জাবি লাইভ: এবার মোবাইল ফোন তল্লাশী চালানো হয়েছে। দেখা হয়েছে কার মোবাইলে কি ধরনের ক্ষুধে বার্তা রয়েছে। অনাহুত কোন বার্তা দেখলেই হুমকিধিমকি দেয়া হয়েছে সংশ্লিস্টদের। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের স্বৈরাচার বিরোধী মশাল মিছিলে বাধা, আন্দোলনকারীদের টানা-হেঁচড়াসহ মোবাইল ফোন তল্লাশির অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের পুনঃনির্ধারিত কর্মসূচিতে এ ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘শিবির সন্দেহে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ৪৯ ব্যাচের ছাত্র সীমান্ত বর্ধনের মোবাইল ফোন তল্লাশি করে ছাত্রলীগ। সেইসঙ্গে সবাইকে শিবির বলে চিৎকার করতে থাকে তারা।
যদিও সেখানে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সম্পাদক অমর্ত্য রায়, শাখা ছাত্রফ্রন্টের সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় ও জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচীসহ একাধিক হিন্দু শিক্ষার্থী ছিলেন।’ ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক এসএম দিদারুল আলম দীপ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় সরকারের নেতৃত্বে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করে।’
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের মিছিলের স্লোগান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ ও একজনের মোবাইল তল্লাশি করে। পরে শান্তিপূর্ণ উপায়ে মিছিলটি পরিবহন চত্বরে উপস্থিত হলে ছাত্রলীগের প্রায় ৫০ জন পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকে।
এক পর্যায়ে শিবির সন্দেহে কয়েকজনকে টানা-হেঁচড়া ও তেড়ে আসে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ ঘটনায় ন্যক্কারজনক উপায়ে আমাদের সভা-সমাবেশের অধিকার হরণ করেছে ছাত্রলীগ। যা প্রত্যেক স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের সমর্থকরা করে থাকে।’
তল্লাশির ভুক্তভোগী সীমান্ত বর্ধন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ছাত্রলীগ যৌক্তিক আন্দোলনকে বানচাল করতে ছাত্রদল-শিবিরের সংশ্লিষ্টার অভিযোগ আনে। এছাড়া হিন্দু অনুসারী হওয়া সত্ত্বেও আমার মোবাইল তল্লাশি করে। যা পুরোপুরি অনৈতিক।
প্রগতিশীল দলের একজন কর্মী হয়েও যদি ব্যক্তিগত নিরাপত্তা না পাই, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবস্থা কি হবে?’ সমাবেশে চলমান গুম, খুন, রাজপথে পুলিশের নিপীড়নসহ বিরোধী দলগুলোর ওপর দমন- পীড়নের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকার স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির মিথ্যা ভয় প্রদর্শন করছে।
তাহলে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ।’ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘বর্তমান সরকার স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের সরকার। দুর্নীতি বা অপশাসনের ব্যাপারে জনগণ কথা বললে মুখ চেপে ধরা হয়। তাই শান্তিপূর্ণ মিছিল সত্ত্বেও ছাত্রলীগ আমাদের বাধা প্রদান করেছে।’
জাবি ছাত্রলীগের সংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় সরকার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের আবেগ, আমাদের শক্তি, আমাদের আস্থার জায়গা। তাকে নিয়ে কোনো প্রকার কটূক্তি করলে তাদের ছাড় দেয়া হবে না। আমি তাদেরকে বলতে চাই ‘বঙ্গবন্ধু এবং নেত্রীর প্রশ্নে কোনো আপস নেই।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রনি হোসাইন বলেন, ‘মশাল মিছিলের শুরু থেকেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলাম। ‘হট্টগোল’ সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি।
ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিনয়
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: