শোবিজ লাইভ: দেশের স্বনামধন্য গীতিকবি শহিদুল্লাহ ফরায়জী। দেশের শীর্ষ শিল্পীদের কণ্ঠে তার লেখা অনেক গান ধারাবাহিকভাবে শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। গীতিকবি হিসেবে নিজেকে তিনি নিয়ে গেছেন অন্যরকম উচ্চতায়। দীর্ঘ সময় তিনি পারি দিয়েছেন এই সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। তবে ক্লান্তি নেই তার চোখে মুখে। এখনও তারুণ্যোর গতিতে এগিয়ে চলছেন। ব্যস্ত সময় পার করছেন গান লেখা নিয়ে।
সিনেমা, অডিও, নাটকসহ প্রতিটি মাধ্যমেই তিনি গান লিখে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে কেমন আছেন? দিনকাল কেমন কাটছে? শহিদুল্লাহ ফরায়জী বলেন, ভালো থাকার চেষ্টা করি। সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। তবে ভালো মানুষ হওয়ারও চেষ্টা করি। কারণ সেটা আরও বেশি জরুরি। আমি মনে করি না জীবনে শুধু নিত্য সুখ থাকবে। ভরপুর সুখ থাকবে। জীবনের মানে সেটা না।
শহিদুল্লাহ ফরায়জী জানান, মানবিকতাবোধ, নীতিবোধ ছাড়া জীবন অর্থহীন হয়ে পড়ে। সারা জীবন শুধু ব্যস্তই রয়ে গেলাম, কিন্তু নিজেকে কি দিয়ে মূল্যায়ন করবো সেটাই হচ্ছে মূল বিষয়। লোভ লালসার মধ্যে সত্য ও সুন্দর বিতাড়িত হয়। প্রেম বিতাড়িত হয়। জীবন তো বাহাদুরি প্রকাশের বিষয় নয়।
তাই আমি প্রতিনিয়ত নিজের অস্তিত্ব অনুসন্ধান করে যাচ্ছি। গত মঙ্গলবার ছিলো শহিদুল্লাহ ফরায়জীর জন্মদিন। পুরো দিনটাই ভক্ত ও শুভানুধ্যায়িদের শুভেচ্ছায় ভেসেছেন তিনি। বেশ কয়েকবার কেক কেটেছেন বিভিন্ন আয়োজনে। এর মধ্যে ছিলো পাঠক সমাবেশ, সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজন।
শহিদুল্লাহ ফরায়জী বলেন, এবারের জন্মদিনের সূচনা লগ্ন থেকে রাত পর্যন্ত কেবল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের জোয়ারে ভেসেছি। কবিদের আয়োজনে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। খুবই ভালো লেগেছে। রাতে আবার অনন্ত হীরা ও নুনা আফরোজের বাসায় আমন্ত্রণ ছিলো। সেখানেও কেক কাটাসহ নানা আয়োজন হয়েছে। সব মিলিয়ে খুব ভালো ও ব্যস্ত একটি জন্মদিন পালন করেছি। সবাই দোয়া করবেন যেন ভালো মানুষ হয়ে মানুষের ভালোবাসা নিয়ে জীবন পার করতে পারি।
এখন আপনার ব্যস্ততা কি নিয়ে? জানতে চাইলে শহিদুল্লাহ ফরায়জী উত্তরে বলেন, এখনও লিখে চলেছি। মাঝখানে বারী সিদ্দিকীর মেয়ে এলমা সিদ্দিকীর অ্যালবামে গান করেছি। ফাহমিদা নবীর জন্য লিখেছি। ‘নয়ন তারা’ শীর্ষক একটি নাটকের থিম সং লিখছি। এইতো এভাবেই চলে যাচ্ছে সময়। বর্তমানে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন মনে হচ্ছে আপনার কাছে? উত্তরে শহিদুল্লাহ ফরায়জী বলেন, খুব একটা ভালো না।
আমাদের সমাজের মতো করে গানের অবস্থাও ভালো না। গান হতে হবে জীবন ঘনিষ্ঠ। গান হতে হবে এমন যেন আত্মাকে উন্নত করতে পারে। হৃদয়কে জাগ্রত করতে পারে। কিন্তু এখন সেটা হচ্ছে না। না হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে হচ্ছে না এটাই মূখ্য বিষয়। আর এজন্যই সমাজ অধপতনের দিকে যাচ্ছে। একটা সমাজের মানবতাবোধ না থাকলে সেটা সমাজ নয়। এটা উপলব্ধির বিষয়।
এখন নষ্ট হচ্ছে সব কিছু। এই নষ্ট অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ন্যায়বোধ, মানবতাবোধ, সত্য, সুন্দরকে গ্রহণ করতে হবে। এগুলো ছাড়া মানুষ মানুষ নয়, সমাজ আসলে সমাজ নয়।
এটা যদি মানুষ একটু ভাবে তাহলেই হয়। নীতি বিবর্জিত মানুষ কখনও ভালো থাকতে পারে না। যাই হোক, আমি চাইবো যেন এ অবস্থা থেকে আমরা বের হয়ে আসতে পারি । সত্য ও সুন্দরের পথে যেন হাঁটতে পারি আমরা। তাহলেই জীবন পরিপূর্ণতা লাভ করবে। নিজের অস্তিত্বকে খুঁজতে হবে। না হলে হবে না।
ঢাকা, ১৯ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: