Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ২১শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ঢাবি জালিয়াত চক্রের সদস্য ছাত্রলীগ নেতার জিম্বায়

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবার ২০১৬, ০২:৩৩

 

ঢাবি লাইভ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন পাইয়ে দেয়ার নামে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন না দিয়ে ওই ছাত্র টাকা নিয়ে আত্মগোপন করেন। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম ইমরান হোসেন অভি। স্যার এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী অভি অর্থনীতি বিভাগের ২০১২-২০১৩ সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তাকে জিম্মায় দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক। থানায় মুচলেকা দিয়ে অভিকে ছাড়িয়ে আনেন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি মেহেদী হাসান। শাহবাগ থানার ওসি বলেন, গত সোমবার ইমরান হোসেন অভি নামের এক ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থানায় সোপর্দ করে। অভিকে ছাড়িয়ে নিতে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা তদবির করেন।

পরে সেদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নির্দেশে প্রক্টরের সম্মতিতে অভিকে সেই নেতার জিম্মায় দেয়া হয়েছে। তারপরে অভিকে যদি মারধর করা হয় তার দায়ভার তো থানা নিবে না। থানা থেকে ছাড়িয়ে নেয়ার পর অভিকে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে মেহেদীর কক্ষ ৩৫৭তে নিয়ে আটকে রাতভর নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে।

গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন দেয়ার কথা বলে অভি তার এক মামার কাছ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা নেয়। পরে অভি প্রশ্ন না দিয়ে টাকাসহ আত্মগোপন করে। অভিকে খুঁজে না পেয়ে কিছুদিন পূর্বে তার মামা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আরেক শিক্ষার্থী আমিনুলকে বিষয়টি জানান। গত সোমবার আমিনুল অভিযুক্ত অভিকে মেহেদীর কাছে নিয়ে যান। মেহেদী প্রক্টরকে জানিয়ে অভিকে শাহবাগ থানায় দেন।

পরের দিন প্রক্টরকে জানিয়ে থানায় মুচলেকা দিয়ে অভিকে ছাড়িয়ে নেন মেহেদী। তাকে মুহসীন হলের নিজের কক্ষে (৩৫৭ নম্বর) আটকে রাখেন। খবর পেয়ে প্রক্টর ছেলেটিকে উদ্ধার করতে এসে তাকে পাননি। ওই সময় মেহেদী হলে ছিলেন না। প্রক্টরের সঙ্গে তার মুঠোফোনে কথা হয়েছে বলে প্রক্টর নিশ্চিত করেন। মেহেদীর কক্ষে আমিনুলসহ আরও ৪/৫ জন অভিকে ব্যাপক মারধর করে। পরে ঘটনা জানাজানি হলে অভিকে কক্ষ থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে মেহেদী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা অংশ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে তিনি জিম্মায় নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রফেসর ড. এ এম আমজাদ বলেন, তিনদিন পূর্বে মেহেদী ও আমিনুল আমার কাছে অভিকে নিয়ে আসে।

তারা বলে, অভি জালিয়াতি চক্রের সদস্য। পরে তার ব্যাগ তল্লাশী করে ৫ লাখ টাকা ও ৩ লাখ টাকার দুইটি পুরাতন চেক পাওয়া যায়। সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে অভি জালিয়াতি চক্রের সদস্য বলে স্বীকার করে। পরে তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। প্রক্টর বলেন, অভিকে থানায় দেয়ার পর মেহেদীকে অভি‘র ভাই ও মামা কল দিয়ে তার জিম্মায় নিতে বলেন। অভি‘র বাড়ি যশোর।

তার ভাই যশোর শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তারা ঢাকায় এসে বিষয়টি মীমাংসা করবে বলে জানায়। পরে মেহেদী মুচলেকা দিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলে তাকে ছাড়িয়ে নেয়। তবে অভিকে মেহেদীর কক্ষে আটকে রাখা ও মারধরের বিষয়ে তিনি জানেন না বলে জানান।

ভর্তি পরীক্ষায় প্রতারনা করার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের কাছে না রেখে কেন তাকে ছাত্রলীগের নেতার জিম্মায় দিলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কোথায় রাখবো। রাখার কোন জায়গা নাই। থানায়ও ২৪ ঘন্টার বেশী রাখা যায় না। এছাড়া অভি‘র বিরুদ্ধে যেহেতু এই দুই বছর কোন অভিযোগ নাই তাই তাকে মামলায় যুক্ত করা হয়নি।

প্রফেসর ড. এ এম আমজাদ বলেন, অভি‘র বিরুদ্ধে একাডেমিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে ভিসি প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ওই ছেলের তো জেল হওয়া উচিত। সে কিভাবে থানা থেকে ছাড়া পেলো। থানা তো ওই ছেলের বিষয়ে তদন্ত করবে। তিনি বিষয়টি দেখছেন বলে জানান। ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, প্রথমে ধরিয়ে দিয়ে তারা ভালো কাজ করেছে। কিন্তু পরে যদি ছাড়িয়ে নেয় সেটা ভুল করেছে।

ঢাকা, ১২ অক্টোবর, (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)// আইএইচ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ