জাবি লাইভ: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রায় দৈর্ঘে ২৫০ এবং প্রস্থ ২০০ মিটারের বিশাল মাঠ থাকলেও খেলা উপভোগ করার মত নেই কোন স্টেডিয়াম। ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে এ মাঠে স্টেডিয়ামের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হলেও শেষ পর্যন্ত নির্মিত হয়নি স্টেডিয়াম।
জানা যায়, ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে আওয়ামীলীগ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী এ এস এইচ কে সাদেক ভিসি প্রফেসর আবদুল বায়েস এর সময় স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্টেডিমায়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের কাজ শুরু হয়।
কিন্তু কি কারণে স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায় তা জানা নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। আর স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য বরাদ্দ টাকা কোথায় কিভাবে আছে তার খবরও জানা নেই তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্রিকেট, ফুটবল, হ্যান্ডবল ব্যাডমিল্টন, বাসকেট বল, এ্যাথলিক ছাড়াও নানা ধরণের খেলা হয়ে থাকে এ মাঠে। বছরের প্রতিটি দিনেই লেগে থাকে নানা ধরণের খেলার প্রতিযোগিতা। আন্তঃহল, আন্তঃবিভাগ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়, চ্যান্সেলর ফুটবল, ভিসি হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতা ছাড়া বিভিন্ন সময় জাতীয় পর্যায়ের খেলাও হয়ে থাকে এ মাঠে। এই মাঠেই অনুষ্ঠিত হয় ২০০১ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ১৭-এশিয়া এর দুটি ম্যাচ।
শুধু তাই না এই মাঠে খেলেছেন মুশফিকুর রহিম, মাশরাফি বিন মুর্তজা, জাতীয় দলের সাবেক ওপেনিং ব্যাটসম্যান সরোয়ার হোসেন, জাতীয় দলের সাবেক ওপেনিং বলার মঞ্জুরুল ইসলাম, অনুর্ধ্ব ১৯ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাহমুদুল হাসান লিমন, জাতীয় মহিলা দলের ওপেনিং ব্যাটসম্যান শারমিন আক্তার সুপ্তাসহ অনেক নামী-দামী খেলোয়ার।
ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হওয়ার পরেও কেন এ মাঠে স্টেডিয়াম তৈরি করা হল না আর ভবিষ্যতে আদোও হবে কিনা এ নিয়ে সংশয়ে আছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রাহুল বলেন, ক্রিকেট, ফুটবল, হ্যান্ডবল বেডমিল্টন, বাসকেট বল, এ্যাথলিক মত নানা ধরণে খেলা হয়ে থাকে এ মাঠে। আমরা যারা খেলা প্রেমিক আছি তারা যে একটি জায়গায় বসে ভাল ভাবে খেলা উপভোগ করবো তার কোন ব্যবস্থা নেই। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলা দেখতে হয়। আর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কতক্ষণ একটি খেলা মনযোগ সহকারে দেখা যায়। তাছাড়া বৃষ্টি, রোদ্র তো আছেই।
জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মাজেদা রহমান বলেন, খেলা-ধুলা আমাদের মনন বিকাশে সহায়তা করে। সবাইতো আর খেলতে পারেনা। তবে খেলে দেখে সবাই পরিতৃপ্ত হয়। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে খেলা দেখার মত কোন পরিবেশ নেই। আর এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন উদ্যোগ কখনো আমাদের চোখে পড়েনি।
পরিসংখ্যান বিভাগের প্রফেসর আলমগীর কবীর বলেন, এটা ভাবতে অবাক লাগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে কোন স্টেডিয়াম নেই। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
শারীরিক শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিচালক এস এম সাদাত হোসেন বলেন, ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে ২৫-৩০ লক্ষ টাকায় অনেক ভাল মানের একটি স্টেডিয়াম তৈরি করা সম্ভব হত। কিš‘ কি করণে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হওয়ার পরেও কেন স্টেডিয়াম তৈরি হল না তা আমাদের জানা নেই। টাকার খবরও বলতে পারবোনা। এটি প্রশাসন ভাল বলতে পারবে। তবে বর্তমান প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে তারা যেন এই অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করতে উদ্যোগ গ্রহণ করে।
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, অনেক আগে স্টেডিয়াম তৈরি জন্য ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ছিল তা এখন একাউন্টে জমা আছে। এই টাকা দিয়ে এখন স্টেডিয়াম তৈরি করা সম্ভব নয়। তবে এরই মধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড একটি ডেসিং রুম তৈরি জন্য ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।
ঢাকা, ১২, নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//আইএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: