জাবি লাইভঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বিএনপি-পন্থী শিক্ষক সংগঠন 'জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম' (এনটিএফ) আলাদাভাবে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে। দুইভাগে ভাগ হয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্বিদ্যালয়ের ভিসি অপসারণের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এ বিভাজন হয়েছে। ভিসিপন্থী ও ভিসিবিরোধী দুই দলে ভাগ হয়ে তারা বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ভিসি অপসারণের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা ২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। এরপর ১৭ ফেব্রুয়ারি ৩২ সদস্য বিশিষ্ট পাল্টা কমিটি গঠন করে ভিসিপন্থী বিএনপির শিক্ষক হিসেবে পরিচিত প্রফেসর শামসুল আলম সেলিম। তিনি নিজেই নিজেকে সভাপতি করে এই নতুন কমিটি ঘোষনা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে দুই পক্ষের গঠিত নতুন কমিটিতে এমন ৭ জন শিক্ষক রয়েছেন যাদের নাম উভয় পক্ষে রয়েছে।
এতে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রফেসর শামসুল আলম সেলিম ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তফা নাজমুল মানছুর এর নেতৃত্বে ভিসিপন্থী বিএনপির কমিটি গঠিত হয়েছে। অন্যদিকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর সৈয়দ মোহাম্মদ কামরুল আহছান ও দর্শন বিভাগের প্রফেসর মোহম্মদ কামরুল আহাসানের নেতৃত্বে ভিসি বিরোধী বিএনপিপন্থী শিক্ষকরাও কমিটি গঠন করেছে।
ভিসিপন্থী বিএনপির নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন- উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর নাজমুল আলম, গণিত বিভাগের প্রফেসর ফারুক আহমেদ, ফার্মেসি বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার ও নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগের ড. সোমা মোমতাজ। সহ-সম্পাদক হিসাবে রয়েছেন উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর আব্দুল হালিম, গণিত বিভাগের প্রফেসর আমিনুর রহমান খান।
এছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে রয়েছেন গণিত বিভাগের প্রফেসর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। কোষাধক্ষ ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর মো. নজরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক গণিত বিভাগের প্রফেসর আব্দুর রশিদ, প্রচার সম্পাদক ফার্মেসি বিভাগের মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ভূইয়া, নারী বিষয়ক সম্পাদক সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রফেসর নাসরীন সুলতানা।
অন্যদিকে ভিসি অপসারণের আন্দোলনে সক্রিয় বিএনপির কমিটতে সহ-সভাপতি হয়েছেন রসায়ন বিভাগের প্রফেসর মাহবুব কবির, ফার্মেসি বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার ও প্রফেসর সোহেল রানা। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিবেশ বিজ্ঞানের প্রফেসর জামাল উদ্দিন রুনু, রসায়ন বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ মামুন হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নূরুল ইসলাম।
কোষাধ্যক্ষ প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর মনোয়ার হোসেন, দপ্তর সম্পাদক সিএসই বিভাগের প্রফেসর আবু সাইদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান, প্রচার সম্পাদক প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বোরহান উদ্দিন, নারী বিষয়ক সম্পাদক বাংলা বিভাগের প্রফেসর শামীমা সুলতানা।
অনুষদ প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ছালেহ আহাম্মদ খান, দর্শন বিভাগের প্রফেসর মঞ্জুর ইলাহী, গণিত বিভাগের প্রফেসর আবেদা সুলতানা, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রফেসর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এবং ইনিস্টিটিউট প্রতিনিধি আইবিএ-জেইউ এর গোলাম কিবরিয়া।
বিভক্ত হয়ে নতুন কমিটি গঠন করার বিষয়ে প্রফেসর শামসুল আলম সেলিম বলেন, “আগের কমিটির সভা ডাকা থেকে শুরু করে সবকিছুর দেখভাল আমি নিজেই করতাম। নতুন কমিটি গঠনের পর সদস্যদের মধ্যে একধরনের সমন্বয়হীনতার কারনে অনেকেই ক্ষুব্দ ছিলেন। এ কারনে আমরা নতুন কমিটির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি।”
ভিসি বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিভাজন হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। আগের গঠিত কমিটির উপর আস্থাহীনতার কারনে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
কমিটির সদস্যদের সমন্বয়হীনতার বিষয়টি অস্বীকার করে দর্শন বিভাগের প্রফেসর মোহম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘‘কোনো নির্দিষ্ট মহলকে খুশি করার জন্যে এ কমিটি গঠিত হতে পারে। এছাড়া সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নতুন কমিটি গঠনের পূর্বে আহবায়ক কমিটির সভা ডাকতে হবে। যেটা কমিটি ঘটনের ক্ষেত্রে করা হয়নি। তাই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ কমিটির কোনো অস্তিস্ত নেই।”
একই ব্যক্তির উভয় কমিটিতে থাকার বিষয়ে প্রফেসর আহসান বলেন, অনেককেই না জানিয়ে তাদের নাম এ কমিটিতে দেওয়া হয়েছে। তারা এ নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন এবং শীঘ্রই পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন। কার্যকরী পরিষদের সভা ডেকে আমরা এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।”
ঢাকা, ১৮ ফেব্রুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: