Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

বৃষ্টিস্নাত ক্যাম্পাসে জাবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২২, ২২:৫৮

বৃষ্টিস্নাত ক্যাম্পাস

আতিকুর রহমান আতিক, জাবি: বর্ষাকালের ঠিক এখনো দশদিন বাকি। কিন্তু এরই মধ্যে বাংলা কবিতার মতো বৃষ্টিস্নাত সজীবতার রূপ নিয়ে হাজির হয়েছে প্রকৃতি। প্রকৃতির ধারা এ বৃষ্টি কমবেশি সবাই পছন্দ করে। তবে সেই বৃষ্টি যদি হয় ক্যাম্পাসে, তাহলে তো কথায় নেই! বিশেষত গ্রীষ্মকালের হুটহাট বৃষ্টি ক্যাম্পাসে এনে দেয় গভীর নীরবতা। বৃষ্টি পড়ার আওয়াজ যেন বর্ষার দাম্ভিকতার জানান দেয়। সৃষ্টি করে মধুর কলতান! আকাশে দেখা যায় কালো মেঘের মিছিল। বৃষ্টির দিন যেমন অলসতার মূর্ত প্রতীক! আবার কারো মনে সঞ্চার করে গভীর সঞ্চলতা।

সবুজের মহাসমারোহে ঘেরা বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি এ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য্য বৃষ্টির দিনে আরও বহুগুণে বেড়ে যায়। বৃষ্টির ছোঁয়ায় জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস এক অপরূপ ধারণ করে। বৃষ্টিতে ক্যাম্পাসের চারিদিক যেন ভরে যায় নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে। বৃষ্টির কণার আলতো ছোঁয়া মনকে পুলকিত করে এক অন্যরকম অনুভূতি দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পিচঢালা পথ, শহীদ মিনারের পাদদেশ, অমর একুশে প্রান্তর, পরিবহন চত্ত্বর, ক্যাফেটেরিয়া, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবন, সিডনি ফিল্ড, লন্ডন ব্রিজ, মনপুরা, শান্তিনিকেতন সহ সব জায়গা যেন বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে পবিত্রতার স্বাদ পায়।

বৃষ্টিস্নাত দিনে ক্যাম্পাস নিরব থাকলেও অনেক সময় চালু থাকে ক্লাস। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে বেড়ে যায় ব্যস্ততা। কেউ ছাতা নিয়ে বা কেউ ক্লাসের উদ্দেশ্যে বের হয় রেইনকোট পড়ে। যা শিক্ষার্থীদের মনে ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতার সঞ্চার করে। বৃষ্টিস্নাত দিনে কারো ভালো লাগে চায়ের আড্ডা দিতে বা কারো ভালো লাগে খিচুরি খেতে। আবার রাস্তাঘাট কাঁদায় জমে থাকায় কেউবা হয় বিরক্ত। তবে যত অসুবিধাই থাকুক কমবেশি সবাই পছন্দ করে বৃষ্টিস্নাত ক্যাম্পাস।

ক্যাম্পাসে বৃষ্টিস্নাত দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল মিয়া তার স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন,, 'বৃষ্টির দিনে ক্লাসে যেতে কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হতে হলেও ক্লাস করতে ভীষণ ভালো লাগে। ক্লাসের ফাঁকে কিংবা ক্লাস শেষে বন্ধুদের সাথে চা দোকানের আড্ডা দেয়ার মজাই আলাদা। পাশাপাশি প্রকৃতির নিরবতা ও সবুজ স্নিগ্ধতা বেশ নজর কাড়ে বৃষ্টিস্নাত ক্যাম্পাসে।'

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া সোলাইমান তার ভাবনা শেয়ার করতে গিয়ে ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন,, 'আমি জাহাঙ্গীরনগর না আসলে এভাবে বৃষ্টি বিলাস করতে পারতাম না। কৃষ্ণচূড়ার সাথে বৃষ্টির যে অসাধারণ সমন্বয় তা মুগ্ধ করে। বৃষ্টিতে ক্লাস শেষে মুরাদ চত্বরে এক কাপ চা তে চুমুক দেয়ার অভিজ্ঞতা সত্যি-সত্যিই দারুণ। পাশাপাশি হলের জানালা দিয়ে বাইরের সবুজ রঙের সাথে বৃষ্টি মিলেমিশে একাকার হওয়ার দৃশ্যও অনন্যসাধারণ।'

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রুবাইয়া জান্নাত তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন ক্যাম্পাসলাইভকে এভাবে, 'বৃষ্টি খুব বেশি একটা পছন্দ করিনা! মেঘলা আকাশের দিকে তাকালেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। আর যদি বৃষ্টির মধ্যে কোনো কারণে বাইরে বের হতে হয় তাহলে তো বৃষ্টি আরও বেশি বিরক্তের কারণ হয়ে দাঁড়ায়! তবে বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খেতে, ঘুমাতে ভালোই লাগে।'

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হেনা সুলতানা তার বৃষ্টিস্নাত দিনের ভাবনায় বক্যাম্পাসলাইভকে বলেন,, 'আমার বৃষ্টিমুখর মুহূর্তে এক কাপ চা- বিস্কুট খেতে আর জানালা দিয়ে বৃষ্টির ঝমঝম আওয়াজ শুনতে ভীষণ ভালো লাগে। আর রোমান্টিক গানের সাথে বৃষ্টির পানি হাতে নিয়ে খেলা করার কথা না বললেই নয়! এটি বৃষ্টিস্নাত দিনের সবচেয়ে বড় রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।'

বৃষ্টিস্নাত দিনের বৃষ্টি শুধু পরিবেশের ময়লা আবর্জনাই নয়, এটি মনের বেদনাও দূর করে। আবার বৃষ্টিস্নাত পরিবেশ যেমন শিক্ষার্থীদের করে তোলে কোমল, ঠিক তেমনিভাবে জানান দেয় দূরন্ত গতিতে ছুটে চলার অভিপ্রায়।

ঢাকা, ০৩ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ