জাবি লাইভ: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নবীন শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের গেস্টরুমে অন্তত ২০ ছাত্রকে নির্যাতন করা হয় বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন। তাঁরা জানান, একটি হলে 'ম্যানার শেখানোর' নামে নিয়ে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। ইট হাতে দাঁড় করিয়ে রাখা, কান ধরে উঠবসসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাত-আটজনের করা নির্যাতনের একটি ভিডিও প্রকাশে আসে। এতে নির্যাতনের ভূমিকায় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের বঙ্গবন্ধু হলের মার্কেটিংয়ের মো. জায়েদ, মো. রাসেল, মো. রিজভী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আজিম সাকিব, ইংরেজির মো. লালন, পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকসের তানিম আহমেদ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ইয়াসির মোহাম্মদ আমিনকে দেখা গেছে।
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী মিরাজ (ছদ্মনাম) জানান, হলে থাকা ছাড়া তাঁদের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য বাধ্য হয়ে কান ধরে উঠবসসহ অন্যান্য কাজ করেছেন। সিনিয়র ভাই পরিচয় দিয়ে ম্যানার শেখালেও তাঁরা সবাই শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। নির্যাতনকারীরা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী বলেও জানান ওই শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অভিযুক্ত মো. জায়েদ বলেন, এখানে নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। জুনিয়ররা গত সোমবার ক্যাম্পাসে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছে। এ জন্য আমাদের ওপর চাপ আসে। রাতে ওদের গেস্টরুমে ডেকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়। হলের খেলা উপলক্ষে দল গঠনের বিষয়েও পরামর্শ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানার জন্য শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, 'এখানে ছাত্রলীগের কোনো ইস্যু জড়িত নেই। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ফুটবল টুর্নামেন্টের বিষয়ে ডেকে নবীন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তার পরও বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।'
এ ব্যাপারে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ইস্রাফিল আহমেদ বলেন, নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এজহারুল ইসলামকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন যা আসে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হলের প্রক্টর ফিরোজ-উল-হাসান জানান, হল কর্তৃপক্ষও একটি তদন্ত কমিটি করেছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা, ১৯ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: