Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
আমি কি শিশু?

স্টুপিডের মতো কথা বলেন, ইউএনওকে মেয়র সাদিক

প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবার ২০২২, ০৩:৩৮

জেলা পরিষদ নির্বাচন

বরিশাল লাইভ: ফের প্রশাসনের সঙ্গে বিবাদে জড়ালেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকালে তিনি জেলা পরিষদের ভোট দিতে দলবল নিয়ে নগরের জিলা স্কুল কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। সেখানে দায়িত্বরত সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাকে একা যেতে অনুরোধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউএনওর সঙ্গে বাকবিতান্ডায় জড়িয়ে তাকে ‘স্টুপিড’বলাসহ বিভিন্ন অশালীনভাবে ধমকান মেয়র সাদিক।

এসময় ফেসবুক লাইভে ছিলেন মেয়র সাদিক। যে কারণে খবরটি তাৎক্ষনিক ছড়িয়ে পড়ায় নগরে ‘টক অব দ্যা টাউন’- এ পরিণত হয়। ভোট কেন্দ্রের ভেতরে লাইভ করা নির্বাচন বিধি বহির্ভূত বলে প্রশাসন জানিয়েছে। মেয়র ও ইউএন’র বাকবিতান্ডা এবং মেয়র দলবলে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেন কি-না জানতে চাইলে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

লাইভে দেখা গেছে, প্রথম ভোট দেয়ার জন্য মেয়র সাদিক সকাল ৯টার দিকে জিলা স্কুল কেন্দ্রে যান। তার সঙ্গে ছিলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম জাহাঙ্গীর, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু, প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চরবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মহাতব হোসেন সুরুজ, সদস্য প্রার্থী মোয়াজ্জেম চুন্নুসহ আরও অনেকে। তাদের নিয়ে কেন্দ্রের বুথের ভবনের প্রবেশ গেটে পৌঁছার পর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আলম মেয়রকে অনুরোধ করেন দলবল নিয়ে ভোটকক্ষে প্রবেশ না করার জন্য। এসময় মেয়র বলেন, তারা সবাই ভোটার।

পরে ভোটকক্ষের সামনে পৌঁছলে সেখানে দায়িত্বরত সদরের ইউএনও মো. মনিরুজ্জামান মেয়র সাদিককে দল বেঁধে প্রবেশ না করতে ‘প্লিজ’ ‘প্লিজ’ বলে অনুরোধ করেন। তখন মেয়র সাদিক প্রবেশের অপেক্ষায় দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি ইউএনওকে বলেন, ‘আমি কি ঢুকছি এখানে? আমি কি ঢুকছি? আপনি কে? আমি কি ঢুকছি? তারপরও আপনি কথা বলতেছেন। আমি কি শিশু? স্টুপিডের মতো কথা বলেন। যেভাবে ভাবটা করেন তাতে বুঝা যায় দল বাইধা ঢুকতেছি। ভোটার হইছে ১৭৪ জন। তাহলে সমস্যা কোথায়!’

এসময় মেয়রের সঙ্গী কাউন্সিলর শেখ সাইয়েদ আহম্মেদ মান্না বলেন, ‘এখানে সবাই ভোটার, আপনি চেনেন না?’ পরে নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নবনির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ.কে.এম জাহাঙ্গীর ইউএনওকে বলেন, ‘উনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।’ এ সময় ইউএনও পিঠে হাত বুলিয়ে বলেন, ‘চেয়ারম্যান মহোদয় আমি আপনাদের চিনি। আমি এমন কিছু বলিনি।’ এক পর্যায়ে মেয়র সাদিক ইউএনওকে বলেন, আমি তো ভেতরে ঢুকিনি। ফাইজলামি করেন আপনারা। আপনে কানে কথা শোনেননি। তখন ইউএনও মনিরুজ্জমান মেয়রকে বলেন, আপনাকে কিছু বলিনি স্যার।

জানতে চাইলে ইউএনও মো. মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, যা দেখার আপনারা তো দেখছেন, আমাকে কেন জিজ্ঞাস করেন? আমি কেবল আইনশৃংখলার দায়িত্বে ছিলাম। ভোটকেন্দ্রে লাইভ করা যায় কি-না প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব বিষয় প্রিজাইডিং অফিসার বা রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নুরুল আলম বলেন, ভোট কক্ষে ফেসবুক লাইভ করার বিধান নেই।

ঘটনার সময় মেয়রের সঙ্গে থাকা জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এ.কে.এম জাহাঙ্গির মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে জানান, ভোট শুরু হয়েছে সকাল ৯টায়। মেয়র ৯টা ৫ মিনিটে কেন্দ্রে যান। তার সঙ্গে সকলে ভোটার ছিলেন। তিনি ভোটারদের নিয়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়েছেন। ভেতরে প্রবেশ করেননি। তখন ইউএনও তাকে প্রবেশ না করার জন্য বার বার বলেন। এর বেশি কিছুই হয়নি বলে দাবি করেন জাহাঙ্গীর। এসময় পাশ থেকে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিককে বলতে শোনা যায় ‘কি হয়েছে তা লাইভে সারাদেশের মানুষ দেখেছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর ১৮ আগস্ট রাতে মেয়র সাদিকের অনুসারীরা সিটি করপোরেশনের কর্মী পরিচয়ে সদরের সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের স্থাপন করা ব্যানার-ফেষ্টুন অপসারন করতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঢোকেন। তখনকার ইউএনও মুনিবুর রহমান বাধা দিলে তার বাসভবনে হামলা ও আইনশ্ঙ্খৃলা বাহিনীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তুলকালামকান্ড ঘটে যায়। এরপর থেকে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অঘোষিত দুরত্ব চলছে।

ঢাকা, ১৭ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ