিল করা সমীচীন হবে না।

এদিকে ২ এপ্রিল থেকে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস রোধে ৮টি পদক্ষেপ নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই সব পদক্ষেপ যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাঠপ্রশাসনের সহায়তা চেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব। এছাড়া ১৯ মার্চ ৮ বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক ডাকা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। শুরুর দিন থেকে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠলে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

ঢাকা, ১৩ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ