বশেমুরবিপ্রবি লাইভ: ফেসবুকে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম আরমান মাসুদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্র।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, তাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন ও গুম করে ফেলার হুমকি দিয়েছে একই বিভাগের সিনিয়র ছয় শিক্ষার্থী।
অভিযুক্তরা হলেন: ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ইমন শেখ (২৪), আশরাফুল ইসলাম বিজয় (২৪), নোমান আহম্মেদ তাসনিম (২৫), শেখ নাঈম (২৫), রিজভী আহম্মেদ (২৩), আবির হাসান সাজিদ (২৩)।
এ ঘটনায় রবিবার (২৮ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে শারীরিক নির্যাতনের শিকার আরমান সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগে শনিবার তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, আরমান ২৫ আগস্ট ফেসবুকে সারকাজম নামক গ্রুপে মজা করে একটি কমেন্ট করে। উক্ত কমেন্টের জের ধরে গত শনিবার (২৭ আগস্ট) আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইমন শেখ (২৪) তাকে ফোনে কল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপুস ক্যান্টিনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ইমন শেখসহ আশরাফুল ইসলাম বিজয়, নোমান আহম্মেদ তাসনিম, শেখ নাঈম, রিজভী আহম্মেদ, আবির হাসান সাজিদসহ আরো অনেকে জোরপূর্বক লিপুস ক্যান্টিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকপাড়ে নিয়ে গিয়ে বিনা কারণে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
অভিযোগে আরো বলা হয়, তাদেরকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল, ঘুষি, লাথি মেরে জখম করে ও মারধরের এক পর্যায়ে পাশে থাকা বাঁশ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে জখম করে এবং হুমকি দিয়ে বলে যে, 'তুই যদি এই বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করিস বা আইনের আশ্রয় নিস তাহলে তোকে খুন করে তোর লাশ গুম করে ফেলব।'
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, বর্তমানে তাকে বিভিন্ন ফোনকলের মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এর জেরে তিনি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও নোমান আহমেদ বিজয় এবং আশরাফুল ইসলাম তাসনিম ব্যতিত কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। নোমান এবং তাসনিমের দাবি তারা মারধরের ঘটনায় সম্পৃক্ত নন।
এ বিষয়ে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি বাপন চন্দ্র কুড়ি বলেন, ওই শিক্ষার্থী এ বিষয়ে আমাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেটি আমি প্রক্টর বরাবর ফরওয়ার্ড করেছি। এছাড়াও প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি, শিক্ষার্থীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান জানান, সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে অভিযোগটি রোববার পেয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষক ও হামলার শিকার শিক্ষার্থীর সাথেও সোমবার কথা বলেছি। এ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি শেখ মো. নাসীর উদ্দীন বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আমাদের কাছে অভিযোগ করেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ঢাকা, ৩০ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: