লাইভ প্রতিবেদক : নরসিংদীর সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি তামান্না নুসরাত বুবলীর হয়ে পরীক্ষা দেয়া সেই ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেট লাভের আশায় প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নেয়ায় সেই বুবলী সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তাকে গণভবনে তলব করা হয়েছে।
জানা গেছে, বুবলী নিজে পরীক্ষা না দিয়ে পর পর ৮টি পরীক্ষায় অংশ নেয় তার পক্ষে প্রক্সি পরীক্ষার্থীরা। বিএ পরীক্ষার শেষ পরীক্ষা দিতে গিয়ে হলে হাতেনাতে ধরা পড়েছে এশা নামে এক শিক্ষার্থী। তাই তাকে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে জালিয়াতির বিষয়টি অনুসন্ধানে কলেজের পক্ষ থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মহিলা এমপি বুবলীর এই দুর্নীতির খবর বেরিয়ে আসলে এলাকায় নিন্দা সমালোচনার ঝড় উঠে।
জানা গেছে, নরসিংদী ও গাজীপুর আসনের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি তামান্না নুসরাত বুবলী। তিনি নরসিংদী পৌরসভার প্রয়াত মেয়র ও সাবেক শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেনের স্ত্রী। তার দেবর কামরুজ্জামান কামরুল নরসিংদী পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপর দেবর শামীম নেওয়াজ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। পুরো পরিবারই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। হলফনামায় দেয়া তথ্য অনুযায়ী বুবলী এইচএসসি পাস। উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেট লাভের আশায় তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হন। এ পর্যন্ত চারটি সেমিস্টারের ১৩টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযোগ রয়েছে ১৩টি পরীক্ষার একটিতেও স্বশরীরে অংশ নেননি তিনি। তার পক্ষে একেক সময় একেকজন অংশ নিয়েছে। আর এমপির প্রক্সি প্রার্থীকে সুবিধা দিতে পরীক্ষাকে কেন্দ্রসহ হল পাহারায় থাকতেন এমপির লোকজনসহ ক্যাডার বাহিনী। তাই ভয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেউই মুখ খুলতে পারে না। সর্বশেষ শুক্রবার পরীক্ষা দিতে এসে প্রক্সি পরীক্ষার্থী এশা হাতেনাতে ধরা পড়েছেন।
প্রক্সি পরীক্ষার্থী এশা নিজেকে তামান্না নুসরাত বুবলী হিসেবে দাবি করেন। তবে ছবি সংবলিত প্রবেশপত্র দেখাতে পারেনি। এমপি তামান্নার পরীক্ষা কিভাবে দিচ্ছেন তা জানতে চাইলে তার কোনো সঠিক জবাব দিতে পারেনি প্রক্সি পরীক্ষার্থী এশা।
ভূয়া বা প্রক্সি পরীক্ষায় অংশ নেয়া একজন পরীক্ষার্থীকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার বিধান থাকলেও এর কিছুই করেননি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। অনেকটা বীরদর্পেই হল থেকে বেরিয়ে যায় ওই পরীক্ষার্থী।
নরসিংদী সরকারি কলেজ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক/হল ইনচার্জ প্রফেসর শফিকুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার্থীর ছবি সংবলিত প্রবেশপত্র ছিল না। প্রবেশপত্র নাকি হারিয়ে গেছে। তাই থানার জিডি কপি নিয়ে পরীক্ষা হলে পরীক্ষায় অংশ নিতে আসছে। তাই আমরা চিনতে পারিনি।
ঢাকা, ২০ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: