জবি লাইভ: এসব কি চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি)। আবারো টেন্ডার নিয়ে হুমকি-ধমকির ঘটনা ঘটেছে। টেন্ডার ডিজিটিলাইজড হওয়ার পরেও ঠিকাদারদের নানান ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে খোদ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) টেন্ডারের টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির চাঁদাবাজির একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। ফাঁস হওয়া অডিওতে ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা না পেলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতে শোনা যায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি। অডিওটি এখন সংরক্ষিত আছে বিভিন্ন মিডিয়ায়।
সংশ্লিস্টরা জানান, ফাঁস হওয়া অডিওতে শোনা যায় ইব্রাহিম ফরাজি বলছেন, 'মাহফুজ ভাই, সুন্দরভাবে বলি ভাই, সময় থাকতে দেখা দেন। ৯ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা নিয়ে পাঁচ লাখ টাকা একা খাইলেন আর এখন অসুস্থতার ভান করে বাসায় বসে রইলেন। (হাসি) আপনি কি মনে করছেন, আপনাকে আমরা ছেড়ে দেব? আমাকে ওরা তিনজনে মিলে চাপতেছে আপনার কারণে আর আপনি বইসা বইসা ঘুমান ৯ লক্ষ টাকা খেয়ে, হে.. মজা লাগে, না? ঢাকার শহর থাকবেন তো, দেখা হবেই ভাই।' এসব নানান কথা।
জানা যায়, গত বছরের নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত মালপত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করে। শাওন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় মালপত্র ক্রয় করে। আর অর্থনীতি বিভাগের পরিত্যক্ত মালপত্র ৫৫ হাজার টাকায় কেনে আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
জবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ঠিকাদার মাহফুজ এসব মালপত্র দুই ঠিকাদারের কাছ থেকে ক্রয় করে ৯ লক্ষ ১৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। শাখা ছাত্রলীগের (স্থগিত) সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি ওই সময় এই মালপত্রের বিক্রির টাকার লাভের ভাগ দাবি করেন। তবে টাকার জন্য তাকে চাপ দেওয়া তিনজনের পরিচয় জানা যায়নি।
ঠিকাদার মাহফুজের সাথে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে তিনি রেকর্ডটির সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, কমিটি হওয়ার মাসখানেক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মালপত্রের টেন্ডার হয়। এরপর আমি অন্য ঠিকাদারের কাছ থেকে মালপত্র কিনে নেই। মালবিক্রির পরে ফরাজি এ টেন্ডারের লাভের টাকা দাবি করেন। ফাঁস হওয়া অডিও সম্পর্কে জানতে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজিকে ফোন দিলে প্রথমবার তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পুনরায় তাকে কল দিলে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার কল দিলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। এরপর তার ব্যবহৃত নম্বরে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কবেকার রেকর্ড মনে নেই। যার কাছ থেকে রেকর্ড পেয়েছেন, তাকেই জিজ্ঞেস করুন।
এদিকে জানাগেছে ইব্রাহিম কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ বিষয়ে জানতে জয়কে ফোন দিলে তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর তাকে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি। অন্যদিকে ওই ব্যবসায়ী আছেন নানান চাপে। কিন্তু এখন ভয়ে ভয়ে চলেন। কখন কি হয়ে যায় তাও ভেবে পচ্ছেন না।
ঢাকা, ২২ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: