লাইভ প্রতিবেদক: একজন কলেজ প্রভাষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। তার নাম তানভীর আহমদ হিজল। তিনি রাজধানীর শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি চতুর্থ শ্রেণির এক নারী কর্মচারীকে যৌন হয়রানি করেছেন। ওই নারী প্রভাষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে তোলপাড় চলছে।
সংশ্লিস্টরা জানান, কলেজের মাকের্টিং বিভাগের শিক্ষক তানভীর আহমদ হিজল কয়েকদিন আগে কলেজে একা পেয়ে চতুর্থ শ্রেণির এক নারী কর্মচারীকে যৌন হয়রানি করে। তবে লজ্জায় বিষয়টি চেপে রাখলেও পরে আবারো কু-প্রস্তাব দেয় হিজল। পরে ভুক্তভুগী বিষয়টি একজন শিক্ষিকাকে জানায়। ওই শিক্ষিকা ঘটনাটি অধ্যক্ষকে জানালে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এখন ওপেন সিক্রেট।
কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক হারুনর রশীদ ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় অধ্যক্ষকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। আমরা চাই এসব যেন এই পবিত্র ক্যাম্পাসে না হয়। অভিযোগ প্রমাণ হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো চরিত্রহীনকে শিক্ষক হিসেবে কলেজে রাখা হবে না।আমরা এব্যাপারে খুবই সতর্ক রয়েছি।
এদিকে গত রোববার কয়েকজন শিক্ষক অধ্যক্ষের কাছে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চায়। কিন্তু লিখিত অভিযোগ না থাকায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানান অধ্যক্ষ।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আব্দুস রহমান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, নারী কর্মচারীকে যৌন হয়রানির বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু লিখিত অভিযোগ না থাকায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন ও লিখিত অভিযোগ দেবে বলে জানতে পেরেছি।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, কর্মচারীকে যৌন হয়রানির ঘটনাটি শোনার পরই অভিযুক্তকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেছি। তবে বিষয়টি সত্য নয় বলে সে জানিয়েছেন। তাই বিষয়টি তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে অপরাধীকে চাকরিচ্যুতসহ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তাছাড়া কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। কলেজের অন্য বিভাগের এক শিক্ষিকার সঙ্গে তার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই শিক্ষিকার সংসার ভেঙে যায়।
পরে তিনি আরেকটি বিয়ে করলেও তার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রাখতে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখায়। বিষয়টি জানতে পেরে ওই শিক্ষিকার দ্বিতীয় স্বামী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় ডায়েরি করেন এবং তার স্ত্রীকে বিরুক্ত না করতে সতর্ক করেন। এটা অনেকেই জানে।
ওই শিক্ষকরা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক কালেজের আরও এক শিক্ষিকাকে নানাভাবে বিরক্ত করতেন। বিষয়টি তিনি অধ্যক্ষসহ সিনিয়র শিক্ষকদের জানালেও কোনো লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। এ ছাড়া একাধিক ছাত্রীকেও তিনি উত্যক্ত করতেন বলেও তারা জানান।
অভিযুক্ত তানভীর আহমদ হিজল বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি একটি টেলিভিশন রাজধানীর প্রশ্নফাঁস চক্রকে নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই শিক্ষকের অপকর্মের তথ্য উঠে আসে। বিষয়টি নিয়ে কলেজ গভনিং বডি একটি দতন্ত কমিটি গঠন করলেও তার বিরুদ্ধে আজও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে। তিনি টাকা ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তার অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক তানবীর আহমেদ হিজল ক্যাম্পাসলাইভকে জানান আমি এসব কিছু করিনি। একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসকল অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সত্য নয়। আমার বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষক শত্রুতা করে এসব মিথ্যা প্রচার করছেন। তদন্তে কোন অভিযোগ ঠিকবে না।
ঢাকা, ১২ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: