Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ২১শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

জাবি ভর্তি আবেদন ফরমের মূল্য বৃদ্ধি

প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবার ২০১৬, ০২:১১

জাবি লাইভ: ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির মূল্য বৃদ্ধির অযুহাত দেখিয়ে প্রতিবছর ভর্তি ফরমের মূল্য বৃদ্ধি করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু প্রতিবছরই ভর্তি প্রতিযোগিতায় অধিকাংশই কৃষক বা হত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থী। যারা আশার আলো দেখতে স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেন।

আর যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতিতেই একটা মোটা অংকের টাকা হিসাবে চলে আসে তাহলে স্বভাবতই হতাশ হওয়া ছাড়া আরকিছু হবেনা শিক্ষার্থীদের দ্বারা।

আর তাইতো ভর্তিচ্ছুদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা না করেই শিক্ষকরা ভর্তি পরীক্ষা থেকে অনৈতিকভাবে বেশি টাকা নিজেদের পকেট নিতেই প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষার ফরমের দাম বৃদ্ধি থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। এতে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীরা যেমন আর্থিক সংকটে পড়ছেন তেমনি অনেকে টাকার অভাবে ভর্তি পরীক্ষা থেকেই বঞ্ছিত হচ্ছে।

ঠিক এমনটাই মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

গত কয়েকটি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফরমের মূল্য বৃদ্ধিও হিসেব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, জীববিজ্ঞান অনুষদ এবং বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ফরমের মূল্য ছিল ৫০০ টাকা।

২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে এই ফরমের মুল্য ২৫ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৫২৫ টাকা। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে আরো ২৫ টাকা বাড়িয়ে ৫৫০ টাকা করা হয়েছে। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে এই চারটি অনুষদের ফরমের মূল্য ছিল ৩৫০ টাকা।

এ ছাড়া কলা ও মানবিক অনুষদে গত বছর বিভাগভিত্তিক পরীক্ষা হলেও এ বছর ইউনিটভিত্তিক পরীক্ষা নেওয়ায় মূল্যও নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫০ টাকা। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে এই ইউনিটের ফরমের মূল্য ছিল ৩৫০ টাকা।

গত দুই শিক্ষাবর্ষের ভর্তি টাকা ভাগবাটোয়ারার হিসেব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা থেকে আয় হয় ৮ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে স্টেশনারী ক্রয় বাবদ ১ কোটি, টেলিটক চার্য বাবদ দেওয়া হয় ৮৪ লক্ষ টাকা আর বাকি ৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা যায় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পকেটে।

২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি বাবদ আয় হয় ৮ কোটি ৮৫ লক্ষ ৪৬ হাজার ২২৫ টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টেলিটকে শতকরা ১০ টাকা হারে মোট ৮৮ লাখ ৬০ হাজার ২২ টাকার সার্ভিস চার্জ প্রদান করা হয়। আর বাকি ৭ কোটি ৯৭ লাখ ৪০ হাজার ২০৩ টাকা শিক্ষকরা ভাগবাটোয়ারা করে নেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে ব্যয় করার জন্য ভর্তি পরীক্ষার আয়ের ৪০ শতাংশ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে সম্পূর্ন টাকা শিক্ষক কর্মকর্তাদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে দেন।

‘জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট’র সভাপতি জুবায়ের টিপু বলেন, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হীনপস্থায় টাকা শিক্ষকদের পকেটে ভরার নিয়ম কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু নেই। কিন্তু এ বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি ট্রেডিশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভর্তি পরীক্ষা এলেই কিভাবে নিজের পকট গরম করা যায় সেই চেষ্টায় তৎপর থাকেন। এ ধরণের ঘৃণ্য কাজ থেকে শিক্ষকদের সরে আসার জোর দাবি জানান তিনি।

ছাত্র ফ্রন্টের জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সুস্মিতা বলেন, এমনিতেই দরিদ্র শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে একটি ঘৃণ্য কাজ করছে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা যদি নিয়ম বহির্ভূতভাবে উন্নয়ন খাতের টাকা নিজের পকেটে ভরেন তাহলে সেটি কোন পর্যায়ের মানসিকতায় এমনটি করতে পারেন শিক্ষক মহোদয়গণ।

বিশ্ববিদ্যালয় ডেপুুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা-১) ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কমিটির সচির মোহাম্মদ আলী বলেন, ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় ভর্তি পরীক্ষার ফরমের মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সব সময় ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সুযোগ সুবিধার দিকে লক্ষ রাখি।

বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেন, সরকারী নিয়ম অনুযায়ী যদি কোন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা থেকে আয়কৃত টাকার নির্দ্দিষ্ট অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা না রাখে তবে অডিট করার সময় আপত্তি জানায়। তবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এ টাকা জমা রাখে। কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয়ের খাতে এটা দেখায়।


ঢাকা, ১৩ অক্টোবর, (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)// আইএইচ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ