অলি আহম্মেদ: বেশ কয়েকমাস ধরেই চরম অব্যবস্থাপনায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) হলগুলো। প্রধানত ছেলেদের হলগুলোতে পানি সমস্যা, নিরাপত্তাহীনতা ও প্রভোস্টদের স্ব দায়িত্বকে অবহেলা করা সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হলগুলো। হল প্রশাসন বরাবর অভিযোগ করা সত্যেও মিলছেনা সন্তোষজনক কোন প্রতিকার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের জন্য তিনটি হলের মধ্যে নবাব সিরাজউদ্দৌলা হল ও শেরে বাংলা হলের অবস্থা সবচেয়ে বেশি নাজুক। পুরনো সমস্যার সাথে নতুন কিছু যোগ হয়ে প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে ছাত্র দুর্ভোগ। তবে এই দুটো হলের তুলনায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের অবস্থা কিছুটা ভালো।
আবাসিক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রায় দিনই সাধারণ ব্যবহার্য ও খাবার পানি থাকেনা সিরাজউদ্দৌলা হলে। টয়লেট কিংবা বাথরুমে পর্যাপ্ত পানির অভাবে অপ্রীতিকর বিড়ম্বনায় পড়া একমাস আগে যেন এটাই ছিল সিরাজউদ্দৌলা হলের চিরাচরিত চিত্র। হলের ক্যান্টিন ও ডাইনিংয়ের বেসিনগুলোতে পানির অপ্রতুলতা নিয়ে আবাসিক ছাত্রদের সবারই অভিযোগ।
প্রভোস্ট বরাবর অনেক অভিযোগ, সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখি, বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশের পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও হলের অবস্থা এখন আবার আগের মতোই।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত ছয় মাসে সিরাজউদ্দৌলা হল থেকে কমপক্ষে ২৫ টির মত মোবাইল সেট, কয়েকটি ল্যাপটপ ও বাই-সাইকেল হলের বিভিন্ন কক্ষ থেকে চুরি হয়েছে।
শেরেবাংলা হলের চতুর্থ বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী আশিকী ইলাহী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিনি কখনোই তার হল প্রভোস্টকে তাঁর অফিসে পান না। হলের নিচ তলার ওয়াশরুম গুলো ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে। হলের দ্বিতীয় তলা থেকে ডাস্টবিনের ময়লার দুর্গন্ধ ভেসে আসা যেন নিয়মিত রুটিনে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও জানান, হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিনে উচ্চ মূল্যে নিম্নমানের ও বাসী খাবার সরবরাহ করা হয়।
উল্লেখ্য যে, তীব্র পানি সমস্যার সমাধান না করতে পারায় সিরাজউদ্দৌলা হল প্রভোস্টের কক্ষ ভাঙচুর করা হয় প্রায় ৬ মাস আগে।
কবির নামে মার্স্টাসের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, হল প্রভোস্ট হলের অভিভাবক। তিনি হলের একজন দ্বায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে বাড়তি বেতনও পান, এর জন্য একবার করে হলেও তাঁর হলে এসে সার্বিক খোঁজখবর নেওয়া দরকার। অথচ কতক বিশেষ দিন (স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস) ছাড়া হল প্রভোস্টকে আমরা খুব কমই পাই।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. ইসহাক হলের এ দুরাবস্থার জন্য নির্মাণকাজকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, আমার অনেক গুলো দ্বায়িত্ব থাকার কারণে হলে কম সময় দিতে পারছি তবে সহকারী প্রভোস্টদের হলে আসতে বলা হলেও তাদের আমি পাচ্ছিনা। তিনি এর পর থেকে নিয়মিত হলে আসার আশ্বাস দেন।
শেরেবাংলা হলের সমস্যা নিয়ে সবচেয়ে বেশি কথা উঠলেও হল প্রভোস্ট হাসানুজ্জামান আকন্দ কে বারবার ফোনে চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা, ২৪ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: