Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ৮ই মে ২০২৪, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

জাল টাকার সাথে 'স্কোপোলামাইন', সর্বস্বান্ত জবি শিক্ষার্থীর পরিবার

প্রকাশিত: ২৪ আগষ্ট ২০২২, ০৫:৫৯

সর্বস্বান্ত জবি শিক্ষার্থীর পরিবার

জবি লাইভ: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র হিমু (ছদ্মনাম)। পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশন পড়িয়ে চালান নিজের খরচ। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হিমুর জীবিকা নির্বাহের জন্য নিউশন ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। দুই বোন ও দুই ভাই সহ তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছয় জন। ৬০ বছর বয়সী বৃদ্ধ কৃষক বাবা বয়সের ভারে হারিয়েছেন কাজ করার সামর্থ্যও। সংসারের হাল ধরতে হয়েছে বাড়িতে থাকা আরেক ভাই, যিনি পড়াশোনার পাশাপাশি এলাকাতেই খুঁজে নিয়েছেন নিম্ন বেতনের একটি কোম্পানির চাকরি। তাতেই কোনোরকমে টেনেটুনে চলছিল হিমুর সংসার।

হঠাৎই ঝড় নেমে আসে তাদের পরিবারে। হুট করে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি যেন 'মরার পর খাড়ার ঘা' হয়ে নেমে আসে তাদের ওপর। সংসার চালাতে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ে তার পরিবার। একই সাথে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ আর ঋণ পরিশোধের চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েন হিমুর বাবা।

আর কোনো কূলকিনারা খুঁজে না পেয়ে দীর্ঘদিন থেকে লালন-পালন করে আসা গাভীটিকে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অভাবগ্রস্থ পরিবারে সামান্য দুধের যোগান দিয়ে আসা গাভীটিকে নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার নৈহাটি নামের হাটে তুলেন গত ১৫ আগস্ট। এটি বাংলাদেশের গরুর বাজারের জন্য বিখ্যাত, যা ভাটি অঞ্চল থেকে সারা দেশে গরু সরবরাহ করে থাকে। ৬৯ হাজার টাকায় গাভীটিকে বিক্রি করে দেন হিমুর বাবা।

কিন্তু কে জানতো এতেও শেষ হবে না তাদের পরিবারের দুঃখ-দুর্দশা। বরং আরও নেমে আসে ঘন কালো অন্ধকার। গরু বিক্রির টাকা নিয়ে যখন হিমুর বাবা ঋণ পরিশোধ করতে গেলেন, তখন বুজতে পারলেন যে টাকাগুলো আসলে জাল। ততক্ষনে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।

টাকাটা যখন উনি ক্রেতার কাছ থেকে গুণে নেন তখন অনুভব করেন এক অদ্ভুত রকমের গন্ধ। একইসাথে চারজন ক্রেতা এসে দরদাম করে গাভীটিকে কিনে নেন। তারা যেভাবে বলেছিলেন সেভাবেই সব মেনে নেন হিমুর বাবা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসিতে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত হিমুর ধারণা, টাকাগুলোতে মোহ সৃষ্টিকারী স্কোপোলামাইন (scopolamine) ছিল, যেটা ঘ্রাণ এর মাধ্যমে ভুক্তভোগী কে হিপ্নোটাইজড করে। তারপর তার সর্বস্ব লুট করে নেয়। ঢাকাসহ সারাদেশে এখন এমন ঘটনা ঘটছে নিয়মিতই। বেশ কয়েকটি চক্র এর মাধ্যমে মানুষের সর্বস্ব লুট করে নিচ্ছে।

স্বপন নামের পরিচয় দেওয়া ক্রেতা পেশায় কন্ট্রাক্টর। ঠিকানা দিয়েছিলেন পাশের উপজেলার আমতলা গ্রামে বাড়ি তার, নেত্রকোনাতেও রয়েছে আরেকটি বাড়ি। তবে ওই ঠিকানায় যাওয়ার পর এই নামের কাউকে খুঁজে পাননি তারা।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে প্রতারণার শিকার হিমু ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'আর কোনো পরিবার যেন এই ধরণের প্রতারণার শিকার না হয়। এর জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এই প্রতারক চক্রটি নৈহাটি গরুর হাটে খুবই সক্রিয়। অনেককেই পথে বসাচ্ছে।'

ঢাকা, ২৩ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//আরআই//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ