ঢাবি লাইভ: সাবেক ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নেতাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভপতি ও তার অনুসারীরা বেধরক মারধর করে। এনিয়ে সাবেক ও বর্তমান নেতৃত্বের মধ্যে চলছে ঠান্ডা বাক্য বিনিমিয়। ওই নেতা ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক সহসভাপতি। তার নাম রুহুল আমিন। মারধরের ৩ দিন পর কেন্দ্রীয় সংসদ ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের লিফটে ওঠা নিয়ে কথাকাটাকাটির জের ধরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল আমিনকে মারধরের ঘটনা এখন সকল অঙ্গ সংগঠনের মাঝে ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। অনেকেই এই ঘটনায় দোষী ও দায়ীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন। বলেছেন এরা যতই শক্তিশালী হোক এমনটি মেনে নেয়া যায় না।
এদিকে কমিটিকে আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
রুহুল আমিন ছাত্রলীগের সোহাগ-জাকিরের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এবং সোহাগ-নাজমুলের নেতৃত্বাধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা কমিটির সময়কালে স্যার এএফ রহমান হলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বলে জানাগেছে।
প্রসঙ্গত গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথাকাটাকাটির জের ধরে রুহুল আমিনকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সময় সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস উপস্থিতি ছিলেন।
এদিকে রুহুল আমিনের অভিযোগ, শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক হলের মুজাহিদ ও সোলাইমান, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ইমন, সূর্য সেন হলের নাহিদ, বঙ্গবন্ধু হলের শান্তসহ ২০-২৫ নেতকর্মী তাঁকে মারধর করেন। তাঁরা সবাই সনজিতের অনুসারী। তারই নির্দেশে এমনটি ঘটেছে।
সংশ্লিস্টরা জানান, গত রোববার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠনের তথ্য জানানো হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শওকতুজ্জামান সৈকত, সাবেক সহসভাপতি আরেফিন সিদ্দিকী সুজন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তানজিল ভূঁইয়া তানবীর ও জিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু সালমান প্রধান শাওন।
এ ব্যপারে এস এম রুহুল আমিন ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘আমাকে তারা আমার ভাইবোনের সামনে মেরেছে। আমার সামাজিক মর্যাদা ধুলোয় মিশিয়েছে। আটতলা থেকে মারতে মারতে নিচে নামিয়েছে। আমি তাদের অনুরোধ করেছি, আমার পরিবারের সামনে মেরো না। প্রয়োজনে পরে আমি তোমাদের সামনে একা আসব, তখন মেরো।
কিন্তু তারা আমার কোনো অনুনয় রাখেনি। আমি বার বার অনুরোধ করেও তাদের মন নরম করতে পারিনি। তিনি আরও বলেন, সনজিত নেতৃত্ব দিয়ে আমাকে মারিয়েছে। এই কষ্ট সহ্য করার মতো ক্ষমতা আমার থাকত না। যদি না আমার পরিবার আমাকে সাহস দিত।’
‘আমি যদি এই হামলার সঠিক বিচার না পাই, প্রয়োজনে আমি জীবন দিয়ে হলেও ছাত্রলীগে ও বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে শুদ্ধাচারের জন্ম দিয়ে যাব।
এদিকে, একটি পক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়েছে, সেদিন রুহুল আমিন মদ পান করে ঢামেকে গিয়েছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুহুল আমিন বলেন, ‘কেউ কি হাসপাতালে লাশ আনতে মদ্যপ অবস্থায় যায়? আমি তাদের অনুরোধ করে বলেছিলাম, লাশটা নিয়ে যেতে হবে, তোমরা কয়েকজন লিফটে পরে আসো। এই কথাতেই তারা ক্ষেপে গিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে।’ লাশ সামনে রেখে আমরা তেমন কোন উত্তেজনা প্রদর্শন করিনি।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘রুহুল আমিন আমার ভাই ও ভাবিকে ধাক্কা দিয়েছিল। আমার ভাই পরিচয় দেওয়ার পরও সে গালি দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্মীরা যায়। আমি তাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে চলে আসি।’ এর বাইরে আমার কোন কিছু জানানেই।
সনজিত দাসের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থী ও দলের প্রতিপক্ষের কর্মীদের মারধর ও অশোভন আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে। ভিন্ন একটি সূত্র জানিয়েছে সনজিত দাস এধরনের আরও বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাবির এক নেতা বললেন সে খুবই বদ মেজাজী। সে ছাত্রলীগের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করবে। তার ধারা যে কোন ধরনের কাজ করা সম্ভব।
ঢাকা, ০১ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: