
লাইভ প্রতিনিধি: বাড়িতে বাবার মরদেহ। পরীক্ষার সময় কেবলই বয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখেই চলে গেলেন পরীক্ষা কেন্দ্রে। বাবার মৃত্যুও তাকে আটকাতে পারেনি। এটাই যে জীবন! জীবন মানেই ত্যাগ। আর সেই ত্যাগ শুরু হল বাবার মৃত্যু দিয়ে। বলছি ফরিদপুরের নগরকান্দার এসএসসি পরীক্ষার্থী রানা শেখ (১৬) এর কথা।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় কৃষি শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা দেয় সে। রানা জুঙ্গুরদি গ্রামের মজিবর শেখের (৪৬) ছেলে। সে নগরকান্দা সরকারি মহেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) একাডেমি থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার দিনগত রাতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান রানার বাবা মজিব শেখ। সকালে রানার কৃষি শিক্ষা পরীক্ষা ছিল। তার বাবার মৃত্যুর খবর শুনে সকালেই রানার কয়েকজন সহপাঠী তার বাড়িতে যায়। রানার অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সহপাঠীরা সান্ত্বনা দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যায় তাকে।
নগরকান্দার শহিদ মুক্তিযোদ্ধা আক্রামুন্নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয় সে। রানা বাড়িতে ফিরলেই বিকেলে তার বাবা মজিবর শেখের দাফন সম্পন্ন হবে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।
রানার স্কুল সরকারি এম এন একাডেমির প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেন মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, সকালেই রানার বাবার মৃত্যুর খবর শুনেছি। এটি খুবই কষ্টদায়ক, কিন্তু সবাইকেই একদিন চলে যেতে হবে। আমরা সবাই রানার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তার মনমানসিকতা ভালো রাখতে ও ভালোভাবে পরীক্ষা শেষ করতে তার খোঁজ নিচ্ছি।
রানার আত্মীয় মিজানুর রহমান বলেন, ‘মজিব শেখ সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার দিনগত রাতে তিনি পরলোক গমন করেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে রানা সবার ছোট। বড় ভাই হৃদয় শেখ বেকার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে দিশেহারা পরিবার।
পরীক্ষা সহ-কেন্দ্র সচিব মো. মাহাবুব আলী মিঞা গণমাধ্যমকে বলেন, যথাসময়ে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে রানা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বাবা মারা যাওয়ায় সে অনেকটা ভেঙে পড়েছিল। পরীক্ষা চলাকালে আমরা সার্বক্ষণিক তার খোঁজ নিয়েছি।
ঢাকা, ২৫ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: