জাবি লাইভ: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংলগ্ন ইসলামনগর এলাকার এক ব্যবসায়ী ও দোকানের কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (৫ মে) সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ইসলাম নগর এলাকার 'মেসমেরাইজ' নামের একটি দোকানে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীরা হলেন- দোকানের মালিক রোমেন রায়হান, দোকানের ম্যানেজার মিরাজুল ইসলাম মিরাজ ও রায়হানের বড় ভাই নেওয়াজ রাসেল বাপ্পি। রোমেন রায়হান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ৪২ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাব্বির হোসেন নাহিদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান জয়। নাহিদ নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শহীদ রফিক জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র। মেহেদী হাসান জয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক ছাত্র। তারা উভয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী।
ভুক্তভোগী দোকান মালিক রোমেন রায়হান বলেন, শুক্রবার ( ৫ মে) সন্ধ্যা সাতটার দিকে নাহিদ ও জয় আমার দোকানে জুতা কিনতে আসে। এ সময় তাদের জুতা ওয়াশ করতে দেরি হাওয়ায় তারা আমার দোকানের ম্যানেজার মিরাজকে বলে তুই দ্রুত কাজ কর, আমাদের তাড়া আছে। কয়েকবার এ কথা বলার পরে তারা মিরাজকে বলে, তুই এত অ্যাটিটিউড দেখাচ্ছিস কেন? এ কথা বলার পর একর্যায়ে মিরাজকে মারধর শুরু করে তারা৷ এ সময় আমার বড়ভাই বাপ্পি ঠেকাতে আসলে তাকেও মারধর করে। পরে মিরাজ ও ভাইকে নিয়ে দোকানের বাইরে আসে তারা। পরে আরেকদফা মারধর করা হয়। এসময় আমি ঠেকাতে গেলে তারা আমাকে মারধর করে। এবং তারা আমাকে তাদের অনুমতি ছাড়া দোকান খুলতে নিষেধ করেছে।
আরেক ভুক্তভোগী দোকানের ম্যানেজার মিরাজুল ইসলাম মিরাজ বলেন, 'শুক্রবার নাহিদ ও জয় দোকানে জুতা কিনতে আসে৷ জুতাটায় একটু ধুলা পড়ায় ওটা ওয়াশ করে দিতে হতো৷ এজন্য জুতা ওয়াশ করছিলাম৷ এসময় নাহিদ ও জয় তড়িঘড়ি শুরু কর। তারা আমাকে বলে, 'তুই দ্রুত ওয়াশ কর, আমরা খুবই ব্যস্ত, আমাদের সময় সম্পর্কে তোর কোন আইডিয়া আছে?'। আমি তখন তাদের বলি ভাই একটু সময় লাগবে৷ তারা আমাকে বলে তুই এতো অ্যাটিটিউড দেখাচ্ছিস কেন? আমি তখন বলি, ‘ভাই আমি অ্যাটিটিউড কই দেখালাম?’ এ কথা বলার পরই তারা আমাকে মারধর শুরু করে। পরে দোকানের বাহিরে নিয়ে আবারো মারধর করে।
দোকান মালিকের বড় ভাই নেওয়াজ রাসেল বাপ্পি বলেন, 'মিরাজকে মারধর করতে দেখে আমি কারণ জানতে চাই। এসময় নাহিদ ও জয় দোকানের মধ্যে আমাকে মারধর করে। পরে দোকান থেকে বাইরে বের করে এনে আবারো মারধর করে তারা৷'
মারধরের ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, নাহিদ ও জয় মিরাজকে দোকান থেকে বের করে আনেন ৷ পরে তাকে মারধর করেন৷ এসময় বাপ্পিকেও মারধর করতে দেখা যায়।
অভিযোগের বিষয়ে সাব্বির হোসেন নাহিদ বলেন, 'দোকানিরা বহিরাগত ভেবে আমাদের থেকে টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেছে। তারা আমার ভোক্তা অধিকারও ক্ষুণ্ন করেছে। জুতা কেনার কোনো রশিদ তারা আমাকে দেয়নি৷ আমরা তাদেরকে মারধর করিনি। তারাই আমাদের মারধর করেছে। বহিরাগত হোক আর যেই হোক না কেন কোন কাস্টমারের সাথে এমন ব্যবহার কখন কাম্য নয়। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।'
মারধরের ঘটনা অস্বীকার করে মেহেদী হাসান জয় বলেন, 'দোকানদারকে আমরা তাড়াতাড়ি জুতা পোলিশ করতে বললে সে আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। পরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়।'
তিনি আরো বলেন, 'ওই দোকানদার যদি আমাদের নামে কোন অভিযোগ করে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকারের শরণাপন্ন হবো। কারণ সে আমাদেরকে কোন ভাউচার দেয়নি এবং আমাদের ১৫০ টাকা ফেরত দেয়নি।'
ঢাকা, ০৬ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: