Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

সেই মুরাদের বক্তব্য নিয়ে জাবিতে তোলপাড়

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বার ২০২১, ০৩:১১

নারীর প্রতি অশোভন মন্তব্যসহ নানামুখী বির্তকে মুখে সদ্য তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসান। সম্প্রতি তারেক রহমানের কন্যা জায়মা রহমান সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন সাবেক এই তথ্য প্রতিমন্ত্রী। গত ১ ডিসেম্বর ডা. মুরাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভ ভিডিওতে জায়মা রহমানের ব্যাপারে বাজে মন্তব্য করেন। পরে এই ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।

শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এবার সে বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর প্রতিক্রিয়া ক্যাম্পাসলাইভের পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেছেন ক্যাম্পাসলাইভ২৪ডটকম-এর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মোহাম্মদ অনিক মিয়া

ডা. মো. মুরাদ হাসানের ওই বক্তব্যের ব্যাপারে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী উর্মি ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, মন্ত্রীর বক্তব্যে নারীদের প্রতি অবমাননা এবং বর্ণ বৈষম্যের বিষয়টি উঠে এসেছে। এই ধরনের মানুষ কীভাবে এসব পদে আসেন তা আমি বুঝতে পারি না। এমন মানুষদের নিয়ে কথা বলার মতো ভাষা আমার জানা নেই। তাকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যদেশে হলে তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হতো।

তিনি আরও বলেন, মন্ত্রী বলে মানুষ ভয়ে এখন প্রতিবাদ এবং ন্যায্য ও সঠিক দাবি দাওয়া তুলে ধরতে পাচ্ছেন না। সবার মধ্যে এক ধরনের ভয়ের সংস্কৃতি ঢুকে গেছে। আমি নিজেই এখন কিছু বলতে ভয় পাই। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ ধন্যবাদ যে, তিনি নারীদের ভালোবাসে এবং তার প্রমান দিয়েছেন মন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র পেশ করতে বলায়। আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডাঃ মুরাদের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

ফিন্যান্সের শিক্ষার্থী শম্পা ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, 'আমাদের দেশে জবাবদিহিতা আরো জোরদার করা উচিত। মনে হয় দেশের জনগণ অনেকটা অন্যদিকে মগ্ন হয়ে গেছে। তাই তারা আর তেমন কিছু প্রতিবাদ করছেন না। কারণ বিচার পাওয়াটা অনেকটা দুরুহ কাজ। আমরা পার্থিব উন্নয়নের দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছি, আমাদের মেধা মননের যে উন্নয়ন দরকার, চর্চার দরকার সেটি নিয়ে ভাবছি না!

শম্পা এসময় ডা. মুরাদের নারীবিদ্বেষী, কুরুচিপূর্ণ ও নারীর প্রতি অবমাননাকর' আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন।

পাবলিক হেল্থের শিক্ষার্থী মহুয়া ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'আমি মনে করি এটা কেবল রুচিহীনই না, এটা কোনো ভদ্র মানুষের ভাষা হতে পারে না। একজন প্রতিমন্ত্রী এ ধরনের ভাষায় কথা বলবেন! তার বক্তব্য মন্ত্রীসভার পুরো ভাবমূর্তিকে নষ্ট করেছে। তার বক্তব্য কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি আশা করি সরকার ও দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং এমন একটা মানুষ আমাদের সংসদে থাকবে তা আমি চাই না।'

তিনি আরো বলেন, 'এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি দেশের সব নারীর সম্মানহানি করেছেন। এর জন্য তাকে দেশের সব নারীদের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। শুধু মন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করলেই হবে না'। প্রতিমন্ত্রী হয়তোবা নিজের জনপ্রিয়তা বা দলের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা বাড়াতে এ ধরনের কথা বলেছেন। কিন্তু এটা দলের কোনো বিষয় না। এতে করে জাতির একটা বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যায়।'

পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষর্থী শ্রাবন্তী ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, 'সংবিধানের ওপর শপথ নেওয়া একজন মানুষ এ ধরনের বক্তব্য দেবে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এটা সংবিধান অবমাননা। বাংলাদেশের দণ্ডবিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয় শুধু পদত্যাগপত্র গ্রহন ছাড়াও আইনের আওতায় আনা উচিত ছিল এবং সংসদ থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সাধারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে বিশ্বাস করছে না। তাছাড়া, এখানে রাজনৈতিক ক্ষমতার বিষয়টি জড়িত আছে। আমি প্রত্যাশা করি, এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান হবে।'

নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগের নাম এক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'এমন দায়িত্বশীল একজন ব্যক্তি কীভাবে এই কুরুচিপূর্ণ কথা বলতে পারে তা আমারে বোধগম্য নয়। সেই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রতিমন্ত্রী দেশের সব নারীকে অবমাননা করেছেন। কার সম্পর্কে বলা হয়েছে সেটা বড় কথা না, কথা হলো একজন নারী সম্পর্কে বলেছেন। একজন নারী সম্পর্কে এমন দায়িত্বশীল কোনো ব্যক্তি এমন বক্তব্য রাখতে পারে এটি অকল্পনীয়, অভাবনীয়, এটা শুধু কুরুচিপূর্ণই না, এটা ভয়াবহ অন্যায়। কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী এভাবে কথা বলতে পারেন না।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইতিহাস বিভাগের আরেক শিক্ষর্থী ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, আমাদের দেশে রাজনৈতিকভাবে সিলেকটিভ ওয়েতে প্রতিবাদ জানানোর একটা সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। শুধু নারীদের প্রতিবাদ করতে হবে এমন না। দেশের সব মানুষকেই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। রাজনীতি এক জিনিস, শালীনতা, নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং সেটাকে প্রকাশ করা আরেক জিনিস। আমাদের দেশে নারী নেত্রীদের মধ্যে রাজনৈতিক ভিন্নতা আছে। যার যে রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকুক না কেন এই বিষয়ে নীরব না থেকে দলমত নির্বিশেষে সবার সোচ্চার হওয়া উচিত, যাতে আর কেউ নারী বিদ্বেষী কথা না বলতে পারে।

ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ