
ঢাবি লাইভ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এতে ৬৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা থাকলেও জামায়াতপন্থী হিসেবে পরিচিত প্রফেসর ড. আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন ২৫ জনের প্যানেল নির্বাচনে অংশ নেয় নি।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট চারটি কেন্দ্র, নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন (১ থেকে ১৬,০০০ পর্যন্ত সদস্য), ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (১৬,০০১ থেকে ৩২,০০০ পর্যন্ত সদস্য), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব (৩২,০০১ থেকে ৪৮,০০০ পর্যন্ত সদস্য), শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে (৪৮,০০১ থেকে ৫৯,৩২০ পর্যন্ত সদস্য) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট দেন।
এবারের সিনেট নির্বাচনে দেখা গেল হ-য-ব-র-ল অবস্থা। যেখানে তালিকা থেকে শুরু করে পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট, প্রার্থী , সমর্থক, গোপন ভোটকক্ষ সবই আছে। কিন্তু ভোটারদের লাইন নেই!
যে কারণে নেই ভোটারদের লাইন :
নির্বাচনে প্রার্থী আছে কিন্তু ভোটারদের দেখা নেই কেন এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি ঢাকা বার এসোসিয়েশন নির্বাচন ,গাজীপুর বার এসোসিয়েশন নির্বাচন এবং সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের ভোট ডাকাতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। এ কারণে অনেকেই ভোট দিতে আসে নাই। অন্যান্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগপন্থী প্যানেলের বিপরীতে বিএনপি- জামাতপন্থী প্যানেল শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত। কিন্তু এবারের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি জামাতের প্যানেল সম্ভাব্য প্রার্থীদের মামলা - হামলার মাধ্যমে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার অপকৌশল গ্রহণ করে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগপন্থী প্যানেলের নীতি নির্ধারক মহল। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে বিএনপি- জামাত প্যানেল নির্বাচন বর্জন করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা এই নির্বাচনে ভোট প্রদান করে থাকে।শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলই প্যানেল দেওয়ার কারণে সাধারণ ভোটাররা ভোট দেয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। যারা ভোট দিতে এসেছে, তারা শুধুমাত্র প্রার্থীর মন রক্ষার জন্যই এসেছে। অনেক প্রার্থী জাল ভোট দেওয়ার জন্য লোক ভাড়া করে নিয়ে এসেছেন। অনেকেই খুশিতে লাফালাফি করে জাল ভোট প্রদান করেছেন।
গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদে চাপা ক্ষোভ:
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদের ২৫ জনের মধ্যে ১৩ জনই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। পাঁচজন হাইপ্রোফাইল ব্যবসায়ী। মোটা অংকের বিনিময়ে তারা প্যানেলের পদ বাগিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ক্ষুব্ধ সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা। জীবন -যৌবন রাজপথে উৎসর্গ করে ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসা ত্যাগী নেতারা প্যানেলে জায়গা না পাওয়ায় হতাশ এবং ক্ষুব্ধ তাদের সমর্থকরাও। তাই ছাত্রনেতাদের অনুগত কর্মী ও সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে আসে নাই ।
ফলাফল ঘোষণা:
আগামীকাল ১৯ মার্চ সকাল ১০টায় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ভোট গণনা করা হবে এবং গণনা শেষে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমেদ নির্বাচনের চিফ প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন।
ঢাকা, ১৮ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএ//এমএফ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: