Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন, অপকর্ম, আরেক ছাত্রীর অভিযোগ আসছে...

ঢাবির অধ্যাপক বিশ্বজিৎকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে তোলপাড়!

প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০২২, ০২:৪৬

অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ। ঢাবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক।

ঢাবি লাইভ: তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি নাকি মানুষ গড়ার কারিগর। একেই সাথে যৌন নিপীড়কও বটে। এটা পুরানো স্বাভাব। এধরনের ঘটনার সঙ্গে আগেও তিনি জড়িত ছিলেন। কিন্তু লোক লজ্জার ভয়ে ও আত্ম সম্মানবোধ থেকে অনেকেই মুখ খুলেননি তার বিরুদ্ধে। তবে তারা ধীরে ধীরে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। নিজ ছাত্রীদের কলে বলে চলে কৌশলে তিনি হাত করার নোংড়া সব আয়োজন করেন হর-হামেশাই। অবশেষে ধরা খেয়েছেন। তিনি আর কেউ নন। তিনি অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ। ঢাবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক। একই বিভাগের ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি। কিন্তু সেই পুরানো অভ্যাস তিনি ছাড়তে পারছেন না। আরেক ছাত্রী অভিযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অচিরেই তিনি অভিযোগ করবেন বলে তথ্য মিলেছে।

আরো জানা গেছে তাকে বিভাগের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে তার নামে বরাদ্দ করা কক্ষ বাতিলসহ কয়েকটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। সংশ্লিস্টরা জানান, গত ২৯ মার্চ বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় ড. বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে এ সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। একাডেমিক কমিটির ওই সভায় বিভাগের ১৮ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, গত মার্চ মাসে বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনেন একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। পরে ওই ছাত্রী বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হকের কাছেও অভিযোগ করেন। আর বলে তাকে কিভাবে কেমন করে যৌন হেনস্থা করা হয়।

সংশ্লিস্টরা আরো জানান, গত ২৯ মার্চ বিভাগটির একাডেমিক কমিটির সভা ডাকা হয়। ওই সভায় বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা মেলে। ওইদিন দুপুরে অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত বিবরণী অনুযায়ী, সভায় বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক অভিযুক্ত বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে একজন ছাত্রীর আনা যৌন নিপীড়নের লিখিত অভিযোগটি উপস্থাপন করেন।

এ সময় তিনি লিখিত অভিযোগপত্রটি একাডেমিক কমিটির সভায় পাঠ করে শোনান। এসময় সকলেই ক্ষেপে যান বিশ্বজিতের বিরেদ্ধে। এতে বলা হয়, ওই সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ তার ভুল হয়েছে বলে মনে করেন। তিনি নিজের ভুলের জন্য একাডেমিক কমিটির কাছে ক্ষমা চান। কিন্তু অনেক বিরুপ মন্তব্য করেন তার ব্যাপারে। কেউ তার পক্ষে কোন মতামত দেননি। বরং বলেছে নৈতিক স্খলনের শাস্তি তাকে পেতেই হবে। তার কোন ক্ষমা নেই।

পরে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে একাডেমিক কমিটি সর্বসম্মতভাবে চারটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করেন।

সেগুলো হচ্ছে:
ক. সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। (একাডেমিক কার্যক্রমের মধ্যে পড়বে সব ধরনের ক্লাস নেওয়া, পরীক্ষায় প্রত্যবেক্ষণ, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, এমফিল-পিএইচডি গবেষণা তত্ত্বাবধায়ন, পরীক্ষা কমিটির কাজে অংশগ্রহণ প্রভৃতি)। তাকে ভবিষ্যতে কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে যুক্ত করা হবে না এবং সিএন্ডডি ও একাডেমিক কমিটির সভায় তাকে ডাকা হবে না। এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতেও কার্যকর থাকবে।

খ. তার নামে বরাদ্দকৃত বিভাগীয় কক্ষ বাতিল করা হোক।

গ. আরও বৃহত্তর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে কি না সেটি অভিযোগকারীর সম্মতি সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।

ঘ. তদন্তকালীন সময়েও একাডেমিক কমিটির এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, আমি তো কিছুই জানি না। এটি তো একেবারে বিভাগের নিজস্ব বিষয়। গোপন বিষয়। অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ ২০১৭ সালের ১১ জুন থেকে টানা চার বছর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি, নিয়োগ বাণিজ্য, কেনাকাটায় অর্থের অপচয়সহ বিভিন্ন অভিযোগে আলোচনায় ছিলেন এই অধ্যাপক।

ভিসি হিসেবে প্রথম মেয়াদের দায়িত্ব পালন শেষে ২০২১ সালের ১৪ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক পদে পুনরায় যোগদান করেন তিনি। তার ব্যাপারে অনেক শিক্ষার্থীমুখ খুলেছেন। বলেন একজন শিক্ষক এমন হতে পারে তা ভাবতেও অবাক লাগে।

ঢাকা, ১৪ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ