Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
অনার্স ফেল: সিলেকশন বোর্ড বলেছে ভিসি ইনসিস্ট করেছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে ভিসির অভিনব প্রভাব!

প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২২, ২১:৫০

ঢাবিতে শিক্ষক নিয়োগে ভিসির অভিনব প্রভাব!

ঢাবি লাইভ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নানান অভিযোগ ও আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এই সমালোচনা খোদ ভিসিকে নিয়েই হচ্ছে। কি এক অজানা কারণে তিনি এক প্রার্থীকে প্রাধান্য দিয়ে তার পক্ষে সিলেকশন বোর্ডের সুপারিশ উপেক্ষ করে নিজ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন। ওই সুপাশিপ্রাপ্ত প্রার্থীর নাম সিদ্ধার্থ দে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানান অভিযোগ। ছাত্রাবস্থায় একাডেমিক ডিসিপ্লিন না মানা, একাধিকবার জ্যেষ্ঠ শিক্ষকবৃন্দের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনার্স শ্রেণিতে ফেল করা ইত্যাদি অভিযোগের কারণে বারবার প্রভাষক পদে আবেদন করলেও বিভাগের শিক্ষকবৃন্দের আপত্তির কারণে তাকে শিক্ষক পদের জন্য প্রতিবারই অযোগ্য বিবেচনা করা হয়েছে।

নিজ পিএইচডি শিরোনামের ইংরেজিতে বলতে ব্যর্থ হলেও সিদ্ধার্থ দে নামে ওই প্রার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক্স ডিজাইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশের করার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে পাঠদানের যথেষ্ট যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও তাকে নিয়োগের সুপারিশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ ভাইবা বোর্ডে থাকা সদস্যদের মধ্যেই। বিতর্কিত ওই প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে নিজে সুপারিশ ও বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের সুপারিশ করতে জোর করেন খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ও নিয়োগ বোর্ডের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। সিলেকশন বোর্ডের বাকি সদস্যদের তীব্র দ্বিমত থাকা সত্ত্বেও তারা নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছেন বলে একাধিক সূত্রে তথ্য মিলেছে।

সংশ্লিস্টরা জানান, ২০২১ সালের ৮ই নভেম্বর শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপকের পদে দুই জনকে স্থায়ী পদে নিয়োগ দেয়া হবে। এ পদে নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের অবশ্যই গ্রাফিক ডিজাইন বিষয়ে উচ্চতর যোগ্যতার অধিকারী হতে হবে। তাদের পিএইচডি কিংবা সমমানের ডিগ্রী থাকা বাঞ্ছনীয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের দুটি পদের জন্য মোট পাঁচ জন আবেদন করেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের রয়েছেন চার জন। তারা হলেন- ড. সীমা ইসলাম, ড. ফারজানা আহমেদ, মো. হারুন অর রশিদ, ভদ্রেশু রীটা।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে আবেদন করেন সিদ্ধার্থ দে। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইনের শিক্ষক। সেখানে নিয়োগের ব্যাপারে নানান জটিলতারও সৃস্টি হয়েছিলো।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে দুজনের পিএইচডি ডিগ্রি ছিলো, যা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত যোগ্যতা পরিপূর্ণ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে গত ২০২২ সালের ৪ঠা জুলাই সিলেকশন বোর্ড বসে। বোর্ডে ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান ছাড়াও আরও পাঁচজন ছিলেন। তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, অধ্যাপক ড. ফরিদা জামান, অধ্যাপক রফিকুন নবী (রনবী), অধ্যাপক এফ এম কায়সার ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অলক রায়।

সিলেকশন বোর্ডে শিক্ষকদের মধ্যে অধ্যাপক এফ এম কায়সার বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসাবে ছিলেন। বোর্ডের একাধিক সদস্যের অভিযোগ, সিলেকশন বোর্ডে নিয়োগ প্রার্থী সিদ্ধার্থ দেকে যেসব প্রশ্ন করা হয় তার আশানরূপ কোনো জবাব দিতে পারেননি। এমনকি তাকে তার পিএইচডি শিরোনামের ইংরেজি বলতে বললেও তিনি তাও বলতে পারেননি। নিজের পিএইচডি শিরোনামের ইংরেজি বলতে না পারায় ওই সময় তাকে নানান কথাও শোনানো হয়।

এছাড়া, তিনি যেসব কাজ করেছেন সেসব কাজে সিলেকশন বোর্ডের কোনো সদস্য সন্তুষ্টও ছিলেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর, যোগ্যতাসম্পন্ন যে কেউ আবেদন করতে পারেন। কিন্তু শূন্য পদে যদি নিজ বিভাগের যোগ্য কেউ থাকেন তাহলে ওই প্রার্থীকেই নিয়োগ দেয়া হয়। তবে, বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী থাকলে তাকে উল্লিখিত পদে নিয়োগ দিয়ে বিভাগের অন্য প্রার্থীদের পদ পুন্যর্বিন্যাসের মাধ্যমে পদোন্নতি দেয়া হয়।

তাছাড়া, গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের চারজন প্রার্থীর মধ্যে দুজনের পিএইচডি ডিগ্রি ছিল। অর্থ্যাৎ দুজন বিভাগ কর্তৃক উল্লিখিত পদের জন্য যোগ্য ছিলেন। কিন্তু ওই দুই পদে তাদের মধ্যে কেবল একজনকে সুপারিশ করা হয়েছে। অপর পদে সিদ্ধার্থ দে কে সুপারিশ করে বাকীদের পদ পুন্যর্বিন্যাসের মাধমে পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়। অথচ সিদ্ধার্থ দে এর বিশেষ কোনো যোগ্যতা ছিলো না বলে অভিযোগ সিলেকশন বোর্ডের সদস্যদের। তারা একেবারেই নারাজ ছিলেন। কিন্তু কি আর ভিসির চাপের কাছে তারা হেরে যান।

এদিকে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার শেষে যখন নামের সুপারিশের তালিকা বোর্ডের সদস্যদের দেখানো হয় তখন তারা সেখানে পাঁচ জনের নাম দেখতে পান। এসময় বোর্ডের একাধিক সদস্য ভিসিকে প্রশ্ন করলে তিনি সে বিষয়ে কোনো উত্তর না দিয়ে আপনারা এখানে স্বাক্ষর করেন বলে তিনি নিজেই প্রথমে স্বাক্ষর করেন। তারপর অন্যদের স্বাক্ষর করতে বলেন। এসবের এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে ক্ষেপে যান বিভাগের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সদস্য অধ্যাপক এফ এম কায়সার। এসময় অন্যরা ভিসিকে বিষয়টি ভেবে দেখার কথা বললেও তিনি সে বিষয়ে কর্ণপাত না করে সবাইকে স্বাক্ষর করতে জোর করেন। তখন অন্য সদস্যদের তীব্র আপত্তি থাকলেও যেহেতু ভিসি তাকে নিবেনই, সেজন্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও সবাই স্বাক্ষর করেন বলে তথ্য মিলেছে।

এ ব্যপারে বোর্ডের একাধিক সদস্য জানান, সিলেকশনের নামের তালিকা করার পূর্বে বোর্ডের সদস্যদের মতামত নিতে হয়। অথচ ভিসি কারো মতামত না নিয়ে নিজ ক্ষমতা বলে নামের তালিকা তৈরি করেন এবং সবাইকে সেখানে স্বাক্ষর করতে জোর করেন। অথচ তিনি এরকম করতে পারেন না বলে তাদের অভিযোগ সকলেরই।

কে ওই সিদ্ধার্থ দে:

ওই পদে সুপাশিপ্রাপ্ত প্রার্থী সিদ্ধার্থ দে এর বিরুদ্ধে রয়েছে নানান অভিযোগ। ছাত্রাবস্থায় একাডেমিক ডিসিপ্লিন না মানা, একাধিকবার জ্যেষ্ঠ শিক্ষকবৃন্দের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনার্স শ্রেণিতে ফেল করা ইত্যাদি অভিযোগের কারণে বারবার প্রভাষক পদে আবেদন করলেও বিভাগের শিক্ষকবৃন্দের আপত্তির কারণে তাকে শিক্ষক পদের জন্য প্রতিবারই অযোগ্য বিবেচনা করা হয়েছে। কেউ তাকে নিতেও রাজি হননি। সবার বক্তব্য এধরনের শিক্ষক নেয়া হলে বিভাগের পরিবেশ নষ্ট হবে। শিক্ষার্থীরা নানান সমস্যায় পড়বে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিলেকশন বোর্ডের এক সদস্য বলেন, বিভাগের শিক্ষকরা তাকে নিতে চান না। বোর্ডে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অলক রায় বলেছিলেন, আমার মনে হয় না, সিদ্ধার্থ দে এর পড়ানোর যোগ্যতা আছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে পিএইচডি বাধ্যতামূলক ছিলো। ক্যান্ডিডেটদের মধ্যে বিভাগের দুজনের পিএইচডি ছিলো। এর আগে তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার পদে আবেদন করেছিলেন কিন্তু তাকে নেয়া হয়নি। সাধারণত লেকচারার পদে কাউকে একবার না নিলে পরে আর তাকে নেয়া হয় না। তার সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি, ওই ছেলে বিভাগে ভালো কাজ করেছে বলে পরিচিত নয়। তাকে নেয়া একেবারেই ঠিক নয়।

তিনি আরও বলেন, দুই বছর আগে প্রিন্ট মেকিং বিভাগে একই পদে এরকম এক ঘটনা ঘটলেও ওই প্রার্থীকে নেয়া হয়নি। তখন বোর্ডের একাধিক সদস্য ইতিবাচক মন্তব্য করলেও ভিসি বলেন, বাইরে থেকে কেন নিতে হবে? ওই প্রার্থী ওই বোর্ডে সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী ছিলো। কিন্তু তাকে নেয়া হয়নি কারণ তিনি অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন। অথচ সেই ভিসি এখানে আবার ভিন্ন ও স্ববিরোধী ভূমিকা পালন করলেন। আমরা আর কি করতে পারি। এভাবে তো প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না।

ওই শিক্ষককে পাল্টা প্রশ্ন করা হয় আপনারা কেন স্বাক্ষর করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার আবেদনের যোগ্যতা আছে কিন্তু কাজের কোয়ালিটি নেই। বোর্ডে একজন বললেন, আমরা চারজনকে প্রমোশন দিচ্ছি আবার তাকেও নিচ্ছি। অথচ তার এমন কোনো বিশেষ যোগ্যতা নেই যে তাকে নিতে হবে। আসলে কাগজটা যখন ভিসি মহোদয় সাইন করে পাশের একজনকে দিলেন তখন একজন বললেন, স্যার আপনি ভেবে দেখেন। তখন ভিসি বললেন, না না, আপনারা এমন বইলেন না। তাকে নেন। স্বাক্ষর করে দেন।

এভাবেই তিনি আমাদেরকে ইনসিস্ট করেছেন স্বাক্ষর নিতে। কেউই খুশি বা একমত হয়ে স্বাক্ষর করেনি। ভিসি স্বাক্ষর করার কথা সবার পরে অথচ তিনি করলেন সবার আগে। এ বিষয়ে তিনি আলোচনা করারও সুযোগ দেননি। খুবই তাড়াহুড়ো করে তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করে দিয়েছেন। আমরা নিজেরাই হতবাক।

কে ওই সিদ্ধার্থ দে:

ওই পদে সুপাশিপ্রাপ্ত প্রার্থী সিদ্ধার্থ দে এর বিরুদ্ধে রয়েছে নানান অভিযোগ। ছাত্রাবস্থায় একাডেমিক ডিসিপ্লিন না মানা, একাধিকবার জ্যেষ্ঠ শিক্ষকবৃন্দের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনার্স শ্রেণিতে ফেল করা ইত্যাদি অভিযোগের কারণে বারবার প্রভাষক পদে আবেদন করলেও বিভাগের শিক্ষকবৃন্দের আপত্তির কারণে তাকে শিক্ষক পদের জন্য প্রতিবারই অযোগ্য বিবেচনা করা হয়েছে। কেউ তাকে নিতেও রাজি হননি। সবার বক্তব্য এধরনের শিক্ষক নেয়া হলে বিভাগের পরিবেশ নষ্ট হবে। শিক্ষার্থীরা নানান সমস্যায় পড়বে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কটুক্তি করে অবশেষে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য বরাবর লিখিত পত্র দিয়েছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষক ড. সিদ্ধার্থ দে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু নীল-দলের তৎকালীন সভাপতি ড. সিদ্ধার্থ দে উপাচার্য বরাবর লিখিত দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।

লিখিত ক্ষমার বিষয়টি জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ড. সিদ্ধার্থ দে তার নিজের ভুল বুঝতে পেরে আমার কাছে লিখিত ক্ষমা চেয়েছেন । আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। তিনি আরো জানান, ভবিষ্যতে এমন আর কোন কিছু হবে না বলেও তিনি (সিদ্ধার্থ) বলেছেন।

এদিকে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির বলেন, গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগে দুই সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সিদ্ধার্থ দে নামের এক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটা নিয়ে আমি সিন্ডিকেটে আপত্তি জানিয়েছি। আমি বলেছি এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মর্যাদাকর হবে না। 

তবে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের দাবি নিয়ম মেনেই সব করা হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগে সিদ্ধার্থ দের নিয়োগ নিয়মানুযায়ীই হয়েছে। বোর্ড মেম্বররা আপত্তি জানিয়েছে কি না, সেটা আমার জানা নেই।

ঢাকা, ২৮ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ