জাবি লাইভ: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সাম্প্রতিক সময়ে পরপর দুটি সিনেমা 'দিন দ্য ডে' এবং 'হাওয়া' সিনেমার প্রচারণাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
শিক্ষার্থীদের দাবী বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্যই সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম কেন্দ্র। কিন্তু তাই বলে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কেনো সিনেমার প্রমোশনের জায়গা বিশ্ববিদ্যালয় নয়! কেননা প্রতিটি সিনেমার প্রচারণাকে ঘিরে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা বিলবোর্ড, পোস্টারে ছেয়ে যায়। এতে করে একদিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে লাল ইটের নান্দনিক স্থাপনাগুলো কোনো সিনেমা হলের দেয়ালের রূপ ধারণ করছে।
সাম্প্রতিক মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত 'হাওয়া' সিনেমার প্রমোশনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সহ বিভিন্ন অনুষদের দেয়ালে ওই সিনেমার পোস্টারিং ও গ্রাফিতি করতে দেখা গেছে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের জাবি শাখার আহবায়ক জহির ফয়সাল জাবি শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্লাটফর্ম 'আমরাই জাহাঙ্গীরনগর' গ্রুপে ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, 'বিসিএস কোচিং, তেলাপোকা, ছারপোকা, মলম, হারবাল আরো যতো কোম্পানি আছে দ্রুত আসুন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়াল বরাদ্দ চলছে। দলে দলে সবাই আসুন, সব হাওয়া করে দিয়ে যান।'
৪৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম পাপ্পু বলেন, 'এই ননসেন্স কাজটা কারা করেছে? শিক্ষার্থীরাই ভাবছেন কি? এটা তো জাতীয় রাজনৈতিক ব্যাপার না। ক্যাম্পাসের কোনো সংগঠন, ক্লাবেরও নিজস্ব অনুষ্ঠান, সিনেমা না। এমনকি কোনো সংগঠনকে এরকম কাজ এখনো করতে দেখিনি। এখন প্রত্যেকটা সিনেমা মুক্তির আগে যদি তারা এসব করে, করায় জাবির অবস্থা ভালোই হবে।'
তিনি আরও বলেন, এই কাজে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি? আর যদি নিয়েই থাকে তাহলে অনুমতিটা কোন উদ্দেশ্যে দিয়েছে তা জানার আগ্রহ প্রকাশ করছি!'
এদিকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম শাহনাওয়াজ বলেন, 'একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের বাণিজ্যিক সিনেমা প্রমোশন করবে এটা আমি কখনো দেখিনি। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে করা সিনেমা কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় প্রচারণা করা উচিত না। বড় কথা হলো এই সমস্ত সিনেমা প্রচারণাকে কেন্দ্র করে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় পোস্টারে ছেয়ে গেছে, যেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রশাসনের উচিত এদিকে নজর দেওয়া তার থেকে বড় কথা হলো শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে আরও রুচিশীল হওয়া উচিত। শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক রুচির পতন ঘটেছে। একটা সিনেমা প্রচারণার জন্য আসলো আর সেখানে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়লো এটা আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রুচিশীল সংস্কৃতির সাথে যায় না।'
ঢাকা, ২৫ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআর//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: