লাইভ প্রতিবেদক: প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় শিক্ষকদের দায়িত্ব পালনের বিধি-বিধান অমান্য করে বেশ কিছু শিক্ষক কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করাতে শুরু হয় নানা রকমের আলোচনা সমালোচনা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাহিদা হাবিবা বিষয়টি অবগত হওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেন।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে ১০ শিক্ষককে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তথ্য গোপন রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের অভিযোগে গতকাল থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
তাদের মধ্যে ৫ জন প্রধান শিক্ষক ও ৫ জন সহকারী শিক্ষক। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, নিজের সন্তান/পোষ্য পরীক্ষার্থী থাকলে ওই শিক্ষক বা সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
এ বিধান জেনে ও তথ্য গোপন রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ওই শিক্ষকরা। গত ২০শে নভেম্বর থেকে শুরু হয় পরীক্ষা। তিন পরীক্ষার পর তথ্যানুসন্ধানে ও স্থানীয় লোকজনের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি আমলে আসে কর্তৃপক্ষের। শুরু হয়ে যায় দৌড়ঝাঁপ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাহিদা হাবিবা এ বিষয়ে সরকারি বিধি বিধান নিয়ে কথা বলেন শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে।
পরে ওই ১০ শিক্ষককে দ্রুত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অব্যাহতি প্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন- পানিশ্বর ইউনিয়নের শোলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মো. নাছির উদ্দিন। তিনি যে কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব তার ছেলেও সেই কেন্দ্রেই পরীক্ষা দিচ্ছে। এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তিনি গোপন রেখে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন।
এ ছাড়া নিজের সন্তান পরীক্ষার্থী রেখে পরমানন্দপুর কেন্দ্রের হল সুপারের দায়িত্বে থাকা উত্তম ঘোষ, পাকশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের হল সুপার মো. অহিদ মিয়া, কালিকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের হল সুপার শামসুন্নাহার সুলতানা হক ও আলীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের হল সুপার আবদুল মান্নানকে অব্যাহতি দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
নিজেদের জন্মস্থান গ্রাম রানিদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ইনভিজিলেটরের দায়িত্ব নেয়ার অভিযোগে সহকারী শিক্ষক জহিরুল ইসলাম, আকলিমা বেগম ও আরিফা বেগমকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। একই অভিযোগে অরুয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে অজিত চন্দ্র দাস ও পরীক্ষার্থীদের ধমক দেয়ার অভিযোগে সাবিনা ইয়াছমিনকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
গতকাল থেকে তাদের প্রত্যেকের জায়গায় অন্য শিক্ষকদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আবুল খায়ের ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল অব্যাহতি পাওয়া প্রত্যেক প্রধান শিক্ষকের সন্তান পরীক্ষার্থী এ কথার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাদেরকে যে কেন্দ্রের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সেই কেন্দ্রে সন্তান পরীক্ষার্থী না হলে সমস্যার কিছু নেই।
তবুও সমালোচনা শুরু হওয়ায় স্বচ্ছতার স্বার্থে অব্যাহতি দিয়েছি। তবে প্রধান শিক্ষক মো. নাছির উদ্দিন তথ্য গোপন করে সরকারি বিধান অমান্য করেছেন। তাকে আমরা আজই (গতকাল) কারণ দর্শানো নোটিশ দিচ্ছি।
ঢাকা, ২৪, নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)// আইএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: