ঢাবি লাইভ: উপায় নেই। ঘরে বাইরে সবখানেই কেবল সন্দেহ আর সন্দেহ। এই অভিশপ্ত শব্দ থেকে অনেকেই রেহাই পান না। কেউ কেউ মৃত্যুর সঙ্গেও পাঞ্জা লড়ছেন। কারো কোরো জীবন প্রায় ওষ্ঠাগত। কিন্তু তবুও রেহাই নেই।
তাল থেকে তিল কসলেই শব্দতো সবার মুখস্ত। "এইটাই শিবির" " এর চেহারায় শিবিরের হাবভাব আছে" " এতো শিবিরের সঙ্গে চলাফেরা করে" এমন হাজারও শব্দ এখন এক শ্রেণীর লোকের মুখে মুখে। কোন যাচাই বাচাই নেই। প্রথমেই উল্টা পাল্টা মারধর, রক্তাক্ত। পরে সোজা পুশি ডেকে ধরিয়ে দিচ্ছে অনেক নিরিহ ও সাধারণ শিক্ষার্থীকেও।
এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলে। মারধর খাওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম আবু তাহের। তিনি ছাত্রলীগের নেতা। জানাগেছে নিজেদের কমিটির নেতাকেই পুলিশে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হল শাখা ছাত্রলীগ। আবু তাহের নামের ওই নেতার বিরুদ্ধে তাঁর সংগঠনের নেতাকর্মীর অভিযোগ, তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িত!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক আব্দুর রহিম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না, তবে খোঁজ নেব।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে আবু তাহের এসএম হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তাঁর সঙ্গে তাঁর বন্ধু তানভীর আজাদ সাকিবকেও পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগ। সাকিব তাহেরের ক্লাসেই পড়েন এবং বিজয় একাত্তর হলের ছাত্র।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে রাত ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত উভয়কে জিজ্ঞাসাবাদ ও মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। অভিযোগ উঠেছে, তাহসান আহমেদ রাসেল এসএম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার আগে সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের পক্ষে রাজনীতি করতেন।
পরে তিনি কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর পক্ষে রাজনীতি করেন। অন্যদিকে, আবু তাহের আগে হল শাখায় তাহসানের পক্ষে রাজনীতি করতেন। এখন তিনি ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের পক্ষে রাজনীতি করেন।
কিন্তু তাহসান তাহেরকে সাদ্দামের পক্ষ ছেড়ে দিয়ে গোলাম রাব্বানীর পক্ষে কাজ করতে বলেন। কিন্তু তাহের এ কথা না মানায় তাঁর বিরুদ্ধে শিবিরঘেঁষার অভিযোগ এনে মারধর করে পুলিশে দেয়। এ সময় তাহেরের বন্ধু তানভীর আজাদ সাকিবকেও মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়। হল সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল তার ব্যাপারে সবই জানতেন। তারপরেও তিনি তাহেরকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ দেন।
এক প্রশ্নের জাবাবে তাহসান আহমেদ রাসেল ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘তাহের গত মাসের ১০ তারিখে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তখন আমাদের সন্দেহ হয় যে, তিনি অন্য কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত কিনা। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে, চট্টগ্রাম কলেজে শিবির করার সময় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ছাত্রলীগ নেতা জানান, ওই সভাপতি তাহেরের সব কিছুই জানতেন। জানার পরেও কিভাবে তিনি পদ দেন? এই বিষয়টি আমলে আনা উচিত। এখন তার পক্ষে কাজ করছে না বলে শিবির গোমর ফাঁস করে দিয়েছেন। তার মনে পক্ষে কাজ করলে সব কিছুই মাফ বলেও ওই নেতা দাবী করেন।
প্রতি দুই মাস পরপর কোর্টে হাজিরা দিতে তিনি চট্টগ্রামে যান। পরে ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মীরা তাঁকে রাত ২টার দিকে থানায় দেন।’ মারধরের অভিযোগটি অস্বীকার করেন তিনি। এসএম হলের সাংগঠনিক সম্পাদক সানাউল্লাহ সায়েম বলেন, ‘তাহের শিবির করতেন বলে আমরা জানতে পারি। পরে তাঁকে পুলিশে দেওয়া হয়।’
ঢাকা, ০১ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: