ঢাবি লাইভ: সচিবালয়ে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার প্রতিবাদে নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বুধবার (১৯ মে) ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য নিশ্চিত করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ১৭ মে একটি জাতীয় দৈনিকের একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হেনস্তা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি গভীর প্রকাশ করছে এবং সচিবালয়ের মত জায়গায় এরকম ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুসারে উক্ত সাংবাদিক স্বাস্থ্য সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি সরিয়েছেন এবং অনুমতি না নিয়ে ছবি তুলেছেন। কিন্তু সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষ, যেখানে সচিবের সঙ্গে সাক্ষাত প্রার্থীরা অপেক্ষমাণ থাকে; সেখানে রাষ্ট্রীয় স্পর্শকাতর গোপন নথি অন্যের দৃশ্যমানতায় রাখা কর্তব্য অবহেলার শামিল। এ ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন জেগেছে যে, ব্যক্তি অনিয়মের গোপন নথি রাষ্ট্রীয় গোপন নথি বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে কিনা? সম্প্রতি উক্ত সাংবাদিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাষ্ট্রের স্বার্থ সমুন্নত করলেও কারও কারও বিরাগভাজন হয়েছেন।’
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান অতিমারী পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন তা সরকারের কতিপয় কর্মকর্তার দুর্নীতি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ম্লান হতে দেওয়া যাবে না। কোনও ব্যক্তির অনিয়ম বা দুর্নীতির দায়ভার রাষ্ট্র ও সরকার নিতে পারে না। সমাজের যেকোনও অসঙ্গতি তুলে ধরাই গণমাধ্যমের কাজ। আর পেশাগত দায়িত্ব পালনে ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনানুসারে সুরাহা হওয়া বাঞ্ছনীয়।
কিন্তু উল্লিখিত সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা ও অসুস্থ হওয়ার পরও সচিবালয়ের মত রাষ্ট্রের শীর্ষ প্রশাসনিক দফতরে দীর্ঘসময় ধরে আটকে রেখে মানসিকভাবে নির্যাতনের ঘটনা চরম অপেশাদারিত্ব, কর্তৃত্ববাদী ও অসৌজন্যমূলক মনোভাবের চরম বহিঃপ্রকাশ। এ ঘটনা সাধারণ মানুষের কাছে এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশে গণমাধ্যমে বিদ্যমান স্বাধীনতা সম্পর্কে একটি ভুল বার্তা দিচ্ছে। আমরা আশা করবো সরকার তার গৃহীত পদক্ষেপের মাধ্যমে এটিকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে প্রমাণ করবেন।’
‘সমাজের সুষম উন্নয়নের স্বার্থে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পেশার মানুষের মধ্যে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার সম্পর্ক হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু আমলাতন্ত্রের কতিপয় ব্যক্তির অদক্ষতা, অপেশাদারিত্ব ও কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের কারণে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত অনেকের মধ্যে নানা সময় ক্ষোভ ও হতাশা লক্ষ্য করা গেছে। এ ধরনের পরিস্থিতি সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন করার প্রক্রিয়া কিনা খতিয়ে দেখা উচিত।’
বিজ্ঞপ্তিতে সুষ্ঠু তদন্তে মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অভিযুক্ত সাংবাদিককে আইনগত সুরক্ষার দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে মুক্ত গণমাধ্যমের পরিপন্থী সকল প্রতিবন্ধকতা অপসারণের আহ্বান জানানো হয়।
ঢাকা, ১৯ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: