ঢাবি লাইভ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতি কার্যকরী পরিষদ নির্বাচন-২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ ডিসেম্বর। এতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ১৫টি পদের বিপরীতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন।
এই দুই প্যানেলের পাশাপাশি এবার সভাপতি পদে নীল দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন। তবে ভোট চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধসহ ভুল বানানে ভরা পরিচিতি পত্র বিতরণ করে আলোচনায় রয়েছেন তিনি।
নীল দলের একাধিক শিক্ষক জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর সর্বসম্মতিক্রমে নীল দলের প্যানেল চূড়ান্ত করা হয়েছে। যেখানে শিক্ষক সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়াকে সভাপতি হিসেবে দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। অধ্যাপক জামাল উদ্দীন দলের সিদ্ধান্ত না মেনে প্রার্থী হওয়ায় ক্ষুব্ধ অনেকেই। একইসঙ্গে প্রচারপত্রে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধসহ অনেকগুলো বানান ভুল থাকায় ব্যথিতও হয়েছেন তারা।
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নির্বাচন-২০২৩, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি নীল দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করুন’ শিরোনামে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে প্রচারপত্র বিলি করেন অধ্যাপক জামাল উদ্দীন।
প্রচারপত্রে ‘জন্মগ্রহন’ (জন্মগ্রহণ), ‘তিমি’ (তিনি), ‘১২৮৫’ (১৯৮৫), ‘উত্তীণ’ (উত্তীর্ণ), ‘ইং্যান্ডের’ (ইংল্যান্ডের), ‘ক্যাতনামা’ (খ্যাতনামা), ‘মেডিটেল’ (মেডিকেল), ‘কলেটে’ (কলেজে), ‘নিন্ডিকেট’ (সিন্ডিকেট), ‘গভনিং’ (গভর্নিং), ‘সামরিক’ (সামাজিক), ‘জাতীঢ’ (জাতীয়), ‘পবন্ধ’ (প্রবন্ধ), ‘পিতিবেদন’ (প্রতিবেদন), ‘ব্যানবেই্স’ (ব্যানবেইস), ‘ভিাগের’ (বিভাগের), ‘শ্রেনীকক্ষ’ (শ্রেণিকক্ষ), ‘গবেষণাা’ (গবেষণা), ‘অংশগ্রহন’ (অংশগ্রহণ), ‘তম্মধ্যে’ (তন্মধ্যে), ‘বসংশেষষ’ (সর্বশেষ), ‘গনতন্ত্র’ (গণতন্ত্র), ‘প্রশংসিত’ (প্রসংশিত), ‘আবদন’ (অবদান), ‘বর্নাঢ্য’ (বর্ণাঢ্য), ‘কারা অন্তরীন’ (কারা অন্তরীণ), ‘দাবীতে’ (দাবিতে), ‘গন্তি’ (গণ্ডি), ‘অন্তর্জাতিক’ (আন্তর্জাতিক), ‘আওয়ার্ড’ (অ্যাওয়ার্ড), ‘বঙ্গবব্ধু’ (বঙ্গবন্ধু), ‘সন্মাননা’ (সম্মাননা), ‘মারাত্নকভাবে’ (মারাত্মকভাবে), মুক্তিযুদ্ধোসহ (মুক্তিযুদ্ধের) অন্তত ৩৯টি বানান ভুল রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক জামাল উদ্দীন বলেন, আমি নীল দল থেকে প্রার্থী হইনি। তবে শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়া আর সবগুলো পদেই আমি নীল দলকে সমর্থন করি। শুধু প্রেসিডেন্ট পদে আমার বিরোধিতা।
বঙ্গবন্ধু-মুক্তিযুদ্ধসহ এত বানান ভুলের বিষয়ে তিনি বলেন, ছাপাখানায় একটি সমস্যা হয়েছিল। তারা ৩৭ থেকে ৩৮টি বানান এলোমেলো করেছিল। প্রথম সংস্করণে ৭০০ থেকে ৮০০ কপি ভুল ছাপা হয়েছিল। পরে সেগুলো ঠিক করে বিলি করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে দলের অবস্থান জানতে চাইলে নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস ছামাদ জানান, নীল দলের প্যানেল তো একটাই। এখানে দুই প্যানেল হওয়ার সুযোগ নেই। নীল দলের সভায় এটি অনুমোদন হয়েছে। তিনি নিজের মতো করে প্রার্থী হয়েছেন। নীল দলের মনোনয়ন পত্র নেননি। তিনি নীল দলের প্রার্থী না।
ভুল বানানের বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রচারপত্রে ভুল বানানে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু লিখেছেন এজন্য আমরা তীব্রভাবে প্রতিবাদ জানাই। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
এ বিষয়ে নীল দলের সভাপতি প্রার্থী অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া জানান, নীল দল থেকে আমাকে সভপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। এখানে দ্বিতীয় প্রার্থীর কোনো সুযোগ নেই।
ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: