Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ২১শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ঢাবি'র 'মাইম অ্যাকশন' আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসবে

প্রকাশিত: ১২ অক্টোবার ২০১৬, ২১:১৪

ঢাবি লাইভ: ‘না বলা কথাগুলো না বলেই হোক বলা’ এই স্লোগানকে ধারণ করে ২০১১ সালের ২৭ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশন তথা মূকাভিনয়ের দল। (ডুমা)। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ধারাবাহিক সাফল্য অক্ষুণ্ণ রেখে সংগঠনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে নয় শুধু সারা দেশে জনপ্রিয় মূকাভিনয়ের দলে পরিণত হয়েছে।

দীর্ঘ পাঁচ বছরের পথচলায় মূকাভিনয়ের জগতে অবস্মরণীয় ভূমিকা রেখে চলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠনটি। প্রতি বছর কর্মশালার মধ্যদিয়ে নতুন নতুন মূকাভিনেতা তৈরি, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এই শিল্পটিকে পরিচিত করানোর ক্ষেত্রে অবদান রাখছে মাইম অ্যাকশন।

ইতোমধ্যে সারা দেশে ৩০০টির অধিক দলীয় এবং একক মূকাভিনয় প্রদর্শনী করেছে। ‘লাইট ভার্সেস ডার্কনেস’ তাদের বহুল জনপ্রিয় একটি মাইমোড্রামা।

দেশে ব্যাপক দর্শক প্রিয়তার পর ভারতের রাজধানী দিল্লীতে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছে ডুমা। উৎসবে ‘লাইট ভার্সেস ডার্কনেস’ প্রদর্শনী করবেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশন তথা মূকাভিনয়ের দল। মূকনাট্যটির ৫ম প্রদর্শনী ছাড়াও একক এবং স্ট্রিটি শো থাকছে শিল্পীদের।

আন্তর্জাতিক এই উৎসবে অংশ নিতে ১২অক্টোবর ঢাকা ত্যাগ করছেন ১৫সদস্যের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দলটি। চলতি মাসের ১৪-১৬তারিখ দিল্লীর শনিপাতে অবস্থিত জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হবে ‘বিশ্বমিল’ শিরোনামের আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসব।

প্রতিবছর এই সময় উৎসবটি আয়োজন করে থাকে জিন্দালের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ ছাড়াও নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, সিঙ্গাপুর, মালদ্বীপ সহ বিভিন্ন দেশ এই উৎসবে অংশগ্রহণ করবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের ১৫সদস্যের টিমের মডারেটর হিসেবে যাচ্ছেন বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান ও মাইম অ্যাকশনের মডারেটর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ফাদার ড. তপন ডি রোজারিও।

অন্য সদস্যরা হলেন- খায়রুল বাসার রেজভী, শাহরিয়ার শাওন, ফরিদ উদ্দীন, ইসরাত জাহান মুক্তি, কামরুন্নাহার মৌসুমী, এসএম জুম্মান সাদিক, অতসী আমিন, মো. রায়হান বাসার ভুইয়া, আলী আহসান, সাইফুল্লাহ মাহফুজ অর্ক, জেরিন মার্জান আশরাফি, সানোয়ারুল হক, সাইফুল্লাহ সাদেক ও মীর লোকমান। উৎসব শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দলটি ২০ অক্টোবর ঢাকায় ফিরে আসবেন।

মাইমোড্রামা ‘লাইট ভার্সেস ডার্কনেস’ এর গল্প-ভাবনা ও নির্দেশনা রয়েছেন ঢাকা ইউনির্ভাসিটি মাইম অ্যাকশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালক তরুণ মূকাভিনেতা মীর লোকমান।

লাইট ভার্সেস ডার্কনেস’র গল্প-

‘পৃথিবীতে আগমনের পর আদম অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন! চারিদিকে শূন্যতা, নিস্তব্ধ-নীরবতা। একমাত্র সঙ্গী ছিলেন হাওয়া, তিনি কোথায় গিয়ে পড়েছেন তাঁর জানা নেই। বন-জঙ্গল মাড়িয়ে একাকি হেঁটে চলেছেন আদম। সামনে যেতেই তাজ্জব বনে গেলেন তিনি, এতো বিশাল ফুলের বাগান! নক্ষত্র-আকাশ-গ্রহাণুপুঞ্জের অপার সৌন্দর্যে বিমুহিত হলেন আদম।

একটু পরই দেখলেন অপূর্ব ঝর্ণধারা প্রবাহিত হতে। খানিক এগুতেই কাকে যেন চোখে পড়লো আদমের। গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেলেন। খুব পরিচিত মনে হচ্ছে! শিহরিত হচ্ছেন তিনি! কোন মানবী মনে হচ্ছে! মানবীও সামনে এগিয়ে এলেন। দু’জনের হাতে হাত ছুঁয়ে দেখে আদমের বুঝতে দেরি হলো না যে, তিনি আর কেউ নন, ‘তাঁর ‘প্রিয়তমা হাওয়া’।

মধুর মিলন ঘটলো আদম-হাওয়ার। আনন্দে আত্মহারা দু’জন। বিচরণ শুরু করলেন পৃথিবীতে। এই ধরাকে বাসযোগ্য করার উদ্যোগ নিলেন তারা। বাড়তে লাগলো মানব সন্তান….

ঐদিকে কুকর্মের দৃঢ়প্রতিজ্ঞা নিয়ে আগমন ঘটলো ডেভিলের। ভয়ংকর অট্টহাসিতে বুঝিয়ে দিলো সে আসলেই মস্ত এক ‘শয়তান’। অচিরেই নিজের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে পৃথিবীতেও মানব-সন্তানকে বিভ্রান্ত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করলো শয়তান। তার প্ররোচনায় অসহায় আত্মসমর্থন করতে থাকলো মানব সন্তান।

অর্থ-বিত্ত, নারী, মদ-জুয়া, অশ্লীলতা, হিংসা, প্রতিহিংসা, ধর্মীয় সহিংসতা, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, সংঘাত-সংঘর্ষ, খুন, সাম্প্রদায়িক দলাদলী ইত্যাদি অপকর্মে ভরে উঠলো সমগ্র পৃথিবী। শয়তানের কু-লক্ষ্যই যেন বাস্তবায়ন শুরু হলো চতুর্দিকে।

এই যখন অবস্থা, যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী, ঠিক তখনই আলোকবর্তিকা নিয়ে আগমন করলেন ‘এনজেল’। শান্তির বাণী নিয়ে তিনি মানব সন্তানদের আলোর পথে আহ্বান করতে লাগলেন। ভালো-মন্দের পার্থক্য বুঝিয়ে- ‘এটিই সবকিছু নয়, এজীবনের পর আরেকটি জীবন আছে, যেখানে সকল কৃতকর্মের হিসাব দিতে হবে’-এই বাণী পৌঁছে দিতে লাগলেন জনে জনে। ঐদিকে শয়তানও তার সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে মানুষকে অন্ধকার জগতে ধাবিত করতে থাকলেন…..

ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে মানবজাতির সৃষ্টিতত্ত্ব এবং বিজ্ঞানের বিগ ব্যাঙ থিওরির সমন্বয়ে নাট্য মুহুর্তের মাধ্যমে মাইমোড্রামাটির সূচনা হয়। এরপর সামাজিক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে গল্প এগিয়ে চলে।

মূক নাট্যটির মূল বক্তব্য হচ্ছে মানুষ, সমাজ এবং পৃথিবীতে মূলত দুটি বিপরীত সত্তা বা শক্তি বিরাজমান- ভালো এবং মন্দ। মন্দের উপস্থিতিতে পৃথিবীটা নরক হয়ে উঠে, আবার ভালোর প্রভাবে হয়ে উঠে স্বর্গভূমি। আলো-অন্ধকারের দ্বন্দ্ব শেষে মূলত আমরা আলো তথা সত্যেরই বিজয় দেখতে চাই।

ঢাকা, ১২ অক্টোবর, (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)// আইএইচ

 

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ