লাইভ প্রতিবেদক : সারাদেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে কাল সোমবার। পরীক্ষার্থীদের সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে নিজ নিজ কেন্দ্রে পৌঁছে আসন গ্রহণ করতে হবে বলে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দেরিতে পরীক্ষার হলে পৌঁছানো শিক্ষার্থীদের সন্দেহজনক তালিকায় রাখা হবে। দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছানো শিক্ষার্থীদের তথ্য এবারই প্রথমবারের মতো তালিকাভুক্ত করা হবে। প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা বিধান, প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো এবং কোনো ধরনের গুজব যেন পরীক্ষার্থীদের প্রভাবিত করতে না পারে এজন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কারণ ওই আধঘন্টায় সামাজিক মাধ্যম থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে কতিপয় শিক্ষার্থী। কোনো পরীক্ষার্থী সময়মতো কেন্দ্রে প্রবেশ না করলে তাকে পরীক্ষা শুরুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত ঢুকতে দেওয়া হবে। তবে ওই পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্র সচিবের কাছে রাখা রেজিস্ট্রার খাতায় নাম, প্রতিষ্ঠান, রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর, নিজ ঠিকানা বিশদ লিপিবদ্ধ করে ঢুকতে হবে। কেন্দ্র সচিব এ তথ্য স্থানীয় থানা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন। এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি সভায় প্রথমবারের মতো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে পরীক্ষা চলাকালে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কোনো সন্দেহভাজন লেনদেন করা হলে তা সঙ্গে সঙ্গে সংশ্নিষ্ট এজেন্টকে স্থানীয় থানায় জানাতে হবে। পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সঙ্গে সঙ্গে তা তদন্ত করবেন। এ বিষয়ে আজ রোববার একটি নির্দেশনা জারির কথা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এসংক্রান্ত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পুলিশ, র্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরাও সভায় অংশ নেন।
সূত্র জানায়, পরীক্ষার্থীদের নজরদারির পাশাপাশি প্রশ্নের নিরাপত্তায় এবার সর্বোচ্চ কড়াকড়ি করবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জেলা ট্রেজারি থেকে ম্যাজিস্ট্রেটের পাহারায় কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে প্রশ্নপত্র। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, কেন্দ্র সচিব ও পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতি ও স্বাক্ষরে বিধি অনুযায়ী প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে। এসব দায়িত্ব যথাযথ পালনে কেন্দ্র সচিবদের এরই মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। পরীক্ষা কেন্দ্রে একমাত্র কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস যাতে ব্যবহার করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। কেন্দ্র সচিব মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারলেও তা কোনো স্মার্টফোন হতে পারবে না। শিক্ষার্থীরা যাতে নকল করতে না পারে সে জন্য কেন্দ্র সচিবদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র সচিবরাও নিজ নিজ কেন্দ্রে পরীক্ষা-সংশ্নিষ্টদের যথাযথ নির্দেশনা দিয়েছেন।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়েছে। উত্তরপত্রও কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে আনুষঙ্গিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। পরীক্ষার দিন সকালে লটারি করে কোন সেট প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করা হবে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে জেলা প্রশাসকদের নির্ধারিত সেট জানিয়ে দেওয়া হবে। তিনি কেন্দ্র সচিবদের জানিয়ে দেবেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে কোথায় বসে সেট নির্ধারণের কেন্দ্রীয় লটারি করা হবে, তা এবার গোপন রাখা হয়েছে।
ঢাকা, ০৪ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: